হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রথমবারের মতো সুইট লেডি পেঁপে চাষ করা হয়েছে। উপজেলার মধ্যে প্রথমবার সুইট লেডি পেঁপে চাষ করে বাজিমাত করে সবার নজর কেড়েছেন কৃষক মিল্লাদ তালুকদার। তাকে দেখে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে এই জাতের পেঁপে চাষে |
তিনি ছিলেন মুদি দোকানদার। ব্যবসায় লোকসান করে পুঁজি হারিয়ে যখন বেকার হয়ে পড়েছিলেন তখন অনেকটা শখের বসেই তিনি কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। আর তাতেই সাফল্য পেয়ে যান।
ব্যবসায়ী থেকে হয়ে যান সফল চাষি। মিল্লাদ সুইট লেডি জাতের পেঁপের (Sweet Lady Papaya cultivation) চারা রংপুর থেকে সংগ্রহ করে নিজের পৈত্রিক ৩৬ শতক জমিতে ৩ শতাধিক চারা রোপণ করেন।
কিভাবে করলেন এই চাষ (Farming Process):
চারা রোপণের প্রায় ৩ মাসের মধ্যেই প্রতিটি গাছে গড়ে ২৫ থেকে ৩০টি করে পেঁপে ধরেছে। একেকটা পেঁপে ৫০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের হয়েছে। নতুন নামের এই সুইট লেডি জাতের পেঁপে চাষ করে এলাকায় সবার দৃষ্টি কেড়েছেন মিল্লাদ। প্রতিদিন লোকজন আসছেন পেপে বাগান দেখতে। অনেকেই এখন পেঁপে চাষ করার পরিকল্পনার করছেন।
আরও পড়ুন -Organic Fertilizer: জৈব সারে ফসল চাষে বাজিমাত বালুরঘাটে কৃষকদের
কি বলছেন তিনি?
এ ব্যাপারে আব্দুল গাফফার তালুকদার মিল্লাদ বলেন তার পেঁপে বাগান করার জন্য বহু দিনের শখ ছিল। কিন্তু ব্যবসার কারণে এতোদিন বাগান করতে পারেনি। ব্যবসায় লোকসান হওয়ার পরে তার বড় ভাই মাহমুদ কাদির তালুকদার বাচ্চু, মাসুদ তালুকদার ও আব্দুল জব্বার তালুকদার মুরাদের সহযোগীতায় পেঁপে চাষ শুরু করেন। আর প্রথমবারেই তিনি ব্যাপক সফলতা পেয়ে যান।
খরচ ও লাভের পরিমান (Profit and cost):
তিনি বলেন, যে কেউ পেঁপের চাষ করে বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি স্বাবলম্বীও হতে পারবে। জমি তৈরি, চারা, সার, বালাইনাশক, রোপণ, আগাছা পরিষ্কার ও শ্রমিকের টাকাসহ প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এখনই গাছ থেকে সপ্তাহে ২ থেকে ৩বার পেঁপে সংগ্রহ করা যাচ্ছে। কাঁচা পেঁপে পাইকারি মূল্যে কেজি ৩৫ টাকা করে বিক্রি করছেন। এক বছরে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে। বাগান করার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার টাকার কাঁচা পেঁপে বিক্রি হয়েছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে দেড় বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া গেলে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
তার পেঁপে বাগান দেখতে আসা সৈয়দ আরিফ আহমেদ বলেন পরিশ্রম ও লক্ষ্য অটুট থাকলে কৃষিকাজে সফল হওয়া সম্ভব। তার বাগান দেখে এলাকার অনেকেই এখন উৎসাহ পাচ্ছেন পেঁপে চাষ করার। এলাকার বহু বেকার যুবক এবং কৃষকরাও সুইট লেডি পেঁপে চাষ শুরু করতে চাইছেন | উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, সুইট লেডি পেঁপে জাতটি নতুন। এতে যেমন পোকার আক্রমণ হয় না তেমনি ফলন ও হয় বেশি। তাই বেকার যুবকরা এই পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবে সহজেই। এ জাতের পেঁপে চাষ করে সহজেই লাখপতি হওয়া সম্ভব। কৃষি অধিদফতরের সহযোগীতা ও পরামর্শে যে কেউ পেঁপে চাষ করে বেকারত্ব ঘুচিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারে।
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
Share your comments