ভুট্টা চাষে ফল আর্মি ওয়ার্মের আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে চাষিদের সতর্ক থাকতে হবে

নদীয়া জেলায় এই ফল আর্মি ওয়ার্ম বা স্পেডোপটেরা ফ্রুজিপারডার দেখা গিয়েছে। এই পোকাটি সর্বভুক ও বিভিন্ন প্রচলিত কীটনাশকের বিরুদ্ধে সহনশীল ফলত: পোকাটির বিস্তার রোধে বিশেষ সচেষ্ট হওয়া জরুরি

KJ Staff
KJ Staff
ভুট্টা গাছে ফল আর্মিওয়ার্মের আক্রমণ

পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ২ লক্ষ্য হেক্টর জমিতে ভুট্টাচাষ হয়। অন্যান্য ফসলের মত ভুট্টাতেও রোগ পোকার আক্রমণের কারণে প্রায় ১০-১৫% ফসলের ক্ষতি হয়ে থাকে। এদের মধ্যে উল্লেখ্য হেলিকোভার্পা আর্মিজেরা ও স্পেডোপটেরা লিটুরা। তবে ইদানিংকালে স্পেডোপটেরা গোত্রের অন্য একটি বিদেশী ল্যাদার আক্রমণ বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা গিয়েছে যার নাম ফল আর্মি ওয়ার্ম বা স্পেডোপটেরা ফ্রুজিপারডা। আগে এই পোকার আক্রমণ আমাদের দেশে দেখা যায় নি। তবে ২০১৮ সালের মে মাস নাগাদ এই পোকার আক্রমণ সর্বপ্রথম কর্ণাটক রাজ্যে পরিলক্ষিত হয়। পরবর্তীকালে দেশের সমস্ত রাজ্যগুলিতে এই ল্যাদা পোকার জন্য সতর্কতা জারী করা হয় কৃষি মন্ত্রক থেকে। আমাদের রাজ্যে নদীয়া জেলায় এই ফল আর্মি ওয়ার্ম বা স্পেডোপটেরা ফ্রুজিপারডার দেখা গিয়েছে। এই পোকাটি সর্বভুক ও বিভিন্ন প্রচলিত কীটনাশকের বিরুদ্ধে সহনশীল ফলত: পোকাটির বিস্তার রোধে বিশেষ সচেষ্ট হওয়া জরুরি।

এই স্পেডোপটেরা ফ্রুজিপারডা পোকাটি তামাকের কিড়ার সমগোত্রের তাই বাহ্যিক গঠনে বিশেষ পার্থক্য নেই; তবে শূককীটের মাথায় উল্টো ইংরেজি “Y” অক্ষরের মত দাগ থাকে এবং শেষের দিকে বর্গাকারে ৪টি কালো বিন্দু সজ্জিত থাকে। মথের সামনের ডানায় আবছা কালো লাইন যুক্ত কিডনির মত সাদা দাগ থাকে, ডগার দিকের কালো দাগগুলি একটু আবছা ধরনের ও সরু হয়। ডানার রঙ ধূসর বাদামী। আক্রমণের প্রকৃতি হল কচি পাতা চিবিয়ে খেয়ে ফেলা। সাধারণত কান্ড ও পাতার সংযোগস্থলে লুকিয়ে থাকে। পাতায় ছিদ্র ও মলের উপস্থিতি দেখে আক্রমণকে চেনা যায়। পোকাটি সর্বাধিক ৫% ক্ষতি করতে পারে ২১ দিন পর্যন্ত ও ১০% ক্ষতি করতে পারে চারা বের হবার ৪০ দিন পর্যন্ত।

স্পোডোপটেরা ফ্রুজিপারডা বা ফল আর্মিওয়ার্মের পূর্ণাঙ্গ মত

নিয়ন্ত্রনবিধির শুরুতেই তীক্ষ্ণ নজরদারি ও মাঠ পরিদর্শন বিশেষ জরুরি। স্পেডোপটেরা ফ্রুজিপারডা ফেরোমোন ফাঁদ বিঘাতে একটি করে বসিয়ে উপযুক্ত নিরীক্ষণের মাধ্যমে পোকার চিহ্নিতকরণ বিশেষ প্রয়োজনীয়। আক্রমণ ঠেকাতে বিঘা প্রতি ৪ টি পাখি বসার জায়গা ব্যবস্থা করতে হবে। আক্রমণ চিহ্নিত হলে সূর্যাস্তের সময় শূককীটদের ধরে নষ্ট করে ফেলতে হবে। নিউক্লিয়ার পলিহেড্রসিস ভাইরাস প্রথমে জমিতে স্প্রে করে তারাপর ল্যাদা সংগ্রহ করে জলের সাথে মিশিয়ে স্প্রে করলে জৈবিক পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এছাড়া মেটারাইজিয়াম অ্যানিসোপ্লি বা বিউভোরিয়া ব্যসিয়ানো স্প্রে কার্যকরী।

ভুট্টা গাছে ফল আর্মি ওয়ার্মের আক্রমণ

আক্রমণের মাত্রা অর্থনৈতিক ক্ষতির চৌকাঠ যাতে না পেরোতে পারে সেহেতু রাসায়নিক কীটনাশক স্প্রে করা বিশেষ প্রয়োজনীয়। থায়োডিকার্ব ৭৫ WP ১ গ্রাম বা নোভালিউরন ৫.২৫ + ইমামেক্টিন বেঞ্জয়েট ০.৯ SC ২.২ মিলি বা পাইরিডালিল ১০ EC ০.২ মিলি প্রতি লিটার জলের সাথে মিশিয়ে সন্ধ্যে বেলা সজপ্রে করতে হবে।

তথ্যসূত্র : ড: অভিজিত ঘোষাল, রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, কোলকাতা – ৭০০১৫০

রুনা নাথ(runa@krishijagran.com)

Published On: 23 April 2019, 12:09 PM English Summary: attack-of-fall-army-worm-in-maize-cultivation

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters