ধানের জমিতে অ্যাজোলা চাষের পদ্ধতি

জমিতে সহজেই অ্যাজোলা চাষ করা যায়। নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে অ্যাজোলা চাষ করে অল্প কয়েক দিনে প্রচুর অ্যাজোলা উৎপাদন করা যায়।

Saikat Majumder
Saikat Majumder
অ্যাজোলা চাষ

কৃষিজাগরন ডেস্কঃ জমিতে সহজেই অ্যাজোলা চাষ করা যায়। নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে অ্যাজোলা চাষ করে অল্প কয়েক দিনে প্রচুর অ্যাজোলা উৎপাদন করা যায়।

চাষের পদ্ধতি

১) প্রথমে জমিকে একরূপে সমান করে নিতে হবে, যাতে কোন জায়গায় উঁচু নিচু না থাকে।

২) জমিকে ২০-২৫ মি লম্বা এবং ৫ মি গ্রন্থে ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রতিটা প্লটকে ভালো ভাবে আল দিয়ে বেঁধে দিতে হবে যাতে প্রয়োজন মতো জল ভেতোরে ঢুকানো ও বের করা যেতে পারে ।

৩) এবার প্রতিটা প্লট বা ভাগে ১০ সেমি জল আটকাতে হবে এবং এই জলে ৭/৮ কেজি অ্যাজোলা, ১০-১২ কেছি গোবর এবং ১০০ গ্রাম এস এস পি যোগ করতে হবে।

(৪) এই ভাবে ১৫ দিন পর পর উৎপাদিত অ্যাজোলা প্রয়োজন মতো ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ সার ও গোখাদ্য হিসেবে অ্যাজোলার গুরুত্ব

অ্যাজোলা উৎপাদনের জন্য কতগুলি বিষয় মাথায় রাখা দরকার

  • যে স্থানে অ্যাজোলা বেড করা হবে তা অবশ্যই সমান করে নিতে হবে।

  • ধারাবাহিক ভিত্তিতে জলের যোগানের জন্য বেডগুলোকে অবশ্যই জলের উৎসের কাছাকাছি রাখতে হবে। অল্প ছায়া যুক্ত জায়গায় এই বেড রাখার জন্য আদর্শ।

  • মেঝেয় যাতে কোন সূঁচালো পাথর, মূল বা কাঁটা না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ তাতে বেডগুলো ফুটো হয়ে যেতে পারে।

  • প্রতি ১৫ দিন অন্তর ১ কেজির মতো গোবর ১০ গ্রাম সুপার ফসফেটের মিশ্রণ প্রয়োগ করলে অ্যাজোলার বৃদ্ধি ভালো হবে।

  • অন্য কোন বর্জ্য বা জলজ আগাছা দেখলেই তা নিয়মিত সরিয়ে ফেলতে হবে।

  • অ্যাজোলা বেডে ভরে গেলে প্রতি স্কোয়ার মিটারে ২০০ গ্রাম মতো অ্যাজোলা প্রতিদিন বা একদিন অন্তর একদিন সরিয়ে ফেলতে হবে।

  • তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াগের বেশি উঠে গেলে অবশ্যই সেড লাগালে ভালো হবে। সেকারণেই একটু অল্প জায়গায় বেডগুলো রাখলে ভালো হয়।

  • জলের pH ৫.৫-৭-এর মধ্যে রাখতে হবে।

  • মোটামুটি ২-২.৫ কেজি মতো মাটির বদলে নতুন মাটি প্রতি ৩০ দিন অন্তর পাল্টাতে হবে।

  • ২৫-৩০% জল নতুন জল দিয়ে প্রতি ১০ দিন অন্তর পাল্টাতে হবে।

 প্রতি ছয় মাস অন্তর আগের জল ফেলে দিয়ে নতুন অ্যাজোলা ও মাটি দিয়ে পুনরায় চাষ শুরু করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ মৌমাছি পালনের আগে জেনে নিন কিছু গুরুত্বপূর্ন বিষয়

অ্যাজোলা থেকে কম্পোস্ট সার উৎপাদন পদ্ধতি 

) প্রথমে একটি গর্ত তৈরি করতে হবে যার মাপ হবে- .৫ মিX ১মিX .৫মি. (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা) এবং গর্তের মেঝে কালো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

) এবার গর্তটা অ্যাজোলা দিয়ে ভর্তি করে দিতে হবে।

) এরপর সাধারণ পলিখিন সিট দিয়ে গর্তটি ঢেকে দিতে হবে।

) পাঁচদিন অন্তর নাড়া দিতে হবে ও অল্প অল্প জলের ছিটে দিতে হবে।

) পনেরো দিন পরে পড়ে যাওয়া (কালো রঙের) অ্যাজোলা বার করে নেওয়া যাবে।

) ছায়াতে শুকিয়ে নিয়ে আর্দ্রতা ২০-৩০% করে নিতে হবে।

অ্যাজোলা মজুত রাখা এবং খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করার পদ্ধতি

অ্যাজোলা রৌদ্রে শুকনো অথবা দলাপাকানো (গুলির আকারে) এবং সাইলেজ (শুকনো প্রাণী খাদ্য) করা অবস্থায় খাওয়ানো যেতে পারে।বেশি ভেজা থাকলে একটি মেঝেতে কয়েক ঘণ্টা ছাড়িয়ে রাখলে শুকিয়ে যায়ে। রৌদ্রে শুকনো এবং গুঁড়ো করা অ্যাজোলা বেশিদিন রাখা যায় এবং খুব সহজেই কনসেনট্রেট খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যায়ে। যখন পুকুরে পরিমিত জল সরবরাহ থাকে, তখন অ্যাজোলা বেশি করে বিভাজন করিয়ে শুকিয়ে ও জমিয়ে রাখা যায় ।

অ্যাজোলার চৌবাচ্চা (ক্ষেত্র) তৈরী করতে কত খরচ প্রয়োজন

সারা বছরের গোখাদ্য পেতে হলে দুটি চৌবাচ্চা করা দরকার জাতে খরচ হবে প্রায় ১৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা । সবুজ সার হিসাবে অ্যাজোলা যেমন ব্যবহার করা যায়, সেই কারনে একে কার্যকারী জৈবসার বলে এবংদীর্ঘদিন ধরেই চিরাচরিত পদ্ধতিতে ধানক্ষেতে জৈবসার বা সবুজসার রূপে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে উৎকৃষ্ট মানের পশুখাদ্য হিসাবেও অ্যাজোলার গুরুত্ব অপরিসীম। ক্ষুদ্র চাষীদের ক্রমদ্ধমান পশুপালনের জন্য গো-খাদ্য হিসাবে অ্যজোলার ব্যবহারের গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে।

Published On: 15 November 2022, 04:28 PM English Summary: Methods of cultivation of Azolla in paddy field

Like this article?

Hey! I am Saikat Majumder. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters