রবি ফসল সংগ্রহের পর ক্ষেতে জায়েদ ফসল বপনের উপযুক্ত সময় আসে। এই সময়ে, কৃষকদের জায়েদ ফসল রূপে ভুট্টার বপন করতে পারেন। এভাবে কৃষকরা অল্প সময়ের মধ্যে কৃষিকাজ থেকে আরও বেশি লাভ অর্জন করতে পারেন।
কৃষি বিজ্ঞানীরা ভুট্টার আবাদ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন যে, কৃষকদের আলু ও সরিষার ফসলের পরেই ভুট্টা বপন করতে হবে, কারণ তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে ভুট্টার বপনেও সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ বিষয়টি হ'ল জায়েদ মৌসুমে (Zaid Crop) বপন করা ভুট্টা জাতগুলি প্রস্তুত হতে কম সময় নেয়, যা কৃষকদের ভাল লাভ দেয়।
উন্নত জাতের ভুট্টা (Maize Variety) -
ভুট্টা চাষে কাঞ্চন, নবজোট, নবীন, শ্বেতা, আজাদ উত্তম, গৌরব ইত্যাদি জাতের বীজ কৃষকরা বপন করতে পারেন। এর সাথে হাইব্রিড জাত স্বরূপ এইচকিউপিএম - ১৫, ডেকান- ১১৫ এমএমএইচ - ১৩৩, প্রো- ৪২১২, মালাভিয়া সংকর ভুট্টা - ২ ইত্যাদি বপন করা লাভজনক। এ ছাড়া সবুজ ভুট্টার জন্য মাধুরী ও প্রিয়া, বেবি কর্নের জন্য প্রকাশ, পুসা আগতী সংকর মক্কা - ২ এবং আজাদ কমল জাতের বীজ বপন করা যায়।
বীজ শোধন -
-
ভুট্টা চাষে বীজ রোপণের আগে থাইরাম বা অ্যাগ্রোসিন জিএন -এর মতো ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা হয়। প্রতি কেজি বীজের জন্য ৩-৫ গ্রাম মিশিয়ে বীজ শোধন করুন।
-
এ ছাড়া অ্যাজোস্পিরিলাম বা পিএসবি কালচার প্রতি কেজি বীজ ৫-১০ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
জমি প্রস্তুতি -
জমিতে ৫ থেকে ৮ টন ভালো পচা গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে।
সার ও সারের পরিমাণ -
মাটি পরীক্ষার পরে, যেখানে জিঙ্কের ঘাটতি রয়েছে, সেখানে প্রতি হেক্টর জিংক সালফেট প্রয়োগ করতে হবে।
সেচ -
ভুট্টা চাষে প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০ মিমি জলের প্রয়োজন হয়। ফুল আসার সময় এবং শস্য বৃদ্ধিকালে পরিমিত পরিমাণে সেচ প্রদান করতে হবে। খেয়াল রাখবেন, জমিতে নিকাশীর যথাযথ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
ভুট্টা সহ অন্যান্য সাথী ফসল চাষ -
ভুট্টা চাষ করার সময় কৃষকরা সাথী ফসল হিসাবে বিউলি, বরবটি, মুগ, সয়াবিন, শিম, ভেন্ডি, সবুজ ধনিয়া ইত্যাদি গাছ লাগাতে পারেন। এর মাধ্যমে কৃষকরা একবারে দুটি ফসলের সুবিধা পাবেন।
নিড়ানি -
ভুট্টার বীজ বপনের ১৫ থেকে ২০ দিন পরে নিড়ানি দেওয়া উচিত। ইট্রাজিন ব্যবহারের জন্য, অঙ্কুরোদগমের আগে একর প্রতি ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম হারে স্প্রে করা উচিত। এর পরে, প্রায় ২৫ থেকে ৩০ দিন পরে মাটিতে লাঙল দেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন - জানুন হাইব্রিড পেঁপের বৈশিষ্ট্য ও তার চাষ পদ্ধতি (Papaya Cultivation)