অন্ধ্র উপকূলের দিকে ক্রমশ এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। অন্ধ্রপ্রদেশে লাল সতর্কতা। এদিকে ওড়িশা উপকুলেও শুরু হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের চোখ রাঙানি। গঞ্জামে সমুদ্রে নৌকাডুবি। সমুদ্র শুরু করেছে তার উদ্দাম খেলা। দিঘাতেও সকাল থেকে গর্জে উঠছে সমুদ্রতল। বকখালিতেও উত্তাল সমুদ্র। সমুদ্রের ধারে কাছেও যেতে নিষেধ করছে প্রশাসন। বার বার মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে দিঘা বাসী এবং পর্যটকদের। হাওয়া অফিসের সুত্রের খবর টানা তিনদিন বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হবে ভারী বৃষ্টিপাত। তবে বাংলায় সেইভাবে প্রভাব পড়বে না অশনির।
তবে একটা ঘূর্ণিঝড়ের ছায়া কাটতে না কাটতেই আরও একটি ঘূর্ণিঝড়ের দীর্ঘশ্বাস পড়ছে বঙ্গের ওপর। অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, বঙ্গের বিভিন্ন রাজ্যে রয়েছে আরও একটি ঘূর্ণিঝড়ের অ্যালার্ট। অশনি অবশ্য খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি না করলেও দেশের ওপর আরও এক সাইক্লোনের কালো ছায়া। ভারত মহাসাগরে তৈরি হয়েছে সাইক্লোন করিম।যা ভারতের স্থলভূমিতে আঘাত করবে এমন আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
আরও পড়ুনঃ শক্তি বাড়ছে অশনির! ধেয়ে আসছে উপকূলে, টানা ভারী বৃষ্টিপাত এই ৬ জেলায়
সোজা কথায় ভারতের উপকূলভাগের জন্য জোড়া থ্রেট তৈরি হয়েছে। যাতে উপকূলের বেশ কয়েকটি রাজ্যকে অ্যালার্টে রাখা হয়েছে। সাইক্লোন করিম এই সপ্তাহান্তে আরও বড় আকার ধারণ করবে। ভারত মহাসাগরে তৈরি হওয়া এই হ্যারিকেনের হাওয়ার গতি হবে ১১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
অন্যদিকে ল্যান্ডফলে এর গতি হবে ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। এই সাইক্লোন থেকে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভবনা প্রবল।কারণ অত্যন্ত জোরালো গতিতে ল্যান্ডফল হবে এই সাইক্লোনেরতবে এখনও আবহাওয়া সংস্থাগুলি সাইক্লোন করিম কতটা ভয়াবহ হতে চলেছে তার সঠিক পূর্বানুমান করতে পারেনি।
আজ সকাল থেকেই অশনির অশনি সংকেত দেখা গেছে সুন্দরবন, কাকদ্বীপ, বসিরহাট, হাওড়া, ব্যারাকপুর ইত্যাদি জায়গায় সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। আজ সারাদিন কলকাতার আকাশ থাকবে মেঘলা। মঙ্গলবার থেকে শুরু করে শুক্রবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এদিকে সকাল থেকেই ওড়িশার পারাদ্বীপ উপকূল অশান্ত। গর্জে উঠছে সমুদ্র উপকূল। আগামী ১৩ তারিখ পর্যন্ত সমুদ্রের আশেপাশেও যেতে বারণ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সেইভাবে পড়বে না বঙ্গে। কিন্তু ভারী বৃষ্টিপাতের দাপট চলবে বেশ কিছু জেলায়। দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, নদিয়া এই ৬ জেলায় মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত হবে ভারী বৃষ্টিপাত।
আরও পড়ুনঃ একে অশনি! দোসর যমজ ঘূর্ণিঝড়, বঙ্গের ওপর চলবে যমজ ঘূর্ণিঝড়ের দাপট
বিজ্ঞানীদের ব্যাখা অনুযায়ী এই জোড়া ঘূর্ণিঝড় তৈরির অন্যতম কারণ হল পশ্চিমী বাতাসের বিস্ফোরণ। কিছুদিন ধরে ভারত মহাসাগরে পশ্চিমী বাতাসের প্রবাহ এতটাই বেশি যে তৈরি হয়েছে জোড়া ঘূর্ণিঝড়। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের প্রবাহ হবে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং ভারত মহাসাগরে এই বায়ু প্রবাহ বইবে ঘড়ির কাঁটার দিকেই। আপাতত দুই মহাসাগরে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ। যার মধ্যে যে নিম্নচাপ বেশি পশ্চিমী বাতাস টানবে সেটি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
Share your comments