গিনি ঘাস বহুবর্ষজীবী সবুজ পশুখাদ্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান । এটি খুব দ্রুত বর্ধনশীল এবং প্রাণীদের জন্য একটি সুস্বাদু ঘাস । গিনি ঘাসের উৎস গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপ-গ্রীষ্মমন্ডলীয় আফ্রিকা।বর্তমানে, গিনি ঘাস পৃথিবীর সমস্ত গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপ-গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে জন্মে । ভারতে, কর্ণাটক, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু ,কেরালা ,মহারাষ্ট্র , গুজরাট ইত্যাদির মতো দক্ষিণ রাজ্যে এর চাষ করা হয়।
জলবায়ু
গরম ও আর্দ্র পরিবেশে গিনি ঘাস ভালো ফলন দেয় । মেঘলা আবহাওয়ায়, হালকা বৃষ্টি হলে গিনি ঘাসের বৃদ্ধি দ্রুত হয় । এই ঘাস উৎপাদনের জন্য সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সবচেয়ে ভালো । চারণভূমিতে এই ঘাস রোপণের জন্য, বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৬০০-১০০০ মিমি হওয়া উচিত ।
জমি প্রস্তুতি
গিনি ঘাস সব ধরনের জমিতে সঠিক নিষ্কাশনের ব্য়বস্থা থাকলেই চাষ করা যায় । তবে এঁটেল এবং দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো ।
আরও পড়ুনঃ এই ঔষধি গাছটি চাষ করে কম খরচে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন
বপনের সময়
জুন থেকে জুলাই মাস গিনি ঘাস চাষ করার জন্য় সবথেকে ভাল সময়। বীজ বপনের এক মাস আগে, বীজগুলি নার্সারিতে রোপণ করা হয় এবং বৃষ্টি হলে জমিতে রোপণ করা হয় ।
সার
গিনি ঘাসের ক্ষেত্রে ২২০ থেকে ২২৫ কুইন্টাল পচা সার, ১০০ নাইট্রোজেন । ফসফরাস ৪০ গ্রাম এবং পটাশের ৪০ গ্রাম প্রতি হেক্টরে ভালো ফলন পাওয়া যায় । বীজ বপনের ১০-১৫ দিন আগে এবং বপনের সময় জমিতে গোবর সার সঠিকভাবে মেশান । বপনের ১৫ দিন পর অর্ধেক নাইট্রোজেন স্প্রে করতে হবে এবং অবশিষ্ট পরিমাণ শীতের শেষে ( মার্চ ) স্প্রে করতে হবে ।যদি সম্ভব হয়, পুরো পরিমাণ নাইট্রোজেনকে ৩-৪টি সমান ভাগে ভাগ করুন এবং প্রতিটি ফসল কাটার পর জমিতে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে থাকুন যাতে গিনি ঘাসের সবুজ ঘাস দ্রুত এবং অবিচ্ছিন্নভাবে পাওয়া যায় ।
সেচ
প্রথম সেচ বীজ বপন করার পরপরই দিতে হবে এবং দ্বিতীয় সেচ ৭-৮ দিনের ব্যবধানে দিতে হবে । এই সময়ের মধ্যে শিকড়গুলি ভালভাবে শক্ত হবে এবং বৃদ্ধি ঘটতে শুরু করবে । পরবর্তীতে আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে সেচ দিতে হবে ।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন কালো আখের গুন সম্পর্কে,কৃষকরা কালো আখ চাষ করে ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারবেন,রইল বিস্তারিত
ফলন
সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে, বৃষ্টিনির্ভর এলাকায় ৫-৬টি কাটিংয়ে ৫০০-৬০০ কুইন্টাল এবং সেচযুক্ত এলাকায় ১০-১২টি সেচের মাধ্যমে প্রতি হেক্টরে ১০০০-১৫০০ কুইন্টাল সবুজ চারণ পাওয়া যেতে পারে । দক্ষিণ ভারতে, এক বছরে গিনি ঘাস থেকে হেক্টর প্রতি ২০০০ কুইন্টাল সবুজ ঘাস পাওয়া যায় ।
Share your comments