সবুজ সার তৈরি করার পদ্ধতি

খুব কম খরচেই এই 'সবুজ সার' চাষ করা যায় এবং তা ব্যবহার করে মাটির স্বাস্থকে ভালো রাখা যায়। সবুজ সার মাটিতে বিভিন্ন উদ্ভিদ খাদ্য উপাদান যোগ করার পাশাপাশি ক্ষারীয় এবং লবনাক্ত মাটিকেও ফসল চাষের উপযোগী করে তোলে। সব দিক বিচার করলে সবুজ সারের অবদান অনস্বীকার্য।

KJ Staff
KJ Staff
সংগৃহীত।

কৃষিজাগরন ডেস্কঃ সবুজ সার হল এক রকমের উৎকৃষ্ট জৈব সার। সবুজ সার মাটির মধ্যে বায়ু চলাচল ও মাটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়িয়ে মাটিকে উর্বর করে তোলে এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

খুব কম খরচেই এই 'সবুজ সার' চাষ করা যায় এবং তা ব্যবহার করে মাটির স্বাস্থকে ভালো রাখা যায়। সবুজ সার মাটিতে বিভিন্ন উদ্ভিদ খাদ্য উপাদান যোগ করার পাশাপাশি ক্ষারীয় এবং লবনাক্ত মাটিকেও ফসল চাষের উপযোগী করে তোলে। সব দিক বিচার করলে সবুজ সারের অবদান অনস্বীকার্য। সবুজ সার মাটিতে কার্বনের মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে মাটিতে বসবাসকারী উপকারী অণুজীবের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। সবুজ সার মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণ জৈব সার যুক্ত করার পাশাপাশি মাটির শারীরিক, রাসায়নিক এবং জৈবিক চরিত্রেরও উন্নতি সাধনে সাহায্য করে।

আরও পড়ুনঃ সত্যিকারের কৃষক বন্ধু হয়ত ভার্গিস কুরিয়েনই ছিলেন

অনেক সময় চাষীবন্ধুরা ভুমিক্ষয় এবং শিকড়-ফোলা ক্রিমিশত্রু (Root-knot nematode) -এর হাত থেকে ফসলকে বাঁচানোর জন্য সবুজ সারের প্রয়োগ করে থাকেন। সবুজ সার মাটিতে একবার প্রয়োগ করলে তার অবশিষ্ট কিছু উদ্ভিদ খাদ্য উপাদান জমিতেই থেকে যায়, যা পরবর্তী ফসল উৎপাদনের সময়ও কাজে লাগে। সবুজ সার হিসেবে ব্যবহৃত শিম্বি জাতীয় উদ্ভিদের শিকড়ে অবস্থিত গুটির মধ্যে থাকা রাইজোবিয়াম জীবাণু বাতাসের নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে প্রতি হেক্টর ৩০-৪০ কেজি নাইট্রোজেন মাটিতে যোগ করে। যা অনেকাংশে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

সবুজ সার সাধারণত দুইভাবে মাটিতে প্রয়োগ করা যায়। ফসলের জমিতে সরাসরি সবুজ সারের চাষ। যেখানে শিম্বি জাতীয় ফসলকে জমিতে বড় করে ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মাথায় তাদের কে কেটে জমিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়। অথবা, বাইরের থেকে গাছের পাতা, কচি ডালপালা বা অন্য জায়গার জৈব সার নিয়ে এসে তাও ফসলের জমিতে ব্যাবহার করা যেতে পারে। যেমন গ্লাইরিসিডিয়া, সুবাবুল গাছের ডালপালা এসবের জন্য সবচেয়ে উপযোগী।

সবুজ সারকে মাটিতে এমন ভাবে মেশাতে হবে যাতে সবুজ সারের কিছু অংশ মাটির উপরেও থাকে। সবুজ সারকে দ্রুত এবং সঠিকভাবে পচানোর জন্য ৩টি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাপশক্তি, অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় অণুজীবী। এই ৩টি জিনিসই মাটির উপরিভাগে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। তাই সবুজ সারকে মাটির খুব গভীরে না মিশিয়ে মাটির উপরিভাগেই মিশিয়ে দেওয়া হয়। সবুজ স্যারের ফসল নির্বাচন করার সময় কিছু জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। যেমন বেশি পাতাযুক্ত, নরম ডালপালা ও দ্রুত বেড়ে ওঠা   প্রজাতির ফসলই সবচেয়ে ভালো।

আরও পড়ুনঃ মৎস্যমন্ত্রীর নিরলস পরিশ্রমে সুরক্ষিত হতে চলেছে ১৫ লক্ষ মৎস্যজীবীর জীবন

সবুজ সারের জন্য ধইঞ্চা সবচেয়ে ভালো মানা হয়ে থাকে। তবে শন, বরবটি, মটরশুঁটি, মাসকালাই ব্যবহার করেও ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। সবুজ সারের বীজ রোপেনর আগে মাটিতে ৪০ কেজি নাইট্রোজেন, ৪০ কেজি ফসফরাস এবং ২০ কেজি পটাশ প্রতি হেক্টর জমিতে দেওয়া হয়ে থাকে। নাইট্রোজেন পাতার সংখ্যা বাড়িয়ে তোলে।  ফসফরাস এবং পটাশ পাতাকে সহজে পচতে সাহায্য করে। কৃষকরা অনেক সময় ডাল জাতীয় ফসলকে সবুজ সার হিসেবে ব্যবহার করতে চান না। কিন্তু এই ডাল জাতীয় ফসলকেও সবুজ সার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

যেহেতু ধইঞ্চা জল জমা জমিতেও চাষ করা সম্ভব, তাই ধানের জমিতে সবুজ সার হিসেবে এর ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবুজ সার ব্যাবহারের প্রধান কারণ হলো গাছের সবুজ অংশ মাটিতে ফিরিয়ে দেওয়া, যার ফলে মাটির স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। এছাড়া মাটির অন্যান্য গুনাগুনও বৃদ্ধি পায়। তাই, কৃষক বন্ধুদের উচিৎ সবুজ সারের ব্যাবহার বাড়ানো। এতে নামমাত্র খরচ করেই জমির উর্বরতা বাড়ানো সম্ভব।

Published On: 26 November 2022, 02:42 PM English Summary: Method of making green manure

Like this article?

Hey! I am KJ Staff . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters