জারবেরা উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ফার্টিগেশন এবং জলকর্ষণের মধ্যে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কারণ সার এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস জলকর্ষণের মাধ্যমেই প্রয়োগ করা হয়। প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান এবং জল সরবরাহ: বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়ে সার (এনপিকে ১৯:১৯:১৯, এনপিকে ১৩:০:৪৫ এবং এনপিকে ১২:৬১:০) এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস (ক্যালসিয়াম-অ্যামোনিয়াম-নাইট্রেট, বোরাক্স, কপার সালফেট, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ) জলে দ্রবীভুত করে প্রয়োগ করা হয়। গাছ লাগানোর পর তিন মাস অবধি উদ্ভিদবৃদ্ধির সময়কালে এনপিকে ১৯:১৯:১৯, ১ গ্রাম / লি. জলে দ্রবীভূত করে প্রতি সপ্তাহে একবার প্রয়োগ করা হয় । যখন গাছগুলিতে ফুলের কুঁড়ি আসতে শুরু করে, তখন সার প্রয়োগ পদ্ধতির সামান্য পরিবর্তন করতে হবে। এনপিকে ১৯:১৯:১৯ ১ গ্রাম/ লি. জলে দ্রবীভূত করে সপ্তাহে দু'বার ৩ দিনের ব্যবধানে + এনপিকে ১২:৬১:০ ১ গ্রাম/ লি. এক মাসের ব্যবধানে এবং এনপিকে ১৩:০:৪৫ ১ গ্রাম/ লি. এক মাসের ব্যবধানে + ক্যান ১/২ গ্রাম / লি. জল মিশিয়ে ৩ দিনের ব্যবধানে সপ্তাহে দু’বার প্রয়োগ করতে হবে। উল্লিখিত সার ছাড়াও কিছু মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ১ গ্রাম + বোরাক্স ১ গ্রাম + কপার সালফেট ১ গ্রাম/ লি. জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে এক মাসের ব্যবধানে এবং সমস্ত সার ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট পৃথকভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
সার ব্যবহারের আগে ও পরে, জল সেচ দিতে হবে ক্রমান্বয়ে (৫-৬ মিনিট)। ৩-৪ মাস পরে ধারাবাহিকভাবে ফুল সংগ্রহ করার পরে, উদ্ভিদকে এক মাসের জন্য বা গ্রীষ্মকালে বিশ্রামে রাখা উচিত। এই সময়কালে, সমস্ত শুকনো ও সংক্রামিত পুরানো পাতাগুলি অপসারন করতে হবে। কখনও কখনও বেডগুলি কিছুটা মেরামতের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে বেডে ভার্মিকম্পোস্ট ১ কেজি / বর্গমিটার প্রয়োগ করতে হবে এবং এই প্রক্রিয়া অন্তিম ফসল সংগ্রহ করার পর থেকে তিন বছর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং ফলনের উপর জলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং দেখা যায় যে, অতিরিক্ত জল এবং নিম্ন স্তরের জল উভয়ই উদ্ভিদের জন্য হানিকারক। একইভাবে, ভাল ফলন পাওয়ার জন্য জলের অম্লভাব (৬.৫-৭) এবং বৈদ্যুতিক পরিবহতা (<০.৭ মিমি / সেমি), ঘনত্ব (<৪৫০ পিপিএম) এবং কঠোরতা (<২০০ পিপিএম) বজায় রাখতে হবে। রোপণ থেকে এক মাস অবধি, স্প্রিংকলারের মাধ্যমে উদ্ভিদের উপরিভাগে সেচ প্রদান করতে হবে এবং তার পরে ড্রিপ সেচ অনুসরণ করতে হবে। একটি উদ্ভিদের জন্য একটি ড্রপার ব্যবহার করা উচিত।
দিনের মধ্যে সকালবেলা সেরা সময় সেচ প্রদানের, মাটিকে আর্দ্র রাখার চেষ্টা করতে হবে এবং সর্বদা সতেজ জল ব্যবহার করতে হবে। সতেজ জলের ব্যবহার উদ্ভিদের পক্ষে উপকারী, এটি উদ্ভিদের সতেজতা বজায় রাখে ও রোগ হ্রাসে সহায়তা করে করে। ক্রমবর্ধমান উদ্ভিদটির প্রতি তিন মাস পর পর (পিএইচ, ইসি, টিডিএস) পরীক্ষা করা আবশ্যক।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
তথ্যসূত্র – ড. তাপস কুমার চৌধুরী
Share your comments