দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষি কাজে ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে চলছে স্মার্ট ফার্মিং
দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষিপ্রধান ৬টি প্রদেশেই বর্তমানে ড্রোন ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। সেখানকার কৃষিপ্রধান এলাকায় ইদানীং মাথার ওপর দিয়ে নিয়মিত উড়ে যায় ড্রোন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সারাদিন বাগানের নির্দিষ্ট সীমানার ওপর নজর রাখা গেলেও সুবৃহৎ অংশ হলে সমগ্র এলাকার নজরদারি সম্ভবপর নয়, সেক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। সেই সমস্যারই সমাধান করছে ড্রোন। নিজে উপস্থিত না হতে পারলেও পুরো বাগানোর উপর নজর রাখছে দূর থেকে পরিচালিত ছোট এই উড়ন্ত যন্ত্রটি।
কিন্তু কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে ড্রোনের সম্পর্ক ঠিক কী রকম?
মনে করুন, কোথাও জলের পরিমাণ কমে গিয়ে ফসল শুষ্ক হয়ে গেছে, অথবা খামারের কোনো অংশে ফসল কম হয়েছে, আবার কোথাও মাটির আদ্রভাব বজায় আছে কিনা – এ সকল তথ্য জানা যাবে ড্রোনের সাহায্যে তোলা ছবি থেকে। ফলত সুবিধা অনেক, মিলছে সহজেই সমস্যার সমাধান। ড্রোন ব্যবহার করে বেশ উপকৃত হচ্ছে সেখানে স্থানীয় ফার্মগুলি।
সম্প্রতি আফ্রিকার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর জনসংখ্যা পৌঁছবে দশ বিলিয়নে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের খাদ্যের যোগান দিতে পৃথিবীর কৃষি উৎপাদন অন্তত ৭০ শতাংশ বাড়াতে হবে। উল্লেখ্য যে, পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ অব্যবহৃত চাষযোগ্য জমি আফ্রিকাতে থাকায় এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে আফ্রিকার দেশগুলিকে। কারণ, বিজ্ঞানীদের মতামত অনুযায়ী, ড্রোন দ্বারা কৃষি উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।
‘এয়ারোবেটিকস’ নামের একটি কোম্পানি ওয়েস্টার্ন কেপ অঞ্চলের কৃষি খামারগুলোকে ড্রোন পরিষেবা সরবরাহ করে থাকে। ড্রোন থেকে তোলা ছবির ওপর ভিত্তি করে ফসলের পরিস্থিতি তারা বিশ্লেষণ করে। মাটির আর্দ্রতা রক্ষা করা এই অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওয়েস্টার্ন কেপ অঞ্চলে খরা বিরাজমান। সুতরাং, ওই অঞ্চলে সঠিকভাবে সেচ ব্যবস্থাপনা জরুরি। হয়তো কোনো অংশে কম সেচ প্রদান করা হয়েছে, ড্রোনের সাহায্যে অতি সহজেই সেই বিষয়ের ওপর নজর রাখা যায়। এছাড়া ফসলের উৎপাদন কোথায় কতটা হল তা-ও বোঝা যায়।
খামারিরা মোবাইল ফোনে অ্যাপ দিয়ে নিজেরাও যাতে এ সব ড্রোন পরিচালনা করতে পারেন সে ব্যবস্থাও চালু করার চেষ্টা চলছে। ড্রোনের মতো প্রযুক্তির ব্যবহার একই সঙ্গে তরুণ প্রজন্মের কাছে কৃষিকে আকর্ষণীয় করে তুলবে বলেই আশা করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিকে বলাই হচ্ছে স্মার্ট ফার্মিং।
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments