
যখন কোনো স্থানে বহু বছর ধরে বৃষ্টিপাত না হয় তখন সেই সমস্ত স্থানকে খরা কবলিত স্থান হিসাবে গন্য করা হয়। খরা কবলিত স্থানের কৃষিতে এবং ওখানকার পরিবেশের মধ্যে সবথেকে বিরুপ প্রভাব পড়ে। কৃষি ও কৃষি সম্বন্ধীয় বিভিন্ন বিষয়সমূহে বিরূপ প্রভাবান্বিত হওয়ার ফলে এই সমস্ত স্থানের অর্থব্যবস্থায় অত্যন্ত টালমাটাল অবস্থা চলে। ভারতীয় ইতিহাসে এমন খরার কবলে পড়ে যে মন্বন্তর সংঘটিত হয়েছিলো তাতে অতীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিলো। এখন এই খরার খবর এসেছে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে যাতে বেশ বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। আসলে পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার খরা কবলিত এলাকায় শুকিয়ে যাওয়া নদীর ধারে লক্ষ লক্ষ মৃত মাছ পরিলক্ষিত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সরকারী আধিকারিকরা সোমবার সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন যে মৃত মাছের সংখ্যা অনেক বেশী হতে পারে। মারে ডার্লিং নদীর অববাহিকায় হাজার হাজার কিলোমিটার স্থান জুড়ে মরে পরে আছে লক্ষ লক্ষ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সরকারি আধিকারিকদের মতে মৃত মাছের সংখ্যা ১০ লক্ষেরও বেশি হতে পারে। নিউ সাউথ ওয়েলস এর সরকারি মতে এই সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে ফলে এই মাছ মৃত্যুর সংখ্যা আগামী কয়েকদিন আরও বাড়তে পারে।
অস্ট্রেলিয়ায় এই বছর বৃষ্টিপাত একেবারেই কম হয়েছে ফলে তাপমাত্রার বৃদ্ধি হয়েছে লাগামছাড়া। এই বেলাগাম তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে নদীর জলের পরিমাণ কমে গেছে ফলে প্রচুর শৈবাল জন্মানোর কারণে জলের বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছিলো, এই অক্সিজেন কমে যাওয়াকেই এই বিপুল সংখ্যক মাছের মৃত্যুর জন্য প্রাথমিক ভাবে দায়ী করা হয়েছে। এই দেশের কেন্দ্রীয় মৎস্য ও জলজ জীবন সুরক্ষা মন্ত্রী মিঃ নিয়ল ব্লেয়ার বলেছেন এই সপ্তাহে এই মাছেদের মৃত্যুর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
আরও পড়ুন প্রকৃতিতে প্রায় ৩০,০০০ ভোজ্য উদ্ভিদ রয়েছে কিন্তু কৃষকেরা চাষ করেন কেবলমাত্র ১৭০ টি ফসলের
এই বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার জনমানসে এক বিশাল প্রভাব পড়েছে, এবং রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়ে গেছে। মৎস্য ও জলজ সুরক্ষা মন্ত্রকে এই নিয়ে শাসক বিরোধী তরজা রীতিমতো শুরু হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিঃ স্টক মরিসন সোমবার বলেছেন,” পরিস্থিতি খুবই ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে।“ অস্ট্রেলিয়া ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটির জল অর্থব্যবস্থার বিশেষজ্ঞ মিঃ জন উইলিয়াম বলেছেন যে মাছেরা নদীর জল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে মারা যাচ্ছে না, বরং আমরা নদীর থেকে প্রচুর পরিমাণে জল তুলে নিচ্ছি যা কিনা এই মাছেদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
- প্রদীপ পাল (pradip@krishijagran.com)
Share your comments