কৃষিজাগরন ডেস্কঃ ডিসেম্বর মাস পড়লেও শীতের দেখা নেই ফলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ক্যাপসিকাম, লঙ্কা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, আলু-সহ বিভিন্ন ধরনের আনাজ চাষীরা।শীত নেই বঙ্গে কিন্তু ঘন কুয়াশার কারনে চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
গত বছর অনাবৃষ্টির জন্য আনাজের বেশ ক্ষতি করেছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠে ধারদেনা করে অনেকে কৃষকই শীতকালীন আনাজ চাষ করেছেন। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূল না থাকার কারনে চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। চাষীদের দাবী, জাঁকিয়ে শীত না পড়ায় কপিতে পচন ধরছে। নষ্ট হচ্ছে লঙ্কা, ক্যাপসিকামও। ভাইরাসের কারণে মরে যাচ্ছে অনেক গাছ। ফসলে দাগ এসে যাচ্ছে। পাইকারি বাজারে আনাজের বিক্রি কমেছে। পরিস্থিতি এ রকম চললে মহাজনের টাকা মেটাতে পারবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুনঃ হাঁস পালন কতটা লাভজনক? জানলে চমকে যাবেন
আবহাওয়ার কারণে ফুলকপি ফুটে গিয়েছে। বাজারে নিয়ে গেলে কেউ কিনতে চাইছেন না। বাধ্য হয়ে খেত থেকে তুলে ফেলে দিতে হচ্ছে কৃষকদের। গত বছর যে মিক্সচার সারের দাম ছিল ৫০০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার টাকা। ৫০ কেজি দানা সারের বস্তার দাম ছিল ৮০০ টাকা, এখন তা দু’হাজার টাকা। ফলন ভাল না হলে মহাজনের ঋণের টাকা শোধ করা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন বহু কৃষকরা।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, কৃষি দফতর থেকে গাছের পাতা শুকিয়ে গেলে,বা দাগ দেখা দিলে ম্যানকোজ়েব ও মেটালাক্সিল (ছত্রাকনাশক) মিশ্রণ করে স্প্রে করতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি, জৈব সারের সঙ্গে এক কেজি জৈব জীবাণুনাশক লাইকোডার্মা ভ্রিডি প্রয়োগ করলে ফসলের উন্নতি হবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। এখন অনেক হাইব্রিড বীজ এসেছে বাজারে। সেগুলি যে কোনও আবহাওয়া ও প্রতিকূল পরিবেশে সঠিক ফলন দেয় বলে জানালেন তাঁরা।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় প্রায় সাত হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন আনাজের চাষ হয়। এর মধ্যে ভাঙড় ১ ব্লকে ২২৫০ হেক্টর জমিতে ও ভাঙড় ২ ব্লক এলাকায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন আনাজ চাষ হয়। বিশেষ করে ভাঙড়ের ওই দুই ব্লকের চন্দনেশ্বর, বোদরা, নারায়ণপুর, পানাপুকুর, ভুমরু, চিলেতলা, কাঁঠালিয়া, পোলেরহাট-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় আনাজ চাষ হয়। রাজ্যের আনাজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভাঙড় অন্যতম। শুধু তাই নয়, ভাঙড়ের আনাজ বিদেশেও রফতানি করা হয়।
আরও পড়ুনঃ কৃষকদের জন্য সুখবর! ঘরে বসেই নমুনা পরীক্ষা করা যাবে, বাজারে এলো সস্তার সেন্সর
শীত এখনও সেভাবে না পড়ায় শশা, বেগুন, ফুলকপি, লঙ্কা চাষে ক্ষতির মুখে পড়ছেন হিঙ্গলগঞ্জের চাষিরা। ফুল হয়েছে, ফল হচ্ছে না। সেই সঙ্গে ফুলকপির ফুল বড় হচ্ছে না। সাধারণত ১৫-৩০ দিনের মধ্যে ফুলকপি বড় হয়ে যায়, কিন্তু শীত না থাকায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও ফুলকপি বড় হচ্ছে না। ফলে কৃষকদের ফুলকপি বিক্রি করতে হচ্ছে এক টাকা কেজি দরে। লঙ্কায় সাদা পোকা লাগছে । গত ১৫ তারিখ থেকে প্রত্যেক সপ্তাহে এক কাঠা জমি পিছু আনাজ চাষে প্রায় ২০০ টাকা করে খরচ হচ্ছে সার-তেল পিছু।কৃষকদের দাবী সব ঠিক থাকলে শীতের আনাজ উৎপাদনও ভাল হত, বাড়তি খরচও হত না।
Share your comments