পলি হাউসে জারবেরা উদ্ভিদ চাষের জন্য তা প্রস্তুত করে অতি সহজেই রোপণ করা যায়। জৈব পদার্থের সংমিশ্রণে জারবেরা ফুলের উদ্ভিদগুলি উচ্চ মানের হয় এবং তা দ্রুত বৃদ্ধি লাভ করে। এতে ফুলের মানও বৃদ্ধি পায়।
প্রয়োজনীয় মৃত্তিকা – জারবেরা চাষের জন্য প্রয়োজন বেলে দোআঁশ মৃত্তিকা। মাটিতে জৈব পদার্থ (কোকো-পিট / এফওয়াইএম / ভার্মি-কম্পোস্ট) ৭০ : ৩০ অনুপাতে মিশিয়ে ভালভাবে প্রস্তুত করতে হবে। উদ্ভিদটির সুচারু রূপে বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত ছিদ্রযুক্ত আদ্র মৃত্তিকার প্রয়োজন হয়। উদ্ভিদটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য, সিঙ্গল সুপার ফসফেট ২০০ গ্রাম + নিম কেক ২০০ গ্রাম + হিউমিক অ্যাসিড ২০ গ্রাম + বায়োজাইম ৩০ গ্রাম + ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ৩০ গ্রাম + জিঙ্ক সালফেট ১৫ গ্রাম মিশিয়ে প্রতি বর্গ মিটারে প্রয়োগ করতে হবে। যখন উদ্ভিদটির ক্রমবর্ধমানতার জন্য দোআঁশ মাটি বা কাদা মাটি ব্যবহৃত হয়, তখন মাটিতে উন্নত বায়ু উত্তোলনের জন্য ১০-১৫ % বালি মিশ্রিত করতে হবে।
মিশ্রণের পরে সঠিকভাবে বেড প্রস্তুত করতে হবে। বেডের উচ্চতা দৈর্ঘ্যে (৪৫ সেমি), প্রস্থে (উপরের পৃষ্ঠ: ৬০ সেমি এবং নিম্ন পৃষ্ঠ: ৬৭ সেমি) এবং মাঝের দূরত্ব (৩০সেমি) – এভাবে প্রস্তুত করা উচিত, তবে বেডের দৈর্ঘ্য গ্রীণ হাউস ঘরের আকৃতির উপর নির্ভর করে। বেড প্রস্তুত করার পর, কোন রকমের পোকামাকড় বা রোগের সংক্রমণ এড়াতে ফর্মালিন (১০০ মিলি / লিটার) জল-এর সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। বেড ভালো ভাবে আদ্র করে (প্রতি বর্গমিটার অঞ্চল) প্লাস্টিকের কভার দিয়ে ৭ দিন পর্যন্ত ঢেকে রাখতে হবে। তারপরে বেডে (১০০ লি./ প্রতি বর্গমি.) পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জল দিতে হবে এবং রোপণের জন্য দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।
এই সময়ে উদ্ভিদটির বৃদ্ধির জন্যে কার্বোফিউরন (ফিউরাডন ৫ গ্রাম / বর্গমিটার) প্রয়োগ করতে হবে। মূলযুক্ত টিস্যু কালচার উদ্ভিদগুলি বর্ষার ঠিক আগে বা পরে রোপণ করতে হবে। রোপণের সময় উদ্ভিদগুলির একটি থেকে অপরটির দূরত্ব যথাক্রমে ৩০*৩০ সেমি. এবং একটি সারি থেকে অপর সারির দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ৩৭.৫*৩৭.৫ সেমি. এবং সেচ ব্যবস্থা অনুসরণ করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে যে, রোপণের সময় যেন উদ্ভিদের উপরিভাগ মাটি স্তর থেকে ১ সেমি. উপরে থাকে। উদ্ভিদগুলি খুব হালকাভাবে বেডে স্থাপন করতে হবে। রোপণের পরে প্রতিদিন সকালে হালকা সেচ সরবরাহ করতে হবে এবং উদ্ভিদটির নিষ্কাশন এড়ানোর জন্য ৪-৬ সপ্তাহ পর্যন্ত ৮০-৯০% আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে। এটি অনুমান করা হয় যে, পলি হাউসে ১০০০ বর্গ মিটার এলাকায় প্রায় ৬০০০ টি গাছ রাখা যেতে পারে।
স্বপ্নম সেন ([email protected])
তথ্যসূত্র – ড. তাপস কুমার চৌধুরী
Share your comments