
কাঁঠাল একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফলের গাছ, যা তার অনন্য গঠন, স্বাদ এবং পুষ্টিগুণের জন্য পরিচিত। কাঁঠাল কেবল সবজি এবং ফল হিসেবেই কার্যকর নয়, এর ঔষধি গুণও রয়েছে। এটি ভারতে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়, বিশেষ করে বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা এবং কর্ণাটকে।
তবে, কাঁঠাল চাষীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হল ছোট ফল অকালে ঝরে পড়া, যার ফলে উৎপাদন হ্রাস পায় এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। এই সমস্যাটি অনেক জৈবিক এবং অ-জৈবিক কারণের সাথে সম্পর্কিত। যদি এর কারণগুলি সঠিকভাবে চিহ্নিত করা হয় এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা কৌশল গ্রহণ করা হয়, তাহলে এই সমস্যাটি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
ছোট কাঁঠাল অকাল ঝরে পড়ার প্রধান কারণগুলি
১. পরাগায়ন এবং নিষেকের সমস্যা
পর্যাপ্ত পরাগায়নের অভাবে, ফলগুলি সঠিকভাবে বিকশিত হয় না, যার ফলে ফলগুলি অকালে ঝরে পড়ে। এর কারণগুলি হল:
- পরাগরেণুর অভাব (মৌমাছি, পোকামাকড়)
- উচ্চ আর্দ্রতা বা প্রচণ্ড তাপের কারণে পরাগরেণুর কার্যকলাপ হ্রাস পেয়েছে
- কাঁঠাল গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুলের ফুটন্ত ভারসাম্যহীনতা
২. পুষ্টির ঘাটতি
কাঁঠাল গাছের সঠিক বৃদ্ধির জন্য সুষম পুষ্টির প্রয়োজন। নিম্নলিখিত পুষ্টির অভাবের ফলে ফল ঝরে পড়তে পারে:
- নাইট্রোজেন (N): কোষ বিভাজন এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
- পটাশিয়াম (K): ফল ধরার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- ম্যাগনেসিয়াম (Mg) এবং জিঙ্ক (Zn): ফলের গুণমান এবং পরিপক্কতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- মাটিতে এই পুষ্টির অভাব থাকলে, ফল সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হয় না এবং ঝরে পড়ে।
৩. নিকাশি ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্যহীনতা
- অতিরিক্ত সেচের ফলে শিকড় পচনের সমস্যা দেখা দেয়, যা ফলের ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি করে।
- খরার ক্ষেত্রে, পানির অভাবে গাছটি পানির চাপে পড়ে এবং ফল ঝরে পড়তে শুরু করে।
- প্রচণ্ড তাপ এবং তীব্র বাতাস বাষ্পীভবন বৃদ্ধি করে, যার ফলে আর্দ্রতা হ্রাস পায় এবং ফল ঝরে পড়ে।
৪. পোকামাকড় এবং রোগের উপদ্রব
পোকামাকড়
- কাঁঠাল ছিদ্রকারী পোকা (Batocera rufomaculata) — এই পোকা গাছের ডালপালা দুর্বল করে দেয়, যার ফলে পুষ্টির সরবরাহ ব্যাহত হয় এবং ফল ঝরে পড়ে।
- থ্রিপস এবং মিলিবাগ—এই পোকামাকড় ফলের বৃদ্ধি ব্যাহত করে এবং পাতার ক্ষতি করে।
Share your comments