শীত মৌসুমে যে ফসলগুলি বপন করা হয় তাদের রবি ফসল বা ভারতে শীতকালীন ফসল বলা হয়। এই ফসলের জন্য শীতল আবহাওয়া প্রয়োজন। এই ফসলের বপনের সময় অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে হয় এবং ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফসল তোলা (Crop Cultivation) হয়। এই ফসলের জন্য কম তাপমাত্রা এবং কম জল প্রয়োজন।
সর্বশেষ প্রকারের ফসল হচ্ছে যায়েদ ফসল এবং এই ফসলগুলি ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসে বপন করা হয় এবং এপ্রিল থেকে মে মাসে ফসল সংগ্রহ করা হয়। এই ফসলের খরা (Drought) সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে।
কৃষকদের চাষে সুবিধা ও লাভের জন্য একটি ক্যালেন্ডার শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে -
বৈশাখ (মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য মে) -
লালশাক, গিমাকলমি, ডাঁটা, পাটশাক, বেগুন, মরিচ, আদা, হলুদ, ঢেঁড়স বীজ বপন ও গ্রীষ্মকালীন টম্যাটোর চারা রোপণ। মিষ্টি কুমড়া, করলা, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, শসার মাচা তৈরি, চারা উৎপাদন, কুমড়া জাতীয় সবজির পোকামাকড় দমন, সেচ প্রদান। খরিফ-১ সবজির বীজ বপন, চারা রোপণ। ডাঁটা, পুঁইশাক, লালশাক, বরবটি ফসল সংগ্রহ। খরিফ-২ সবজির বেড প্রস্তুত ও চারা তৈরি।
ফল চাষের স্থান নির্বাচন, উন্নতজাতের ফলের চারা/কলম সংগ্রহ, পুরানো ফলগাছে সুষম সার প্রয়োগ, সেচ প্রদান।
মাঘ (মধ্য জানুয়ারি থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারি) -
আলু, পেঁয়াজ, রসুন-এর গোড়ায় মাটি তুলে দেয়া, সেচ, সার প্রয়োগ, টম্যাটোর ডাল ও ফল ছাঁটা, মধ্যম ও নাবী রবি সবজির সেচ, সার, গোড়া বাঁধা, মাচা দেয়া এবং আগাম খরিফ-১ সবজির বীজতলা তৈরি বা বীজ বপন।
বীজতলায় চারা উৎপাদনে বেশি সচেতন হতে হবে। কেননা সুস্থ-সবল রোগমুক্ত চারা রোপণ করতে পারলে পরবর্তীতে অনায়াসে ভাল ফসল/ফলন আশা করা যায়। ফল গাছের পোকামাকড়, রোগাবালাই দমন ও অন্যান্য পরিচর্যা।
ফাল্গুন (মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ) -
নাবী খরিফ-১ সবজির বীজতলা তৈরি, মাদা তৈরি, বীজ বপন, ঢেঁড়স, ডাঁটা লালশাক এর বীজ বপন। আগাম খরিফ-১ সবজির চারা উৎপাদন ও মূল জমি তৈরি, সার প্রয়োগ ও রোপণ। আলু, মিষ্টি আলু সংগ্রহ, রবি সবজির বীজ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বাগানের অন্যান্য ফসলের পরিচর্যা।
চৈত্র (মধ্য মার্চ থেকে মধ্য এপ্রিল) -
গ্রীষ্মকালীন বেগুন, টম্যাটো, মরিচ- এর বীজ বপন/চারা রোপণ। নাবী জাতের বীজতলা তৈরি ও বীজ বপন। যে সব সবজির চারা তৈরি হয়েছে সেগুলো মূল জমিতে রোপণ। সবজি ক্ষেতের আগাছা দমন, সেচ ও সার প্রয়োগ, কুমড়া জাতীয় সবজির পোকামাকড় ও রোগ বালাই দমন। নাবী রবি সবজি উঠানো, বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ। মাটিতে রসের ঘাটতি হলে ফলের গুটি/কড়া ঝরে যায়। তাই প্রয়োজনীয় সেচ প্রদান, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন জরুরি।
আরও পড়ুন - সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে জিনিয়া ফুলের চাষ (Zinnia Flower Cultivation)
Share your comments