বাঙালির ভুড়িভোজের পর এক খিলি পান না হলে ঠিক মুখশুদ্ধি জমে না, তাছাড়া শুধু উৎসব কিংবা অনুষ্ঠানেই নয়, আজকাল পানের নিত্ত ব্যবহার এর পরিসংখ্যান যে বেশ উর্দ্ধমুখী তা পাড়ায় পাড়ায় পানের দোকান গজিয়ে ওঠা দেখলে সহজেই অনুমান করা যায়। এক দিকে পানের বাড়বাড়ন্ত চাহিদা ও অন্যদিকে বিশেষ অঙ্কের লাভ, এই দুই বিষয়কে মাথায় রেখেই দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সুন্দরবন অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামে পান চাষীরা পুরানো ও প্রথাগত পান চাষকে শিকেয় তুলে উৎপাদন বাড়াতে নতুন ছায়াজাল প্রযুক্তি ব্যবহারে বেশী উৎসাহিত হচ্ছেন। তাদের মতে এই নতুন আমদানিকৃত ছায়াজাল প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে বিগত বছরে তারা বিশেষ লাভ পেয়েছেন, কারণ এই প্রক্রিয়াতে যেমন নিয়ন্ত্রিত হয় রোগ পোকার আক্রমণ, তেমন নিয়ন্ত্রিত করা যায় প্রকৃতিক প্রতিকূল পরিবেশ যেমন বর্ষা, ঝোড়ো হাওয়া ও অত্যাধিক রোদকে। এই পদ্ধতিতে চাষ করলে উন্নত ও রপ্তানি উপযোগী পানপাতাও পাওয়া সম্ভব। পান চাষীদের মতে এই ছায়া বারোজ তৈরি করতে প্রাথমিক খরচ অনেকটা বেশী হলেও আখেঁড়ে লাভ অনেক বেশি। হিসেব করে দেখা গেছে, ২০০ বর্গমিটার ছায়াজাল তৈরি করতে খরচ হয় ৭২ থেকে ৭৫ হাজার টাকা, এর মধ্যে অবশ্য অর্ধেক সরকারি ভর্তুকি রয়েছে, ৫০০ বর্গমিটার লোহার কাঠামোর পলি হাউস তৈরিতে খরচ পড়ে প্রায় সাড়ে তিনলাখ টাকা, সরকারি ভর্তুকি ১লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। তবে পান চাষিরা যদি নিজের বাগানের বাঁশ দিয়ে কাঠামো তৈরি করেন তবে খরচ অনেক কম পড়বে, তবে ভর্তুকির জন্য প্রতি চাষিকে নিজেস্ব ব্লকের উপদেষ্টা আর সংশ্লিষ্ট কৃষিসহ অধিকর্তার সাথে আলোচনা করতে হবে, নাম নথিভুক্ত করে বারোজ তৈরির পর চাষিরা ব্যয়ভার সংক্রান্ত প্রমাণপত্র দেখালেই সরকারি ভর্তুকি চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। কিছু কিছু ক্ষুদ্র পান চাষিকে ছায়াজাল চাষের প্রশিক্ষণ ও দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
- প্রদীপ পাল
Share your comments