জামরুল হালকা মিষ্টি স্বাদ যুক্ত একটি রসালো গ্রীষ্মকালীন ফল । বসতবাড়ি বা আশেপাশে বা পুকুরের ধারে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু একটি জামরুলের চারা দেখতে পাওয়া যায়। এটি ভিটামন বি ২ সমৃদ্ধ একটি ফল। এ ফলে প্রচুর পরিমানে জল থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের তৃষ্ণা নিবারণে উপকারী। জামরুলে আমিষ, খনিজ লবন, ভিটামিন সি, লৌহ ও ক্যারোটিন রয়েছে।
জামরুল চাষ করার সঠিক সময়
জামরুল চাষের সময়: দেশে প্রায় সারা বছরই জামরুলের চাষ করা যায়। তবে মে মাস থেকে জুলাই মাস জামরুল চাষের উপযুক্ত সময়। এ সময়ে গাছ লাগালে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
জমি নির্বাচন ও তৈরী
সুনিকাশিত দোঁ-আশ মাটি জামরুল চাষের জন্য বেশি উপযোগী। তবে সব ধরনের মাটিতেই জামরুল চাষ করা যায়। বৃষ্টির জল জমে না এমন ধরনের উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। চাষ দিয়ে অথবা কোদাল দিয়ে মাটি কুপিয়ে সমতল ও আগাছামুক্ত করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ মিল্কফিশ চাষ করবেন? জেনে নিন সহজ পদ্ধতি
জামরুলের চারা রোপণের পদ্ধতি
আধুনিক জাতের জামরুলের গাছ হয় ঝোঁপালো ও খাটো। তাই এসব জাতের গাছ ছাদে হাফ ড্রামে লাগানো যেতে পারে। তবে বাড়ির আঙিনায় জায়গা থাকলে টব বা ড্রামের চেয়ে মাটিতে লাগানো ভালো। হাফ ড্রামে মে মাসের মধ্যেই দোঁয়াশ মাটি অর্ধেক ও অর্ধেক গোবর বা জৈব সার মিশিয়ে ভরতে হবে। সাথে প্রতিটি হাফ ড্রামে ১ কেজি কাঠের ছাই ও ৫০০ গ্রাম হাঁড়ের গুঁড়া, ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ১৫০ গ্রাম এমওপি এবং ৫০ গ্রাম বোরণ সার মিশিয়ে দেবেন। তবে ড্রামের ওপরের কানা থেকে অন্তত দু ইঞ্চি খালি রেখে সারমাটি ভরবেন।
সার প্রয়োগ
জামরুল গাছ বৃদ্ধির সাথে সাথে গাছে প্রয়োজনীয় পরিমানে সার প্রয়োগ করতে হবে। এক থেকে তিন বছর বয়সী গাছের জন্য গোবর দিতে হবে ১৫-২০ কেজি, ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে ২০০-৩০০ গ্রাম, টিএসপি দিতে হবে ২০০-৩০০ গ্রাম এবং এমওপি সার দিতে হবে ১০০-২০০ গ্রাম। গাছ একটু বড় হলে অর্থাৎ চার থেকে সাত বছর বয়সী গাছের জন্য গোবর দিতে হবে ২৫-৩০ কেজি, ইউরিয়া ৪০০-৬০০ গ্রাম, টিএসপি লাগবে ৪০০-৫০০ গ্রাম এবং এমওপি দিতে হবে ৩০০-৪০০ গ্রাম। গাছের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সারের পরিমান বাড়বে।
আরও পড়ুনঃ জৈব চাষ করেন? আলুর খোসা দিয়ে তৈরি করুন সার, রইল পদ্ধতি
ছাদ বাগানের জামরুল চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সঠিকভাবে মাটি প্রস্তুত করা।আর ভাল ফলন পেতে হলে প্রতি বছর টবের মাটি আংশিক পরিবর্তন করতে হয়।
Share your comments