Paddy Disease Management - ধানের রোগবালাই সনাক্তকরণ ও তার ব্যবস্থাপনা

বর্ষাকাল মানেই খরিফ মরসুম আর এই মরসুমে কৃষকরা অধিক ফলনের লক্ষ্যে (Paddy high yield) আধুনিক জাতের ধান বপনে মন দিয়েছেন। তবে উন্নত ফলনের জন্য দরকার পরিচর্যা। স্থানীয় জাতের তুলনায় এসব আধুনিক জাতের ধানে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ (Disease & Pest management) বেশি হয়ে থাকে। বিভিন্ন রোগের কারণে ধানের ফলন প্রায় ১০-১৫ শতাংশ কমে যায়।

স্বপ্নম সেন
স্বপ্নম সেন
Paddy disease management
Paddy disease (Image Credit - Google)

চলছে খরিফ মরসুম (Kharif season) আর এই মরসুমে প্রায় ৭০ শতাংশ আধুনিক জাতের ধান চাষ হয়। স্থানীয় জাতের তুলনায় এসব আধুনিক জাতের ধানে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। বিভিন্ন রোগের কারণে ধানের ফলন প্রায় ১০-১৫ শতাংশ কমে যায়। সাধারণত ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, কৃমি ইত্যাদি রোগ জীবাণুর আক্রমণে ফসলের রোগ হয়ে থাকে। ধানের বিভিন্ন রোগের মধ্যে খোলাপোড়া, ধানের কান্ড পচা রোগ, ঝলসা রোগ, ব্লাস্ট রোগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

ধানের ব্লাস্ট রোগ – এর লক্ষণ (Symptoms of rice blast disease) –

ধান গাছের ৩টি অংশে রোগটি আক্রমণ করে থাকে।
গাছের আক্রান্ত অংশের ওপর ভিত্তি করে এ রোগ তিনটি নামে পরিচিত যেমন ১) পাতা ব্লাস্ট, ২) গিট ব্লাস্ট এবং ৩) নেক/শীষ ব্লাস্ট।

১) পাতাব্লাস্ট-

পাতায় প্রথমে ডিম্বাকৃতির ছোট ছোট ধূসর বা সাদা বর্ণের দাগ দেখা যায়। দাগগুলোর চারদিক গাঢ় বাদামি বর্ণের হয়ে থাকে এবং মাঝে সাদা থেকে ধূসর বর্ণের দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে এ দাগ ধীরে ধীরে বড় হয়ে আকৃতি চোখের বা স্পিন্ডল বা উপবৃত্তাকার ধারণ করে। অনেক দাগ একত্রে মিশে পুরো পাতাটাই মেরে ফেলতে পারে। এ রোগে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হলে জমি মাঝে মাঝে পুড়ে যাওয়ার মতো মনে হয়। অনেক ক্ষেত্রে খোল ও পাতার সংযোগস্থলে কাল দাগের সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তীতে পচে যায় এবং পাতা ভেঙে পড়ে ফলন বিনষ্ট হয়।

২) গিট ব্লাস্ট বা নোড ব্লাস্ট -

গাছের থোড় বের হওয়ার পর থেকে এ রোগ দেখা যায়। গিটে কালো রঙের দাগ সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে এ দাগ বেড়ে গিট পচে যায়, ফলে ধান গাছটি গিট বরাবর ভেঙে পড়ে।

৩) নেক বা শীষ ব্লাস্ট -

এ রোগ হলে শীষের গোড়া অথবা শীষের শাখা প্রশাখার গোড়ায় কাল দাগ হয়ে পচে যায়। শীষ অথবা শীষের শাখা প্রশাখা ভেঙে পড়ে। ধান চিটা হয়।

রোগের প্রতিকার (Disease management) –

  • রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করতে হবে।

  • মাটিতে জৈব সার সহ সুষম মাত্রায় সব ধরনের সার ব্যবহার করতে হবে।

  • রোগের আক্রমণ হলে জমিতে ইউরিয়া সারের উপপ্রয়োগবন্ধ রাখতে হবে।

  • রোগের শুরুতে বিঘাপ্রতি ৫ কেজি পটাশ সার উপরিপ্রয়োগ প্রয়োগ করতে হবে।

  • ট্রাইসাক্লাজল প্রতি লিটার জলে ১ ঘাম হারে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

ধানের খোলা পচা রোগের লক্ষণ (Symptoms of rot disease in paddy) -

ধানে থোড় আসার সময় এ রোগের আক্রমণ দেখা যায়। প্রথমে শেষ পাতার/ শীষ আবতকারী পাতার/ডিগ পাতার খোলের ওপর গোলাকার বা অনিয়মিত বা এবেড়ো খেবেড়ো লম্বা লম্বা দাগ দেখা যায়। দাগের কেন্দ্র ধূসর ও কিনারা বাদামি রঙ বা ধূসর বাদামি হয়। দাগগুলো একত্রে বড় হয়ে সম্পূর্ণ খোলেই ছড়াতে পারে। থোড়ের মুখ বা শীষ পচে যায় এবং গুঁড়া ছত্রাংশ খোলের ভেতর প্রচুর দেখা যায়। রোগের আক্রমণ বেশি হলে অনেক সময় শীষ আংশিক বের হয় বা মোটেই বের হতে পারেনা এবং ধান কাল ও চিটে হয়ে যায়।

রোগের প্রতিকার (How to management) -

১) কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করুন।

২) এই রোগে ধানের চারা আক্রান্ত হলেই প্রথম পদক্ষেপ হল আক্রান্ত ক্ষেতের জল বের করে দিয়ে জমি ভেদে ৭ থেকে ১০ দিন শুকানো।

আরও পড়ুন - Cardamom Farming - কম খরচে এলাচ চাষ করে আয় করুন অধিক অর্থ

৩) মনে রাখবেন, আক্রান্ত ক্ষেতে নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করবেন না।

৪) আক্রান্ত ক্ষেতে বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৭ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করলে এ রোগের

তীব্রতা কমে।

এছাড়া খোলা পচা রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রোপিকোনাজোল ০.৭৫ মিলি/ ট্রাইসাইক্লাজোল ০.৫ গ্রাম/ ভ্যালিডামাইসিন ২ মিলি – এগুলির মধ্যে যে কোনও একটি ওষুধ প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে পারেন।

আরও পড়ুন - Home farming – বাড়ির টবে সহজেই কোন কোন সবজি ফলাতে পারবেন, রইল টবে সবজি চাষের তালিকা

Published On: 10 August 2021, 09:55 AM English Summary: Disease identification and management of Kharif paddy

Like this article?

Hey! I am স্বপ্নম সেন . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters