কৃষিজাগরণ ডেস্কঃ ঋণ নিয়ে ট্রাক্টর কিনেছিলেন বিশেষ ভাবে সক্ষম এক কৃষক।কিন্তু সময় মতো ঋণের টাকা শোধ করতে পারেননি তিনি। যার ফলস্বরুপ ঋণের টাকায় কেনা ট্রাক্টর দিয়েই পিষে দেওয়া হল তার অন্তঃসত্ত্বা কন্যাকে। আত্মনির্ভর ভারতে ঋন আদায় করার এটাই কি নতুন পন্থা ? ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ জেলায় ইচক থানা এলাকায়।
বেশ কয়েকদিন আগে ঋণ নিয়ে একটি ট্রাক্টর কিনেছিলেন মিথিলেশ মেহতা নামে ওই কৃষক। তবে চাষ করেও তেমন লাভ হয়নি,ফলে ঋণের টাকা ইচ্ছে থাকলেও বকেয়া ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা শোধ করতে পারনেনি হতভাগ্য ওই কৃষক।কিন্তু এদিন কোনো রকম আগাম নোটিশ ছাড়াই ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরা পৌঁছে যায় তার বাড়িতে। ঋণের টাকা নিয়ে কৃষক এবং আদায়কর্মীদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। সেই সময় ওই কৃষকের তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গেও ওই আদায়কর্মীর বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এর পরই ট্রাক্টর দিয়ে কৃষকের অন্তঃসত্ত্বা কন্যাকে পিষে দেয় অভিযু্ক্ত কর্মী। মহিলাকে তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুনঃ এবার রাজ্যেও লাম্পি ভাইরাসের হাতছানি, আক্রান্ত ২
এই ঘটনায় বেসরকারি ফাইন্যান্স কোম্পানির রিকভারি এজেন্ট ও ম্যানেজারসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে।নিয়ম অনুযায়ী ঋণের টাকা আদায় করতে ঋন গ্রহীতার বাড়ি যাওয়ার আগে স্থানীয় থানায় ঘবর দিতে হয়। সুত্রের খবর,এ ক্ষেত্রে ফাইন্যান্স কোম্পানির আধিকারিকরা ঋণের টাকা উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে স্থানীয় থানায় খবর দেয়নি।
স্থানীয় সুত্রে খবর, ফাইন্যান্স কোম্পানির রিকভারি এজেন্টরা ট্রাক্টর নিয়ে যেতে এলে ওই কৃষকের অন্তঃসত্ত্বা কন্যা ট্রাক্টরের সামনে চলে আসে। তখন তারা তাকে পিষে দিয়ে হত্যা করে। পরে তাকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই মহিন্দ্রা গোষ্ঠীর সিইও অনিশ শাহ সাফাই দিয়ে বলেন, ‘হাজারীবাগের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। আমরা তৃতীয় পক্ষের ঋণ আদায়কারী সংস্থার সঙ্গে কাজ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখব৷’
আরও পড়ুনঃ পথ দুর্ঘটনায় যখম কমপক্ষ্যে ৫০ জন চা-শ্রমিক,মৃত ১
প্রশঙ্গত, আরবিআই এক নির্দেশিকাতে জানিয়েছিল, বকেয়া টাকা আদায়ে ব্যাঙ্কের রিকভারি এজেন্টদের কোনও রকম জোরজার, দাপাদাপি চলবে না। ভয় দেখানো, নানা ভাবে হেনস্থা করা, চলবে না তা-ও। এমনকি, টাকা আদায়ের জন্য কথাবার্তা বলার সময় সীমাও বেঁধে দিয়েছিল আরবিআই। সকাল 8টে থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা অনুযায়ী, সমস্ত পরিষেবার জন্য যেমন ব্যাঙ্ক দায়ী, তেমনই রিকভারি এজেন্টদের ব্যবহারের জন্যও ব্যাঙ্ককেই দায়ী করা হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা বেসরকারী ব্যাঙ্কগুলি যে মানছে না, তা আরও একবার প্রমান করে দিল আজকের এই হাড় হিম করা নারকীয় ঘটনা ।