সুন্দরবনের গ্রামীণ মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে ধিরে ধিরে গড়ে উঠেছে সুন্দরবন দুগ্ধ সময়বায়ের ‘সুন্দরিনী ন্যাচারালস’ ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ডের দেশি গোরুর দুধ, ঘি, জঙ্গলের খাঁটি মধু, হাস-মুরগির ডিম, মুগ ডাল এবং দেশি চালের বাজার এখন খুব কদর ও চাহিদা। ব্যবসার লাভের টাকা সরাসরি জমা পড়ে মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তার মাধ্যমে জীবনযুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার গ্রামীন দরিদ্র মহিলা।
এই অনন্য অবদানের জন্য সুন্দরিনীকে দেশের আদর্শ ‘মডেল’ হিসাবে গণ্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা রাষ্ট্রীয় দুগ্ধ উন্নয়ন পর্ষদ (ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড)। সুন্দরিনীর সাফল্যের জন্যই গুজরাত-সহ সারা দেশের প্রায় কয়েক হাজার দুগ্ধ সমবায়ের মধ্যে সেরা নির্বাচিত হয়েছে রাজ্য প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অধীনস্থ সুন্দরবন দুগ্ধ ও প্রাণিসম্পদ উৎপাদক সমবায় সঙ্ঘ লিমিটেড।
বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে গত ১ জুন গুজরাতের আনন্দে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতরাজ ও কৃষিমন্ত্রী শ্রী পুরুষোত্তম রুপালা। একই দিনে দিল্লিতে সর্বভারতীয় বণিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সুন্দরবন দুগ্ধ সমবায়কে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কারও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষিতে ফার্মার্স প্রোডিউসার কোম্পানী
সুন্দরিনী ব্র্যান্ডের দুধ, ঘি, মধু, চাল, ডাল সবটাই উৎপাদন করে থাকে সুন্দরবনের মহিলারা। এগুলি সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি হয়। দুধে কোনও রাসায়নিক মেশানো হয় না। কোনও গোরুকে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয় না। গোরুকে মূলত ভুট্টা, সরগম, অ্যাজোলা ও বারসিমের ঘাস খাওয়ানো হয়। চাষিদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করার পর সেটা যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করা হয়। দুধ রাখার জন্য কোনও প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করা হয় না, স্টিলের পাত্রে দুধ রাখা হয়। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় জয়নগরের দুগ্ধ সমবায় প্ল্যান্টে। সেখানে ঘি, পনির-সহ বিভিন্ন দুগ্ধজাত দ্রব্য তৈরি হয়।
সুন্দরিনী ব্র্যান্ডের সেই সব জিনিসপত্র বিক্রি করা হয় রাজ্য প্রাণিসম্পদ দপ্তরের বিভিন্ন বিপণনকেন্দ্রে। আলিপুরে নিজেদের আউটলেট থেকেও সুন্দরিনী ব্র্যান্ডের পণ্যগুলি বিক্রি করা হয়।
- রুনা নাথ (runa@krishijagran.com)
Share your comments