শুধু দরকার মনের জোর আর সৎ ইচ্ছা ব্যস তাহলেই যে কোনও অসাধ্য সাধন। তারই প্রমাণ দিলেন বঙ্গতনয়া পিয়ালি বসাক। প্রথমে জয়ের ঝাণ্ডা এভারেস্টে তার দিন দুয়েকের মধ্যেই লোৎসে শৃঙ্গ জয় করলেন চন্দননগরের কন্যা। জোড়া শৃঙ্গ জয় করে নজির গড়লেন তিনি। তাঁর এই সাফল্যে গর্বিত গোটা বাংলা।
একসঙ্গে এভারেস্ট এবং লোৎসে শৃঙ্গ জয় করার স্বপ্ন নিয়েই যাত্রা শুরু করেন পিয়ালি। সঙ্গে অতিরিক্ত অক্সিজেন ছাড়া এই দুই শৃঙ্গ জয় করার লক্ষ্য নিয়েছিলেন বঙ্গতনয়া। প্রায় অসাধ্য সাধন করেই নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফেরার পথে আবহাওয়া খারাপ হওয়ার জন্য ৮৪৫০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করতে বাধ্য হন তিনি। ২২ মে এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখে স্বপ্নকে সত্যি করেন বছর ৩১ এর পিয়ালি। নামার সময় শরীর খারাপের মুখোমুখি হন তিনি। জাঁকিয়ে বসছিল ক্লান্তি। স্নো ব্লাইন্ডনেস হয় তাঁর। তবে হাল ছাড়েননি। শরীর খারাপ নিয়েও ক্যাম্প ৪-এ ফিরেও নীচে নামেননি। সেখানে কিছুটা বিশ্রাম নিয়েই বিশ্বের চতুর্থ উচ্চতম লোৎসে শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন সত্যি করতে বেরিয়ে পড়েন।
সোমবার সকাল ১১ টায় লোৎসে শৃঙ্গ জয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। এজেন্ট সুত্রে খবর আসে মঙ্গলবার সন্ধ্যের মধ্যেই বিশ্বের চতুর্থ উচ্চতম লোৎসে শৃঙ্গ জয় করেন পিয়ালি। পর পর দুই শৃঙ্গ জয় করে ইতিহাস তৈরি করলেন বাংলার এই কন্যা। তবে এই জয়ের রাস্তা মোটেও সহজ ছিল না। শারীরিক, মানসিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে স্বপ্ন সত্যি করলেন পিয়ালি। বহুদিন ধরেই এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন বুনছিলেন তিনি। কিন্তু পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল অর্থ। এভারেস্ট অভিযানের জন্য প্রয়োজন ৩৫ লাখ টাকা। বাড়ি বন্দক, যাবতীয় সঞ্চিত অর্থ নিয়েও ১৮ লাখ টাকার বেশি জোগাড় হয়নি। আর এদিকে নেপাল সরকার জানায় পুরো টাকা না হলে এভারেস্ট অভিযান করা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ গোটা গ্রামে শুধু দুজন! দুজনই কৃষিকাজ করে দূর করলেন ভুতুড়ে কুসংস্কার
এখানেও হাল ছাড়েননি পিয়ালি। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ইচ্ছা, স্বপ্নের কাহিনি জানান সকলকে। সাহায্য চান সকলের কাছে। সেখান থেকে ৫ লাখ টাকার জোগাড় হয়। এর পরেও ছিল ১২ লাখ টাকার প্রয়োজন। এই সময় সাহায্যের হাত বাড়ায় একটি এজেন্সি। ব্যস আর কে আটকায়। গত রবিবার বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে জয়ের পতাকা ওড়ালেন বঙ্গকন্যা।
আরও পড়ুনঃ লেবুর মত দেখতে এগুলি কি ফল? চাষ করে তাক লাগালেন মুর্শিদাবাদের কৃষক
উল্লেখ্য,গত অক্টোবরে দেশের প্রথম মহিলা হিসেবে অতিরিক্ত অক্সিজেন ছাড়া ধৌলাগিরি শৃঙ্গ জয় করেছিলেন তিনি। আর এবার পরপর দুটি শৃঙ্গ আরোহণের মুকুট আনলেন নিজের কৃতিত্বের ঝুলিতে।
Share your comments