প্রায় প্রতিটি বাড়িতে হলুদ ব্যবহার করা হয়। এটি একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ মসলা । ভারতেও এর ব্যাপক চাষ হয়। হলুদ চাষ করার সময় কৃষক ভাইদের কিছু বিশেষ বিষয় মাথায় রাখা খুবই জরুরি। যার কারণে তারা প্রচুর মুনাফা পায় এবং বাম্পার ফলন পেতে পারে।
প্রথমেই বলে রাখি যে বেলে দোআঁশ মাটি বা এঁটেল দোআঁশ মাটি হলুদ চাষের জন্য ভালো। হলুদের বপনের সময় বিভিন্ন জাতের উপর নির্ভর করে ১৫ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত । হলুদ বপনের জন্য লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৩০-৪০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২০ সেমি রাখতে হবে। হলুদ বপনের জন্য প্রতি একরে ৬ কুইন্টাল বীজের প্রয়োজন হয়।
প্রস্তুত হতে কত সময় লাগে?
হলুদ চাষের জন্য জমিতে ভালো জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। হলুদের ফসল ৮ থেকে ১০ মাসের মধ্যে তৈরি হয়।সাধারণত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে ফসল তোলা হয়। পরিপক্ক হলে পাতা শুকিয়ে হালকা বাদামী থেকে হলুদ হয়ে যায়।হলুদ সহজে চাষ করা যায় এবং এমনকি ছায়ায়ও চাষ করা যায়। চাষ করার সময় কৃষকদের নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। এতে আগাছার বৃদ্ধি থেমে যায় এবং ফসল পুষ্টি পায়।
গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় হলুদ ভালো জন্মায়। এর জন্য, ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সঠিক। সুনিষ্কাশিত, দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি হলুদের জন্য উপযুক্ত। মাটির pH ৬.৫ থেকে ৮.৫ এর মধ্যে হওয়া উচিত। হলুদের ভালো ফলনের জন্য সঠিকভাবে সার ব্যবহার করা জরুরি। গোবর সার, নিম পিঠা ও ইউরিয়া ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। ফসল কাটার কথা বললে, হলুদের ফসল ৯-১০ মাসের মধ্যে প্রস্তুত হয়। ফসল তোলার পর তা রোদে শুকানো হয়।
আরও পড়ুনঃ Green Chiretta Farming: ঔষুধি এই গাছ চাষ করুন,অল্প খরচে অধিক মুনাফা পাবেন
হলুদ প্রস্তুত করতে কত সময় লাগে?জুন-জুলাই মাসে বপন করা হয়। বপনের জন্য সুস্থ ও রোগমুক্ত কন্দ নির্বাচন করা জরুরি। সেচের কথা বললে, নিয়মিত সেচের প্রয়োজন হয়। চাষ করার সময় কৃষকদের নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। এতে আগাছার বৃদ্ধি থেমে যায় এবং ফসল পুষ্টি পায়। ফসল কাটার কথা বললে, হলুদের ফসল ৯-১০ মাসের মধ্যে প্রস্তুত হয়।
আরও পড়ুনঃ সর্পগন্ধা গাছের ঔষধি গুন সম্পর্কে জানেন? আছে এই বিশেষ ঔষধি গুণ
হলুদের উন্নত জাত
ফসল প্রস্তুত করতে যে সময় লাগে তার উপর ভিত্তি করে এর জাতগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. 'কস্তুরী' শ্রেণীর জাত যা কম সময়ে প্রস্তুত - রান্নাঘরে উপযোগী, ৭ মাসে ফসল প্রস্তুত, ফলন কম। যেমন-কস্তুরী পাসুন্তু।
২. মাঝারি পরিপক্ক সময়ের সাথে কেশরী শ্রেণীর জাত – ৮ মাসে প্রস্তুত, ভাল ফলন, ভাল মানের কন্দ। যেমন কেশরী, অমৃতপানি, কোঠাপেটা।
৩. দীর্ঘ মেয়াদী জাত – ৯ মাসে প্রস্তুত, সর্বোচ্চ ফলন, গুণাবলীতে সেরা। যেমন ডুগ্গিরালা, টেকুরপেট, মিডকুর, আরমুর।
দুগ্গিরালা ও টেকুপেট উন্নতমানের হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়।
এছাড়া হলুদের অন্যান্য জাতের যেমন মিঠাপুর, রাজেন্দ্র সোনিয়া, সুগন্ধম, সুদর্শনা, রশিম ও মেঘা হলদি-১ রয়েছে।
জৈব চাষ একটি ভাল বিকল্প
বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদ চাষে জৈব পদ্ধতি ব্যবহার করা প্রয়োজন। এই ফসলটি মিশ্র চাষ হিসাবেও চাষ করা যায়।কৃষকরা উন্নত জাতের হলুদ চাষ করে বেশি ফলন পেতে পারেন।
Share your comments