এবার AI এর সাহায্যে ছাগলের গর্ভধারণ করা হবে, জেনে নিন কীভাবে কাজ করবে এই প্রযুক্তি শীতকালে মাছ চাষ: জল ব্যবস্থাপনা এবং মাছের সঠিক যত্ন নেওয়া শিখুন! বাগমাল গুর্জরের সাফল্যের গল্প
Updated on: 30 May, 2021 11:38 AM IST
Moong farming (Image Credit - Google)

বছরে যতগুলো চাষ হয় জমিতে, তার মধ্যে এক বার অন্তত ডালশস্য চাষ করা প্রয়োজন। এতে জমির উর্বরতা বাড়ে। তবে, শুধু অর্থকরী কারণেই ডাল চাষ করা যায়। কারণ আমাদের রাজ্যে ডালশস্যের যা চাহিদা, তার মাত্র ১৯-২০ শতাংশ উৎপাদন হয়। আমাদের দেশের যতরকম ডাল চাষ করা হয়, তার মধ্যে মুগ ডাল খুবই উল্লেখযোগ্য |

এই ডালের চাষ পদ্ধতি খুবই সোজা, তবে অনেকেরই এই ডাল চাষ সম্পর্কে অজানা | এই নিবন্ধে মুগ ডাল চাষ (moong dal cultivation) পদ্ধতি ও সঠিক পরিচর্যা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো;

জাত (Variety) :

আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি জাতের মুগডাল চাষ করা হয়ে থাকে। সেগুলি হল- বিনামুগ-১, বিনামুগ-৩, বিনামুগ-৪ ও বিনামুগ-৫ ইত্যাদি।

মাটি (Soil):

আমাদের দেশে প্রায় সব ধরনের মাটিতেই সাধারণত মুগডাল চাষ করা যায়৷ তবে সুনিষ্কাশিত দোআঁশ মাটিতে এই ফসল ভাল জন্মায় | জমিতে যদি জল জমে না থাকে, তবে এঁটেল মাটিতেও এর চাষ করা যায়৷ বেলে দোঁআশ ও দোআঁশ মাটিতে মুগ ডাল চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়৷

জমি তৈরী:

জমিতে রস না থাকলে সেচ দিতে হবে। এরপর গভীর ভাবে চাষ দিয়ে ঝুরঝুরে মাটি তৈরি করতে হবে। কারণ এই সব ফসলের শিকড় অনেক গভীরে যায়। অম্ল মাটিতে মাটি পরীক্ষা ভিত্তিক প্রয়োজনীয় চুনের দশ ভাগের এক ভাগ অথবা সাধারণ ভাবে বিঘা প্রতি ২৫-৩০ কেজি চুন জমি তৈরি করার সময় ছিটিয়ে ভাল করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এই অল্প পরিমাণ চুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বীজ বুনলে কোনও ক্ষতি নেই।

সার প্রয়োগ (Fertilizer):

জমির উর্বরতার ওপর নির্ভর করে সারের প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রতি একর জমিতে টিএসপি সার ৩৫ থেকে ৪০ কেজি, প্রতি একর জমিতে বোরিকন এসিড ২.৫-৩ কেজি, প্রতি একর জমিতে ইউরিয়া সার ১৬ থেকে ২০ কেজি, প্রতি একর জমিতে এমওপি ১২ থেকে ১৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে | চাষ শেষে সব সার প্রয়োগ করতে হবে। অপ্রচলিত এলাকায় আবাদের জন্য ২-৩ কেজি/একর অনুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে প্রতি কেজি বীজের জন্য ৮০ গ্রাম অনুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

বীজের পরিমান:

প্রত্যেক একর জমিতে ১৮ থেকে ২০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়।

রোপণ:

সাধারণত, দুই ভাবে মুগ ডালের বীজ বপণ করা যায়। একটি হল ছিটিয়ে বীজ বোনা অপরটি হল সারিবদ্ধভাবে বীজ বোনা। তবে এই দুই পদ্ধতির মধ্যে সারিবদ্ধ ভাবে বোনা সবথেকে ভাল। কারণ লাইন বা সারি করে মুগ চাষ করলে ফলন ছিটানো পদ্ধতির চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি পাওয়া যায়। সারিতে বীজ বপন করলে প্রতিটি গাছ সমানভাবে বেড়ে উঠতে পারে। গাছের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য- সূর্যালোক, খাদ্য উৎপাদন ও জল সমানভাবে পেতে পারে বলে ফলনও বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া সারি করে বুনলে মাঠে অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা করা সহজ হয়।

আরও পড়ুন - Oil Seed Farming: ধানের পর জমিতে তৈলবীজ চাষে বিপুল লাভের সম্ভাবনা

আগাছা দমন :

চারা গজানোর পরে জমিতে আগাছা আগাছা দেখা দিলে ১৫-২০ দিন পর নিড়ানি দিয়ে হালকাভাবে আগাছাগুলো পরিষ্কার করে  ফেলতে হবে। এতে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

সেচ:

অতিরিক্ত খরা ও জলাবদ্ধতা উভয়ই এ ফসলের জন্য ক্ষতিকর | প্রয়োজনমতো সেচ দিতে হবে তবে খেয়াল রাখতে হবে, জমিতে যেন জল দাঁড়িয়ে না যায় |

রোগ ও পোকা দমন (Disease management system):

মুগ ডাল গাছে মোজাইক ভাইরাস রোগ দেখা দেয় | এই রোগ দেখা দিলে গাছ উপড়ে ফেলতে হবে। সাধারণত কোন ছত্রাকনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না তবে ছত্রাকের মারাত্মক আক্রমণ হলে যে কোনো ছত্রাকনাশক (ডাইথেন এম ৪৫, বেভিস্টন ৫০, রিডোমিল গোন্ড) ৭-১০ দিন পর পর দুইবার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

ফসল সংগ্রহ:

মুগ ডাল পরিপক্ব হলেই তা সংগ্রহ করতে হবে ৷ বীজ বপনের পর ৬০ থেকে ঌ০ দিনের মধ্যে মুগ ডাল সংগ্রহ করা যায়। সঠিক সময়ে ফসল সংগ্রহ করলে বেশি ফলন পাওয়া যায়, এই ডালের চাহিদা থাকায় কৃষকরা বেশি লাভ পেতে পারেন |

নিবন্ধ: রায়না ঘোষ

আরও পড়ুন - Squash Farming: জেনে নিন স্কোয়াশ চাষের পদ্ধতি ও রোগ-দমনের উপায়

English Summary: Moong Dal Farming: Make double money by cultivating mug dal
Published on: 29 May 2021, 08:53 IST