চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। বঙ্গের ওপর আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। ইতিমধ্যেই হাওয়া অফিস থেকে বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকায় দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকা। মৎস্যজীবীদের উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এবার একটা নয় তাণ্ডব করবে যমজ ঘূর্ণিঝড়। এবার বঙ্গবাসী দুই ঘূর্ণিঝড়ের দাপট দেখবে একসঙ্গে। হাওয়া অফিসের মতে এবার আশঙ্কা জোড়া ঘূর্ণিঝড়ের। একই সময় এই দুই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে বাংলা এবং ওড়িশায়। ইতিমধ্যেই ওড়িশায় ১৮ টি জেলায় দেওয়া হয়েছে সতর্কতা।
কি এই জোড়া ঘূর্ণিঝড়?
আবহবিদদের ভাষায় এটি টুইন সাইক্লোন। দুটি ঘূর্ণিঝড়ের একটি তৈরি হবে বঙ্গোপসাগরে অপরটি তৈরি হবে ভারত মহাসাগরে। কতটা শক্তিশালী হতে পারে এই ঘূর্ণিঝড় তা নির্ভর করছে একে অপরের ওপর। নিরক্ষরেখার উত্তরে রয়েছে অশনি ঘূর্ণিঝড় এবং দক্ষিণে আরও একটি। দুই গোলার্ধে দুটি ঘূর্ণিঝড় বিরাজ করছে। ইতিমধ্যেই আন্দামানে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ। সেখান থেকেই তৈরি হবে ঘূর্ণিঝড়। আবার ভারত মহাসাগরেও নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হবে।
আরও পড়ুনঃ ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা বঙ্গে, শনিবার পর্যন্ত বৃষ্টির দাপট রাজ্যের এই জেলাগুলিতে
বিজ্ঞানীদের ব্যাখা অনুযায়ী এই জোড়া ঘূর্ণিঝড় তৈরির অন্যতম কারণ হল পশ্চিমী বাতাসের বিস্ফোরণ। কিছুদিন ধরে ভারত মহাসাগরে পশ্চিমী বাতাসের প্রবাহ এতটাই বেশি যে তৈরি হয়েছে জোড়া ঘূর্ণিঝড়। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের প্রবাহ হবে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং ভারত মহাসাগরে এই বায়ু প্রবাহ বইবে ঘড়ির কাঁটার দিকেই। আপাতত দুই মহাসাগরে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ। যার মধ্যে যে নিম্নচাপ বেশি পশ্চিমী বাতাস টানবে সেটি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
তবে এই জোড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এই প্রথমবার নয়। এটি ইতিহাসের প্রত্যাবর্তন। ২০১৯ সালে যখন ফনির তাণ্ডব চলে ঠিক তখনই একইসঙ্গে সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড় লরনা। তবে বেশি শক্তিশালী হতে পারেনি এই ঘূর্ণিঝড়। প্রবল দাপট চালিয়েছিল ফনি। তবে এবারের যে ঘূর্ণিঝড় অশনি আসতে চলেছে সেটি এতটা শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।
আরও পড়ুনঃ একদিকে বৃষ্টি নিয়ে এল স্বস্তির বার্তা, অন্যদিকে বৃষ্টি চিন্তা বাড়াচ্ছে ধানচাষিদের
তবে হাওয়া অফিস এখনও জানাতে পারেনি কোথায় আছড়ে পড়বে এই যমজ ঘূর্ণিঝড়। আগামী ১০ই মে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা উপকূলে পৌঁছাবে অশনি। এখান থেকে অশনি উত্তরপূর্বে দিক পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে এগোনর সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিক থেকে এই ঘূর্ণিঝড় সুন্দরবন ছুয়ে বাংলাদেশের দিকে যাবে বলেই মনে করছে হাওয়া অফিস।
IMD-এর মতে, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, কর্ণাটক, বিহার, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, ছত্তিশগড় ইত্যাদিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। এর পাশাপাশি, কটক এবং ভুবনেশ্বরে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে, যার কারণে আবহাওয়া দফতর মানুষকে নিরাপদে থাকতে সতর্ক করেছে। আজ, মুম্বাই শহর মেঘলা থাকবে এবং যদি আমরা তাপমাত্রার কথা বলি, তাহলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 26 ডিগ্রি পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 35 ডিগ্রি পর্যন্ত থাকতে পারে।
সিমলায় বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে
যেখানে উত্তর ভারতে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। একইসঙ্গে হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলায় ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত মানুষ। সূত্রের খবর, সিমলার বহু গ্রামের বাড়িতে বৃষ্টির জল ঢুকছে। ঘরবাড়িতে জল এতটাই ঢুকেছে যে দেওয়াল পর্যন্ত ফাটল ধরেছে। বৃষ্টির কারণে যাদের ঘরে কচ্ছা ছিল তাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হিমাচলের অনেক শহরে বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।