কৃষিজাগরন ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যসভায় ভাষণ দেন। তিনি উচ্চকক্ষে উপরাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন,ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান শ্রী ধনদীপ ধনখড়কে সংসদের সকল সদস্যের ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাই। উপরাষ্ট্রপতির সম্মানজনক পদের প্রতি আলোকপাত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আসনটি লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে সম্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী সভার সব সদস্যের পক্ষ থেকে সশস্ত্র বাহিনীর ফ্ল্যাগ-ডে উপলক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীদের অভিবাদন জানান। উপরাষ্ট্রপতির জন্মস্থান ঝুনঝুনুর প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সেবায় ঝুনঝুনুর বহু পরিবার এগিয়ে এসেছে। তিনি জওয়ান ও কৃষকদের সঙ্গে উপরাষ্ট্রপতির ঘনিষ্ট যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমাদের উপরাষ্ট্রপতি একজন কৃষক পুত্র এবং তিনি পড়াশোনা করেছেন সৈনিক স্কুলে। তাই তিনি জওয়ান এবং কৃষকদের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে যুক্ত।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদের উচ্চকক্ষ উপরাষ্ট্রপতিকে এমন এক সময় স্বাগত জানাচ্ছে যখন ভারত দুটি ঐতিহাসিক মুহুর্তের সম্মুখীন। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, ভারত আজাদি কা অমৃতকালে প্রবেশ করেছে এবং জি২০ শিখর সম্মেলনে সভাপতিত্ব করার সম্মানজনক সুযোগ পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামীদিনে নতুন ভারতের নতুন উন্নয়নের যুগ শুরু হবে এবং বিশ্বের কাছে ভারত এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দেশ হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের গণতন্ত্র, আমাদের সংসদ এবং আমাদের সংসদীয় ব্যবস্থাপনার এই যাত্রাপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।”
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান পদে উপরাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার বিষয়টিকে আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত নানান দায়িত্ব সংসদের উচ্চকক্ষের কাঁধে রয়েছে। “ভারত এই সময়কালে এই দায়িত্বের গুরুত্ব অনুভব করে”- বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুর মাধ্যমে দেশের আদিবাসী সমাজ ভারতকে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পথদিশা দেখাচ্ছে। তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোবিন্দের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এক প্রান্তিক শ্রেণীর জনগণের প্রতিনিধি ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ জলপাইগুড়ি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে শুরু হল তিনদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ শিবির
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনার জীবন এর পরিচয় বহন করে যে কেবলমাত্র সম্পদ থাকলেই কোনো কিছু অর্জন করা যায় না, প্রয়োজন অভ্যাস ও প্রতিশ্রুতির। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বর্ষিয়ান আইনজীবী হিসেবে কাজ করার যে অভিজ্ঞতা উপরাষ্ট্রপতির রয়েছে সেই প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, সভায় তিনি তাঁর আদালতকে ফিরে পাবেন। এই রাজ্যসভায় এমন বহু সংখ্যক মানুষ রয়েছেন যাঁদের সঙ্গে তাঁর সুপ্রিম কোর্টে দেখা হত। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আপনি বিধায়ক থেকে সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং রাজ্যপাল হিসেবেও কাজ করেছেন। এই দায়িত্বগুলি পালনে তাঁর যে নিষ্ঠা ছিল তা দেশের উন্নয়নে ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের সময় শ্রী জগদীপ ধনখড় ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন। এ থেকে প্রমানিত হয় যে তাঁর ওপর প্রত্যেকেরই আস্থা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নেতৃত্বের যথাযথ সংজ্ঞা হচ্ছে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া, রাজ্যসভার পরিপ্রেক্ষিতে যা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ”।
সভার মর্যাদা রক্ষায় সদস্যদের দায়িত্বের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের পরিচায়ক সংসদ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বহু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কোনো না কোনো সময়ে রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী সদস্যদের আশ্বস্ত করে বলেন, উপরাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে সভা তার গরিমা ও মর্যাদা ফিরে পাবে। “সভায় গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক বিষয়ে আলোচনা, গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমি হিসেবে আমাদের মর্যাদা আরও বাড়াবে” বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ দিল্লিতে ‘পহলে’ আপ, বিজেপির ১৫ বছরের ভাঙল রেকর্ড! পুরনিগম এখন কেজরির হাতে
বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান সভার সদস্যদের কাছে হাসি ও আনন্দের উৎস ছিলেন। “আমি নিশ্চিত আপনাদের ছোটখাটো মজা করার অভ্যাস ক্লান্তি দূর করবে এবং আপনারা সভায় আরও বেশি ভাবে কাজ করবেন-” এই বলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
Share your comments