২০২০-২১ বর্ষের বাজেটে কি কৃষকদের আদৌ কোন উন্নতি হল? কৃষক সমস্যার সমাধানে দ্বিতীয় মোদি সরকার কি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন চলতি অর্থবর্ষে? অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছেন, কৃষি, সেচ এবং গ্রামোন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে মোদি সরকার। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ক্ষেত্রে পরিকাঠামো খাতে উন্নয়নের লক্ষ্যে ২.৮৩ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের জন্য ১৬টি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলি কার্যকর করার জন্য রাজ্য সরকারের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, “ইতিমধ্যেই ৬.১১ কোটি কৃষক ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’-র আওতায় এসেছেন। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ বিকাশ নিধি’-তে সরাসরি কৃষকদের হাতে বরাদ্দ অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’-র মাধ্যমে কৃষকদের পরিবহণ ব্যবস্থার সুবিধাও দেওয়া হয়েছে।”
অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, “খরা প্রবণ অঞ্চলগুলিতে (১০০টি খরাপ্রবণ জেলায়) খরা রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। ‘প্রধানমন্ত্রী কুসুম কিষাণ যোজনা’-য় ২০ লক্ষ কৃষককে সোলার পাম্প দেওয়া হবে। ১৫ লক্ষ কৃষককে সোলার পাওয়ার জেনারেশন ইউনিট বসাতে সহায়তা করা হবে। জৈব সার কেনার ক্ষেত্রে কৃষকদের অতিরিক্ত ইনসেনটিভ দেওয়া হবে।” এর ফলে রাসায়নিক সারের ব্যবহার অনেকটাই হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, “বীজ সংরক্ষণের জন্য জেলায় জেলায় আধুনিক ওয়্যার হাউস তৈরি হতে চলেছে। গ্রামের কৃষকদের বীজ কিনতে সাহায্য করবে ‘স্বর্ণ জয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা’-র আওতায় থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। নাবার্ডের মাধ্যমে এবং মুদ্রা যোজনার আওতায় কৃষকদের ঋণ প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যেই ‘দীনদয়াল অন্ত্যদায় যোজনা’-র ৫৮ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।”
এই প্রথম ভারতীয় রেলের তরফে কৃষকদের জন্য কিষাণ রেল তৈরীর উদ্যোগ সরকারের। এটি পিপিপি মডেলে অর্থাৎ, কেন্দ্র-রাজ্য এবং তৃতীয় সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরী হবে। মূলত পচনশীল খাদ্য পরিবহণে কাজ করবে এই রেল। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, কৃষিজাত পণ্যের পরিবহণের উপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে এবারের বাজেটে। যা কৃষকদের ফসল এবং বীজ পরিবহণে সাহায্য করবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পণ্য পরিবহণের জন্য ‘কৃষি উড়ান’ প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে। যাতে আকাশপথেও কৃষি পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সহজতর হয়। এতে বিশেষভাবে উপকৃত হবে উত্তরপূর্ব ভারত এবং আদিবাসী অধ্যূষিত জেলাগুলি। এছাড়া কৃষি, সেচ এবং গ্রামোন্নয়নের উদ্দেশ্যে ২.৮৩ লক্ষ (১.৬ লক্ষ কোটি টাকা কৃষি ও কৃষিজাত উন্নয়ন এবং অবশিষ্টাংশ পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নে) কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments