পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর গ্রামের গৃহবধূ লতা হালদার। কাটোয়ার একটি কৃষক পরিবারে জন্ম লতা হালদারের, তিন ভাই, বোন এর সাথে বেড়ে ওঠা লতার। কিন্তু মাধ্যমিক এর গন্ডি পেরোনোর আগেই মাত্র ১৫ বছর বয়সেই শ্যামনগর নিবাসী পেশায় লেবার কন্ট্রাক্টর অলকেশ হালদারের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় লতার। শ্বশুর বাড়িতে এসে সংসার করার সাথে সাথেই উদ্যোগী হওয়ার সুপ্ত বাসনা লতার মনে ঘুরপাক দিতো। স্বামী অলকেশ পেশার তাগিদে বেশির ভাগ সময় টাই বাইরে থাকতো, তাই স্বামীর সহযোগিতা বিশেষ একটা পাওয়া যেত না। কিন্তু লতার বাড়িতে প্রায় ১০০০ পাখির একটি পোল্ট্রি ফার্ম ছিল। স্বামী বাড়িতে থাকার সময় স্বামীর কাছ থেকে অনেকটাই পোল্ট্রি ফার্ম পরিচালনা ও পাখির পরিচর্যা শিখে নিয়েছিল। পাশাপাশি ফার্মের হিসাবনিকাশ, মহাজন দের সাথে যোগাযোগ রাখা, পাখি বিক্রি এই কাজগুলো লতা নিজেই সামলাতে। এইভাবে প্রায় মাসিক ১০০০০ /- থেকে ১২০০০/- টাকা পরিবারে আয় হতো। কিন্তু লতা সব সময় চাইতো ব্যবসা আরো বাড়ানোর।
সৌভাগ্যবশতঃ, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের একটি সচেতনতা শিবির থেকে একটি কার্ড লতা পায় এবং জানতে পারে টোল ফ্রি নাম্বার ১৮০০ ৪১৯ ৮৮০০ -এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে পশুপালন, কৃষি, আবহাওয়া, ইত্যাদি বিষয় অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিনামূল্যে পরামর্শ পাওয়া যায়। ঘটনাচক্রে, সেই সময় লতার পোল্ট্রির পাখি গুলি এক অজানা রোগে আক্রান্ত হয়, যার উপসর্গ ছিল পাখির লাল পায়খানা। কয়েকদিনের মধ্যেই তিনটি মুরগি মারাও যায়। ঘরোয়া কিছু টোটকা প্রয়োগ করেও কোনো কাজ হয় নি, তখনই লতার মনে আসে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের হেল্পলাইনের কথা। আর সময় নষ্ট না করে লতা রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের পশুপালন বিশেষজ্ঞ-এর সাথে যোগাযোগ করে এবং সমস্যার কথা জানায়। সমস্ত ঘটনা শুনে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের বিশেষজ্ঞ তাঁকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সুপারিশ করেন এবং ব্যবহার পদ্ধতি বলে দেন। কয়েক দিনের মধ্যেই লতার মুরগিগুলি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের এই পরিষেবা লতার প্রায় ১- লক্ষ টাকার বিনিয়োগ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়ে দেয়। এখন লতা যে কোনো সমস্যা হলেই হেল্পলাইনের পরিষেবার সুবিধা নেন এবং রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের সমস্ত ভার্চুয়াল ট্রেনিং -এর সক্রিয় অংশগ্রহণকারী। স্বামী ভিন রাজ্যে থাকলেও পোল্ট্রি চাষ নিয়ে লতা এখন বেশ স্বাবলম্বী কারণ তার পাশে রয়েছে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন। আজ লতা স্বপ্ন দেখে বাড়ির পাশের জলাশয়-টি ব্যবহার করে খাকি ক্যাম্বেল হাঁসের চাষ করতে। লতার কথায় "ছোট বেলার দারিদ্রের কষ্ট আজ অনেকটাই ভুলেছি, আজ আমি সফল উদ্যোগী হওয়ার ব্যাপারে অনেক আত্মবিশ্বাসী, কারণ আমার পাশে আছে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন"।
তথ্য সংগ্রাহক - প্রদীপ পান্ডা (কর্মকর্তা, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন)
Image source - Reliance foundation
Share your comments