আমাদের দেশের অনেক মানুষই দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। স্বাভাবিকভাবেই তাদের পক্ষে জমি কিনে চাষাবাদ করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। তাদের কথা চিন্তা করে সরকার আর্থিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প প্রচলন করেন এবং অনুদান দিয়ে থাকেন। অর্থের অভাবে দরিদ্র কৃষকরা নিজের জমিও কিনতে পারেন না, তারা অনেক সময়ই আর্থিক দুরাবস্থার কারণে কৃষিকাজ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হন।
তবে এবার তাদের উন্নতির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিল স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। কৃষকদের জন্য স্টেট ব্যাংক একটি প্রকল্প প্রচলন করেছে, যার মাধ্যমে লোণ নিয়ে কৃষকাজের জন্য জমি ক্রয় করতে পারবেন কৃষকরা। ভূমি ক্রয় প্রকল্পের আওতায় ভারতের কৃষকদের এই লোণ দেওয়া হবে(প্রযোজ্য সর্বত্র)। তথ্য অনুযায়ী, ৭ শতাংশ সুদের হারে এই লোণ দেওয়া হয়।
কারা আবেদন করতে পারবে -
- যাদের ৫ একর বা আড়াই একরেরও কম জমি রয়েছে, তারা ব্যাংকের এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন।
- ক্ষুদ্র (৫ একর বা আড়াই একরেরও কম) জমির মালিক বা ভূমিহীন শ্রমিক বা কৃষকরা ব্যাংকে এ জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- আবেদনকারীর লোণ রিপেমেন্ট রেকর্ড (কমপক্ষে দুই বছর) থাকা বাধ্যতামূলক।
লোণের পরিমাণ -
ব্যাংক কর্তৃক ক্রয়কৃত জমির মূল্য অনুসারে লোণ মোট মূল্যের ৮৫ শতাংশ প্রদান করা হবে।
লোণ পরিশোধের সময়কাল -
স্বল্প সুদের হারে লোণ দেওয়ায় কৃষকরা স্বাচ্ছন্দ্যে এই লোণ পরিশোধ করতে পারেন। এটি পরিশোধের সময়কাল সাধারণ লোণের মতো ১ অথবা ২ বছর নয়, বরং ৯ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত এর সময়সীমা। যদি ক্রয়কৃত জমি কৃষিকাজের জন্য প্রস্তুত থাকে, তবে আপনি লোণ পরিশোধ শুরু করার জন্য সময় পাবেন ১ বছর। তবে, যদি আপনার জমি চাষের জন্য প্রস্তুত না থাকে, তবে সেক্ষেত্রে আপনি লোণ পরিশোধ শুরু করার জন্য ২ বছর সময় পাবেন। লোণ নিতে আবেদনের জন্য স্থানীয় এসবিআই শাখায় যোগাযোগ করুন।
জমি ক্রয়ে সতর্কতা –
আপনি যে জমি কৃষিকাজের জন্য ক্রয় করতে চলেছেন, তা ফসলের উন্নত ফলনের জন্য আদৌ কি উপযুক্ত, না কি তা অনুর্বর? তা জানার জন্য, মাটি পরীক্ষা করা প্রয়োজন। উদ্ভিদের সঠিক বৃদ্ধি এবং বিকাশ মাটির পুষ্টির উপর নির্ভর করে। এই পুষ্টিগুলি কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং সালফার হিসাবে পরিচিত। মাটিতে এই পুষ্টিগুলির ভারসাম্য না থাকলে সেই জমি কৃষিকাজের জন্য ক্রয় করা মোটেই লাভজনক নয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য –
এই প্রকল্পের আওতায় লোণ গ্রহণের মাধ্যমে কেনা জমিটির মালিকানা লোণ শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত ব্যাংকের কাছে থাকবে।
স্বপ্নম সেন
Share your comments