আমরা কৃষিজাগরণ ওয়েবসাইটে নিয়মিত কৃষি ভিত্তিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি । এর ফলে কৃষকরা কৃষি জমি, শিক্ষা,চাষবাস, এসব বিষয় নিয়ে নানারকম জ্ঞান লাভ করে থাকেন।এর ফলে কৃষকরা বিভিন্ন প্রয়োজনে এ সকল তথ্য থেকে উপকৃত হয়ে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা আপনাদের সাথে অসময়ে ফুল কপি চাষের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব ।
ভরা মৌসুমে লোকসান হলেও ফুলকপি চাষে লাভের দেখা পাচ্ছেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার কৃষকরা। অন্য ফসলের তুলনায় সময়য়ও কম লাগে। ফলে আগাম জাতের ফুলকপি চাষের দিকে ঝুঁকছেন এই উপজেলার কৃষকরা। এখন প্রায় বছরের পুরোটা সময় তারা আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করছেন। অসময়ের ফুলকপিতে লাভ বেশি হওয়ায় চাষ দিন দিন বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহায়তায় কৃষকরা এই আগাম জাতের এ ফুলকপি চাষ শুরু করেন বলে জানা যায়।
আরও পড়ুনঃ ভ্যানিলা চাষে বাম্পার লাভ, চাষিরা হতে পারেন কোটিপতি!
ফুলকপির চারা রোপণ পদ্ধতি
৬-৭টি পাতাবিশিষ্ট চারা রোপণ করতে হয়। আগাম ফসলের জন্য ৬০ সেন্টিমিটার পর পর সারিতে ৪০-৫০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে মধ্য ফসলের জন্য ৬০ সেন্টিমিটার পর পর সারিতে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করা যেতে পারে। চারা রোপণের উপযুক্ত সময় বিকাল। রোপণের পর চারার গোড়ায় ঝাঝরি দিয়ে পানি সেচ দেয়া দরকার। পরদিন সকালে কলার খোল, কচুরিপানা প্রভৃতি দ্বারা ছায়ার ব্যবস্থা করতে হয়। এ ছায়া বিকালে সরিয়ে চারায় রাতে শিশির পড়ার সুযোগ দিতে হয়। তিন-চারদিন পর্যন্ত এ ব্যবস্থা এবং সকাল-বিকাল পানি সেচ দিতে হয়। তারপর ছায়া সরিয়ে ফেলা হয় এবং পানি সেচ কেবল বিকালে দিলেই চলে। মাটিতে জো এলে গাছের সারির মধ্যবর্তী স্থানে গাছের গোড়ার মাটি উঠিয়ে, ভেলি করে দেয়া দরকার। রোপণের প্রায় দু’মাসের মধ্যে গাছে ফুল দেখা দেয়। ফুল দেখা দেয়ার ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে ফুলকপি খাওয়ার উপযুক্ত হয়।
সারের মাত্রা ও সার প্রয়োগ
ফুলকপি চাষের জন্য মাঝারি উর্বর মাটিতে হেক্টর প্রতি ৩০০-৩৫০ কেজি ইউরিয়া, ১৩০-১৫০ কেজি টিএসপি, ১৫০-২০০ কেজি এমপি এবং ৫-৭ টন গোবর সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। এছাড়া পচা গোবর জমি তৈরির সময় ৫০ কেজি দিতে হবে। ২৫ থেকে ৩০ দিন বয়সের চারা সারি থেকে সারি ৫০ সে.মি. (২০ ইঞ্চি) এবং চারা থেকে চারা ৪০ সে.মি. (১৬ ইঞ্চি) দূরত্ব বজায় রেখে রোপণ করতে হবে। প্রথম ও দ্বিতীয়বার সার উপরি প্রয়োগের পর পরই সারির দু’পাশের মাটি আলগা করে গাছের গোড়ায় তুলে দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ রানীতলা থানার চর এলাকায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে গাছ হয়েছে কলাই ধরেনি
পোকা দমন
ফুলকপির বিভিন্ন পোকার মধ্যে জাবপোকা। পাতা ও ফুলের রস শোষণ করে। এফিডান সেভিন ৫% পোকা দমন করে। সেফস বা নেক্সিয়ন ও (০.৫%) ওষুধও ছিঁটানো যায়। অন্যান্য পোকার মধ্যে মাছি পোকা ও মখ উল্লেখযোগ্য। এদের দমনের জন্য ফলিখায়ন কিংবা সুমিথিয়ন প্রযোজ্য।
Share your comments