নারী স্বাস্থ্য, মেন্সট্রুয়াল হাইজিন এই নিয়ে বহু আলোচনা, সচেতনতার বানী রোজই কানের আশেপাশে আসে। কিন্তু এর সঠিক চর্চা বা প্রয়োগ কতখানি আজকের সমাজে ফলপ্রসূ হয়েছে সেই নিয়ে যদি সর জমিনে যাচাই করা হয় তাহলে ফলে থাকবে ধোঁয়াশা। আজও নারীরা এই বিষয়ে খোলামেলা ভাবে কথা বলতে গেলে কিছুটা কুন্ঠাবোধ করেন।
প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ গোটা দেশ অনেক এগিয়ে। কিন্তু চিন্তাধারা কি এই অগ্রগতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে? আজও নারীদের ঋতুচক্রের সময় শুনতে হয় মন্দিরে যাওয়া যাবে না, এটা ছোঁয়া যাবে না। আমাদের দেশে এমন অনেক প্রত্যন্ত গ্রাম রয়েছে যেখানে মেয়েদের পিরিয়ডস হলে কাপড়ের টুকরো ব্যবহার করা হয়। স্যানিটারি ন্যাপকিন সহজলভ্য, কিন্তু তাও হয় অর্থনৈতিক সমস্যা না হলে কুসংস্কারের অন্ধকার ছায়া ঘিরে রেখেছে তাঁদের। তবে সেই বেড়াজাল ভাঙতে হবে। ন্যাপকিনের ব্যবহার কতটা জরুরি সেই পাঠ পড়াতে হবে তাঁদের। নারী স্বাস্থ্য, মেন্সট্রুয়াল হাইজিন এই বিষয়গুলি নিয়ে করতে হবে খোলামেলা আলোচনা যাতে নারীরা লজ্জাবোধ না করে।
আরও পড়ুনঃ ঐতিহাসিক মুহুর্ত!কৃষিজাগরনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস
আজ ২৮ শে মে World Menstrual Hygiene Day। তবে সচেতনতার প্রসার যেন একদিন না হয় এই প্রচার করা উচিত সারা বছর। এমনই এক সুন্দর পদক্ষেপ করেছে PRADAN। গ্রামীণ বিকাশের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই সংস্থা। দেশের প্রতিটি কোনে পৌঁছে গিয়েছে তাঁদের সাহায্যের হাত।
আরও পড়ুনঃ মাটি পরীক্ষার গুরুত্ব
প্রফেশনাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশন (PRADAN) পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার ঝালদা 1 এবং ঝালদা 2 ব্লকে 2016 সাল থেকে মহিলাদের স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন এবং পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যেই এই সংস্থা ৪০ হাজার কিশোরীদের সাহায্য করেছে। ন্যাপকিনের ব্যবহার, এই সময় পেটে ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া নেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতার পাঠ পড়াচ্ছে PRADAN।
আরও পড়ুনঃ ইন্টারনেট ডিজঅর্ডার কি? এর প্রতিরোধ ও নিরাময়
IKEA ফাউন্ডেশনের সহায়তায় PRADAN গল্প বলা, ভিডিও, গেমস, হিমোগ্লোবিন ক্যাম্পের মাধ্যমে পুরুলিয়ার এই প্রত্যন্ত গ্রামে সচেতনতার প্রসার করে। এমনকি গ্রামে হয়েছে র্যালি। এই ক্যাম্পের মাধ্যমে মেয়েরা স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং প্ল্যাকার্ড নিয়ে গোটা গ্রাম পরিদর্শন করে। আর তাঁদের স্লোগান ছিল “ আমার রক্ত শুদ্ধ, আমার গর্ব”। এখানেই শেষ নয় PRADAN Eco Femme এর সহযোগিতায় এই গ্রামের ১৩০০ মেয়ের কাছে কাপড়ের প্যাড কিট সরবরাহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিসে মোক্ষম অস্ত্র এই ফুল! খেলেই থাকবে নিয়ন্ত্রণে
জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা ২০২০-২১ অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গে ১৫-১৯ বছর বয়সের মধ্যে ৩৮.৮ শতাংশ মেয়ে এবং ২০-২৪ বছর বয়সের মধ্যে ৪৬.৫ শতাংশ মেয়ে মাসিকের সময় কাপড়ের টুকরো ব্যবহার করে। এই শতাংশের হার যেদিন শূন্যতে গিয়ে ঠেকবে সেদিনই হয়ত দেশ অগ্রগতির শীর্ষে পৌঁছাবে। এর দায় সকলের ছেলে, মেয়ে, মহিলা পুরুষ, প্রশাসন এবং দেশের কাঠামোর।
Share your comments