ভারতে কেরালার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম রাবার উত্পাদনকারী অঞ্চল ত্রিপুরা । ৮৫,০৩৮ হেক্টরেরও বেশি জমিতে এখানে রাবার চাষ হয় এবং বার্ষিক ৭৪,১৩৯ টন রাবার উত্পাদন হয়। ১.৫০ লক্ষেরও বেশি পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এখানে রাবার চাষের সাথে জড়িত।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব (রবিবার রাত ও সোমবার স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে প্রচারিত) একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বলেন যে, ‘এই কাঁচামাল গ্রহণকারী বেশিরভাগ শিল্প এখন বন্ধ রয়েছে। রাজ্যের বাইরে প্রাকৃতিক রাবার সরবরাহ করতে না পারায় ত্রিপুরা লোকসানের মুখোমুখি হয়েছে’। প্রাকৃতিক রাবার খাত থেকে ত্রিপুরা বছরে প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা আমদানি করে। এই সময় রাজ্যে রাবার শিল্পে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫০ কোটি টাকা।
তিনি আরও বলেন যে, 'এ জাতীয় পরিস্থিতিতে রাজ্য রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং জনগণের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত করার বিকল্প হিসাবে সরকার প্রাথমিক খাতগুলিকে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
তাঁর মতানুযায়ী, পোল্ট্রি, মৎস্যপালন, পশুপালন, দুগ্ধ, কৃষি, উদ্যানতত্ত্ব ও ফুলের চাষের মতো প্রাথমিক খাতগুলিতে কম বিনিয়োগের মাধ্যমে অধিক টাকা উপার্জন করা যায়।
তিনি বলেন, রাজ্যের ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকার, দু'বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণের পরে, প্রাথমিক খাতকে আরও শক্তিশালী করার কাজ প্রথম থেকেই শুরু করেছিল, তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে, এই ধরনের খাতগুলিতে স্বনির্ভরতার জন্য লক্ষ্যযুক্ত সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ত্রিপুরাকে একটি মডেল রাজ্যে রূপান্তর করার লক্ষ্য থেকে রাজ্য সরকার পিছপা হবে না। এই প্রসঙ্গে আমাদের সকল বিভাগের সহযোগিতা প্রয়োজন। অন্ধ্র প্রদেশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৫০ কোটি টাকার ফিশ সিড সংগ্রহ করে। ত্রিপুরা যদি এই চাহিদা মেটাতে পারে তবে আমরা আমাদের মাছ চাষীদের আয় যথেষ্ট পরিমাণে বাড়িয়ে তুলতে পারব। তিনি এও জানান, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে অন্ধ্র প্রদেশের সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ করেছে’।
তিনি তাঁর বক্তব্যের শেষে বলেন যে, ত্রিপুরায় কাঁঠাল, আনারস এবং কমলালেবুরর মতো ফল প্রচুর পরিমাণে উত্পাদন হয়। এখানে বিভিন্ন জায়গায় কমলালেবুর চাষ হয়। উৎপাদন পূর্বের তুলনায় তিনগুণ বৃদ্ধিও পেয়েছে। তৎসত্ত্বেও এখানে রাবার উৎপাদন এবং এই শিল্পের সাথে বহু মানুষের কর্মসংস্থান সংযুক্ত, সরবরাহ কার্য বন্ধ থাকায় তাদের আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। সরকার তাদের সহায়তা করার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করে চলেছে।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments