কাজু ব্যবসায় জোয়ার আনতে বাজারে এল ক্যাশু ইন্ডিয়া অ্যাপ। কর্ণাটকের ডিরেক্টরেট অফ ক্যাশু রিসার্চ (ডিসিআর)-এর উদ্যোগে এই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই অ্যাপের ফলে উপকৃত হবেন কৃষকরা।
ক্যাশু ইন্ডিয়া অ্যাপের মাধ্যমে শস্যের ফলন, মার্কেট ডেটা এবং স্টেক হোল্ডারদের পর্যবেক্ষণ যেমন জানা যাবে, সেই সঙ্গে কৃষকদের সুবিধা অসুবিধাও এই অ্যাপের মাধ্যেমে জানা যাবে। ডিসিআর-এর এই ক্যাশু ইন্ডিয়া অ্যাপ সরাসরি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)-এর সঙ্গে যুক্ত। এই অ্যাপের কার্যালয় দক্ষিণ কানাড়া জেলার পুত্তরে অবস্থিত। গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে এবং ১১টি ভাষায় তা উপলব্ধ। ভাষার সুবিধার জন্য সারা ভারত ব্যাপী এই ব্যবসা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে বলে আশা কর্মকর্তাদের।
ক্যাশু ইন্ডিয়া অ্যাপ আমাদের জানাবে কাজু গাছে কলম দেওয়া, পরিচর্যার নিয়ম, ফলন, গাছের রক্ষণাবেক্ষণ, ফলনের পর বিভিন্ন কার্যকলাপ, বাজারের অবস্থা। এছাড়াও ওয়েব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবসায় কীভাবে উন্নতি করা যায়, তা জানা যাবে। এই অ্যাপ যিনি ডিজাইন করেছেন বা বলা যেতে পারে যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, সেই এস মোহনা জানিয়েছেন, কৃষক, বিশেষজ্ঞ, ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি বা প্রসেসরদের জন্য ই-মার্কেটের সুবিধার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যাবে এই অ্যাপে।
সহজ পরিচালনযোগ্য (Ease to use) -
মোহনা জানিয়েছেন, এই অ্যাপ অনেকটাই ইউজার ফ্রেন্ডলি। কৃষক বা ইউজার কালটিভেশন সেকশন অধীনে মাই ক্যাশু সাব-সেকশনের অধীনে কাজুর ছবি বা বিভিন্ন ভিডিও ডাউনলোড করতে পারেন। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে রেকর্ডও করা যেতে পারে। এছাড়াও এই অ্যাপে কোনও ইউজার নিজেদের ব্যয়, পর্যবেক্ষণ এবং ক্যাশু ফার্মের ডেটা রেকর্ড রাখতে পারেন। চ্যাটরুম সেকশনে ইউজার প্রয়োজনে কাজু ফলন সম্বন্ধীয় কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারেন বা নিজেদের মতামতও রাখতে পারেন।
অ্যাপের মাধ্যেমই কেনাবেচা -
অ্যাপ মারফতই গাছের কলম অর্ডার করা যাবে। রাজ্যের বিভিন্ন রিসার্চ সেকশনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এই অ্যাপ। যার ফলে তাদের উদ্যোগেই অর্ডার করা জিনিসটি পৌঁছে যাবে কৃষকদের কাছে। ফলিত কাজু বিক্রির জন্য অ্যাপের মাধ্যমে ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। মার্কেট ইনফো সেকশনে কেনাবেচার সমস্ত তথ্য উল্লেখ করতে হবে। এরপর বিশেষজ্ঞরাই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেবেন। কিংবা বিক্রেতা চাইলে নিজেরাও যোগাযোগ করে নিতে পারেন।
বিভিন্ন রাজ্য এবং ভাষার সংমিশ্রণ -
মোহনা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত গুজরাট, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, কেরালা, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং মেঘালয়ে এই অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণ করা যাবে। এই প্রথম একটি অ্যাপে এতগুলো রাজ্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেই রাজ্যের বিভিন্ন ভাষাও এই অ্যাপের অন্তর্ভুক্ত। হিন্দি, ইংরাজি, গুজরাটি, মারাঠি, কানাড়া, মালায়ালাম, তামিল, তেলেগু, ওড়িয়া এবং গাড়ো ভাষায় ক্যাশু ইন্ডিয়া অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে।
সারা দেশ জুড়ে অল-ইন্ডিয়া কোঅর্ডিনেটেড রিসার্চ প্রজেক্টের বিভিন্ন সেন্টার এবং ডিএসআর-এর বিজ্ঞানীরা এই অ্যাপে বিভিন্ন কারিগরী সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে থাকেন। মোহনা জানিয়েছেন, ডিরেক্টরেট অফ ক্যাশু অ্যান্ড কোকোয়া ডেভেলপমেন্ট, কোচি মারফত ইউনিয়ন মিনিস্ট্রি অফ অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফারমারস ওয়েলফেয়ার উদ্যোগে হর্টিকালচারের ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্টের জন্য তৈরি মিশনের জন্যই আর্থিক সহায়তা পেতেও কোনও অসুবিধা হয় না। কাজুর ফলনের উন্নতিকল্পে এগিয়ে ডিসিআর স্বয়ং। কাজু দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শস্য, যা বিদেশি মুদ্রা আয় করে দেশের তহবিলকে সমৃদ্ধ করে। তাই ডিসিআর-এর মাধ্যমেই বিভিন্ন গবেষণা করা হয়। এছাড়াও ফলন বাড়াতে বিভিন্ন কার্যকলাপ, প্রসেসিং বা ভ্যালু অ্যাডিশনের কাজটাও ডিসিআর-এর উদ্যোগেই হয়।
ত্রয়ী মুখার্জী
Image source - Google
Related articles - (Digital Agriculture) ডিজিটালে কৃষির মার্কেটপ্লেস নিয়ে হাজির ‘ফার্মিং দ্য ওয়েব’