
ড. বিপ্লব কুমার দাস, (Senior Scientist & Head, Jalpaiguri, KVK) জলপাইগুড়ি জেলার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বরিষ্ঠ বিজ্ঞানী। ২০০৫-২০১২ পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উত্তর দিনাজপুর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, চোপড়ায় বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ (উদ্যানপালন বিভাগ) হিসাবে কর্মনিযুক্ত এবং বিভিন্ন গবেষণা কার্যের মাধ্যমে চাষীদের বৈচিত্র্যপূর্ণ উদ্যানপালনের সাথে পুষ্টির নিরাপত্তা এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে নিযুক্ত থাকার পর জলপাইগুড়ি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে বরিষ্ঠ বিজ্ঞানী রূপে কর্মনিযুক্ত হয়ে গবেষণা ও সম্প্রসারণ কাজে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেন।
জলপাইগুড়ি জেলার কেভিকে-র এই বরিষ্ঠ বিজ্ঞানীর প্রধান লক্ষ্যই হল স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা করা, কৃষিক্ষেত্রে তাদের আর্থিক উন্নতির পথ দেখানো। জলবায়ু এবং এলাকাভিত্তিক সময়োপযোগী কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের আয় বৃদ্ধি সাথে পুষ্টি ও জীবিকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণ, গরমকালে শীতের সবজি অর্থাৎ অসময়ে কোন সবজি চাষ করলে চাষীদের অধিক লাভ হবে, তারা দাম বেশী পাবেন, এ সকল বিষয়ে তিনি তাদের পরামর্শদাতা। উত্তরবঙ্গের মতো ভারী বৃষ্টিপাত এবং অণুখাদ্যের ঘাটতি এলাকায় কীভাবে ফসল চাষের পদ্ধতি অবলম্বন করবেন চাষীরা, সে বিষয়েও তিনি তাদের পথ প্রদর্শক। গতানুগতিক পদ্ধতিতে প্রচলিত ফসল আলু, লঙ্কা, কপি, বেগুন, চাষ করা ছাড়াও অন্যান্য অপ্রচলিত সবজি যেমন, ক্যাপসিকাম, ব্রকোলি, লাল বাঁধাকপি, চেরি টমেটো, সামার স্কোয়াশ ইত্যাদির চাষ তাঁর ও এখানকার কেভিকে-র সহায়তায় উত্তর দিনাজপুর এবং সমগ্র জলপাইগুড়িতে বিস্তৃতি লাভ করেছে। এছাড়া ইফ্কোর প্রদর্শনী, নাবার্ডের বিভিন্ন প্রকল্প- সম্পর্কে চাষীদের উন্নতির উদ্দেশ্যে তাদের সচেতন করা, তফশিলি-উপজাতির সম্প্রদায়ের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে তাদের জানানো এবং জেলার অনগ্রসর জাতির উন্নয়ন দফতরের মাধ্যমে সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা, স্থানীয় গ্রামের প্রান্তিক মানুষগুলিকে হাঁস, মুরগী, ছাগল, শূকর পালন ইত্যাদিতে উদ্বুদ্ধ করে তাদের নিজেদের কর্মসংস্থান করা, SSB –এর অধীনে বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন বর্ডার এরিয়া ডেভেলপমেন্ট এর আওতায় জেলার উন্নয়ন দফতর, জেলা উন্নয়নশীল সমিতি, জেলা গ্রামোন্নয়ন (DRDC) দফতর, SHG গ্রুপ এবং মহিলা সমিতির মাধ্যমে অনুন্নত অঞ্চলের মানুষদের পুষ্টি নিরাপত্তা, কিচেন গার্ডেনিং, রঙিন মাছ চাষ, মাছের পোনা গ্রুপের মাধ্যমে তৈরী করা, পুকুর কেন্দ্রিক খামার চাষ, সুপারি ও ফল বাগানভিত্তিক মিশ্র চাষ করে একক এলাকা থেকে আয় বৃদ্ধি, তৈল বীজ এবং ডালের চাষ পদ্ধতি, মাশরুম ও মৌমাছি পালন, বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া ও প্রদর্শনী, FPO, ফার্মার্স ক্লাব তৈরি করে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, আতমা প্রকল্পের মাধ্যমে লেবু বাগান তৈরী, ক্রপিং মডেল তৈরী -এরকম বিভিন্ন ক্ষেত্রে জড়িয়ে রয়েছে এই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র।
নভেল করোনা-র কারণে লকডাউন, কালবৈশাখী ঝড়বৃষ্টি এবং শেষে সুপার সাইক্লোন আমফানের প্রভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাংলার কৃষকবন্ধুরা। এই সময়ে তাদের ফসল ব্যবস্থাপনা এবং আগত খরিফ মরসুমে কীভাবে চাষীরা বৈচিত্র্যপূর্ণ উদ্যানপালনের মাধ্যমে পুষ্টি ও জীবিকার নিরাপত্তা এবং অন্যান্য চাষাবাদ কার্য পরিচালনা মাফিক করবেন, সেই সম্পর্কে ড. বিপ্লব কুমার দাস, আগামী বুধবার (২৭/০৫/২০২০) ৪.৩০ ঘটিকায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন কৃষি জাগরণের পেজে লাইভ প্রোগ্রামের মাধ্যমে। তাঁর এই বক্তব্য থেকে আমাদের কৃষকবন্ধুদের অনেকাংশেই উপকার হবে বলে আশা রাখি।
স্বপ্নম সেন
Share your comments