ইয়াস বা যশ (CycloneYaas) অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে মানুষকে প্রকৃতির কাছে হার মানতে হয়েছে। কিন্তু কোথাও না কোথাও দুর্যোগকে হার মানতে হয়েছে কৃষকের মেধার কাছে। হলদিয়ার রূপনারায়ণচকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে হুগলি নদী। এই নদীর গা-ঘেঁষে রয়েছে রূপনারায়ণচক, ঝিকুড়খালি, শালুকখালি, বাণেশ্বরচক গ্রাম। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল গ্রামগুলির চাষিদের আয়ের মুখ দেখাতে উদ্যোগী হয় হলদিয়া শিল্প তালুকের স্থানীয় বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থা হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড।
কয়েক মাস আগে ঘটে যাওয়া যশের দাপটে বহু জায়গায় লোনা জল ঢুকে ফসল নষ্ট করেছে। রূপনারায়ণচক-সহ পাশাপাশি গ্রামগুলি এই নোনা জলের শিকার হয়। নন্দকুমার ব্লকে অবস্থিত পূর্ব মেদিনীপুর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে এখানে চাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড। অতিরিক্ত জল এবং লোনা জলের উপযোগী ধান ‘অমলমনা’ এবং ‘স্বর্ণ-সাব-ওয়ান’ দুটি প্রজাতির ধান চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করে।
কিভাবে শুরু হল এই ধান চাষ (How it started)?
জানা গিয়েছে, এলাকার ৪০ জন চাষিকে সরকারি খরচে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বীজধান-সহ চাষে প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়েছে। ধানের মাঠ এখন সবুজময়। এমন সহযোগিতা পেয়ে চাষিরাও বেশ খুশি। স্থানীয় চাষি পালান বৈরাগী বলেন, হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড কোম্পানি এবং কৃষি বিজ্ঞানীদের সাহায্যে তারা নতুন ধান চাষের সুযোগ পেয়েছেন |
আরও পড়ুন -Sesbania grandiflora cultivation process: জেনে নিন বকফুল চাষের বিস্তারিত পদ্ধতি
কর্পোরেট সোসাল রেসপন্সিবিলিটি(সিএসআর) প্রকল্প হলদিয়া এনার্জি লিমিটেডের এমন ব্যাতিক্রমী উদ্যোগে উপকৃত চাষিরা। সংস্থার সিএসআর প্রকল্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত ম্যানেজার সত্যজিৎ গাঙ্গুলী জানান, মানুষের যথার্থ উপকার হোক এটাই তাদের উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্যে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে স্থানীয় চাষিদের চাষের উন্নতি ঘটাতে চেয়েছেন তারা। যাতে কৃষকবন্ধুদের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ে |
কি কি চাষ হচ্ছে?
শুধু ধান চাষ নয়, এই নোনা জমিতে হচ্ছে সবজিরও চাষ | সবজি চাষেও সুফল পেয়েছে এলাকার চাষিরা। হলদিয়ার সবজি উৎপাদনের বৃহৎ হিসেবে পরিচিত এই জায়গা। সম্প্রতি তৈলবীজ চাষের আধিক্য দেখা গিয়েছে। বছর দুই আগে পূর্ব মেদিনীপুর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রকল্প ভিত্তিক সবজি চাষ শুরু হয়। আবহওয়া এবং মাটির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী অন্যান্য চাষেও জোর দেওয়া হয়েছে।
কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, এখানে কৃষিক্ষেত্রে কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে ভীষণ আগ্রহ রয়েছে। পরিবেশ উপযোগী উন্নত প্রজাতির সবজি,ধানের পাশাপাশি চিনাবাদাম চাষের কাজ শুরু হয়েছে । মালচিং পদ্ধতিতে বেশ ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে |
কৃষকদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসা এই বিদ্যুৎ সংস্থা ও কৃষি বিজ্ঞানীদের পরামর্শে চাষীভাইরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন | নোনা জমিতে সাফল্যের সাথে চাষ করে তারা আর্থিক দিক থেকেও লাভবান হচ্ছেন | আশা করা যায়, কৃষকদের এই সমস্যা শীঘ্রই দূর হবে |
আরও পড়ুন - Howrah Zila Parishad Recruitment: জেলা পরিষদে গ্রূপ-ডি কর্মী নিয়োগ, দেখুন আবেদন পদ্ধতি
Share your comments