খরা, বন্যা, সাইক্লোন, ঝড়ঝাপটা, ভূমিধ্বস, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক কিছু কারণবশত ভারতীয় কৃষি উৎপাদন অ কৃষি রোজগার ক্রমাগত ধাক্কা খাচ্ছে । মহামারি প্রাদুর্ভাবে ও মনুষ্যসৃষ্ট অগ্নিকান্ড, সঞ্চিত বীজ বিক্রয়, সার, কীটনাশক ও আগাছানাশক এর অত্যাধিক ব্যবহারে এবং ফসলের দাম পড়ে যাওয়ার কারণে কৃষিকার্যের চলমানতা ক্রমাগত জটিল হচ্ছে। এই সমস্ত কারণে চাষীদের স্বার্থ আর সুরক্ষিত থাকছে না এবং এই ফসলের লোকসান কখনো কখনো এমনই মারাত্মক আকার ধারণ করছে যে টা সামাল দেওয়াই কৃষকের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। কৃষিজ পণ্যের বাণিজ্যের ক্রমাগত বৃদ্ধি, ফসলের মূল্যের ভারসাম্যতা হারিয়ে যাচ্ছে যাতে দিনের পর দিন ক্ষতির পরিমাণ আরও উর্ধমূখী হয়ে চলেছে । এখন প্রশ্ন হচ্ছে কী করে কৃষকদের এই ভয়াবহ প্রতিনিয়ত ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো যায়? ভারতীয় আইন অনুযায়ী কৃষকদের নির্দিষ্ট ফসলে লোকসানের পরিমাণের কিছুটা ন্যূনতম সমর্থন মূল্য(MSP) প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের আয়যোগ্যতা পরিমাপ করে প্রদান করা উচিত। কিন্তু অধিকাংশ ফসলের উপড় বা অধিকাংশ রাজ্যে এখনও এই MSP প্রযুক্ত হয় নি।
বর্তমান সময়ে চুক্তি চাষ ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্য ব্যবস্থার মতো ব্যবস্থা তৈরী হওয়াতে আশা করা যাচ্ছে যে কিছু মূল্য বীমা হিসাবে পণ্যমূল্যের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকবে। কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে বেশীরভাগ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয় সাধারণত উৎপাদনের ও আয় সংক্রান্ত ঝুঁকির নিরিখে যেই সমস্ত ক্ষতিগুলি বিবিধ প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে ঘটে থাকে। কৃষি বীমা হল সেই ব্যবস্থা যা সাধারণত কৃষকদের কিছু অপূরণীয় ক্ষতিকে সামলাবার জন্য করা হয় যে সমস্ত ক্ষয় ক্ষতিসমূহ কিছু অজানা প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণের প্রভাবে ঘটে থাকে। বলতে গেলে এটি কৃষকদের অনিশ্চয়তাজনিত অস্বাভাবিক ক্ষতিপূরণের একটি ভবিষ্যতব্যবস্থা স্বরূপ। ভারত কৃষিপ্রধান দেশ যেখানে কৃষিকে ভিত্তি করে বেশীর ভাগ গ্রামীণ অর্থনীতি গড়ে ওঠে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৬ সালে ১৩ই জানুয়ারী কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার তাগিদে গড়ে তোলেন প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা (PMFBY) পরিকল্পনাটি। এই পরিকল্পনা অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত ও ঋণগ্রস্ত কৃষকের মাথা থেকে ক্ষতি বা ঋণের বোঝা কমাতে সফল হবে। এই পরিকল্পনা কৃষকদের ঝুঁকি নেওয়ার শক্তি দেবে যাতে তারা পরিবেশের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার রসদ যোগাবে।
এই পরিকল্পনার সাহায্যে কৃষক তার ক্ষতিগ্রস্থ অংশের বীমাকৃত ক্ষতিপূরণও দাবী করতে পারেন, এবং তা অত্যন্ত সহজ ও দ্রুত প্রক্রিয়ায়, যাতে কৃষকদের বীমাকৃত ফসলের অর্থ প্রাপ্তিতে কোনোরূপ অসুবিধার সৃষ্টি না হয় । এই পরিকল্পনা ভারতের সমস্ত রাজ্যে চালু করা হবে, যা কাজে সহযোগিতা করবে প্রতিটি রাজ্যসরকার। এই পরিকল্পনার প্রশাসনিক দায়িত্ব থাকবে Ministry Of Agriculture and Farmer Welfare, Government Of India.
- প্রদীপ পাল
Share your comments