শৈত্যপ্রবাহের ফলে উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে অনেকাংশে। শৈত্যপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ধানের এই সংকট কাটাতে নয়া প্রযুক্তি গ্রহণ কৃষি দপ্তরের। অত্যধিক শীতে অনেক বীজে অঙ্কুরোদগম হয়নি। পরিস্থিতির সামাল দিতে কৃষি দপ্তর ‘সিড জার্মিনেটর’ প্রযুক্তি অবলম্বন করছে। শুরু হয়েছে সুধা পদ্ধতিতে মাত্র ৩০ ঘণ্টায় অঙ্কুরোদগমের কাজ। বুধবার ধানের বীজতলা প্রদর্শন করেন কৃষি অধিকর্তা প্রণবজ্যোতি পণ্ডিত এবং জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি মহকুমার কৃষি আধিকারিক মেহফুজ আহমেদ।
কৃষি অধিকর্তারা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে সুধা পদ্ধতিতে বোরো ধানের চারা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ফার্মার্স ক্লাবকে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে অনেক কম খরচে উন্নতমানের ধানের চারা তৈরি করা সম্ভব, ফলে উৎপাদন অন্তত কুড়ি শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি শীতের থাবা থেকেও মিলবে রক্ষা। জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি মহকুমার কৃষি আধিকারিক মেহফুজ আহমেদ জানান, “প্রবল শীতের কারণে এবার ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে, চারার গোড়া ও পাতা পচে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই কারণেই মূলত নতুন প্রযুক্তিতে চারা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” কৃষি আধিকারিকদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জলপাইগুড়ি জেলা ও শিলিগুড়ি মহকুমায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ চলছে।

‘সিড জার্মিনেটর’ প্রযুক্তি কি? বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি আধারে ঠাণ্ডা ও গরম জলের উপরিভাগে ট্রের উপর ভেজা কাপড়ে বীজ বিছিয়ে রাখা হয়। সিক্ত সেই বীজ থেকে মাত্র ৩০ ঘণ্টায় চারার অঙ্কুরোদগম ঘটে। কৃষকরা থার্মোকলের বাক্স দিয়ে নিজেরাই জার্মিনেটর বক্স তৈরি করে নিতে পারবেন। খরচ পড়বে মাত্র পাঁচশো টাকার মতো। সেখানে অন্তত চার কেজি ধান বীজের তাঁরা অঙ্কুরোদগম ঘটাতে পারবেন। এরপর নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে সেগুলো জমিতে বপন করলেই সমস্যার সমাধান হবে।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments