কৃষকদের চাষে সুবিধা ও লাভের জন্য পরিকল্পনামাফিক চাষ জরুরী। কোন সময়ে কোন সবজীর চাষ তাদেরকে অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ করবে তা আগে জানা দরকার। আমাদের দেশে মরসুম অনুযায়ী তিন ধরণের ফসলের চাষ করা হয়-
১) খরিফ ফসল –
খরিফ ফসল হ'ল সেই ফসল, যা বর্ষাকালে বপন করা হয় এবং এগুলি ভারতে গ্রীষ্ম বা বর্ষা ফসল হিসাবেও পরিচিত। এই ফসল প্রধানত দক্ষিণ-পশ্চিম বর্ষা মৌসুমে জুলাই মাসে প্রথম বৃষ্টিপাতের শুরুতে বপন করা হয়।
২) শীতকালীন ফসল –
শীত মৌসুমে যে ফসলগুলি বপন করা হয় তাদের রবি ফসল বা ভারতে শীতকালীন ফসল বলা হয়। এই ফসলের জন্য শীতল আবহাওয়া প্রয়োজন। এই ফসলের বপনের সময় অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে হয় এবং ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফসল তোলা হয়। এই ফসলের জন্য কম তাপমাত্রা এবং কম জল প্রয়োজন।
৩) যায়েদ ফসল –
সর্বশেষ প্রকারের ফসল হচ্ছে যায়েদ ফসল এবং এই ফসলগুলি ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসে বপন করা হয় এবং এপ্রিল থেকে মে মাসে ফসল সংগ্রহ করা হয়। এই ফসলের খরা সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে।
সেপ্টেম্বরে কি ফসল / শাকসবজী আবাদ করলে কৃষকরা লাভ করতে পারবেন, সেই নিয়েই এই নিবন্ধে আমরা উল্লেখ করব। রইল তার তালিকা (List of vegetables, which cultivation will benefit the farmer) -
- গাজর
- মূলা
- বিটরুট
- মটর
- আলু
- শালগম
- পালং
- লেটুস
- ফুলকপি
- ব্রকোলি
- বাঁধাকপি
- শিম
- টমেটো
(Vegetable Seed Sowing Calendar) কৃষকদের জন্য সবজি বীজ বপনের ক্যালেন্ডার ২০২০-২১
জলবায়ুর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ভাদ্র- আশ্বিন মাসে রাজ্যে সাধারণত বৃষ্টিপাত হালকা পরিমাণে হয়ে থাকে এবং আবহাওয়া রৌদ্রোজ্জ্বল-এর দিকেই থাকে। বৃষ্টিপাত ফসলের ফলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুতরাং জলবায়ু এবং সবজী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, কৃষকরা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রস্তুত হতে পারেন আগাম রবি সবজি বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, সবুজ ফুলকপি, টম্যাটো, বেগুন, লাউ-এর জমি তৈরি, চারা রোপণ, সার প্রয়োগের জন্য। মধ্যম ও নাবী রবি সবজির বীজতলা তৈরি, বীজ বপন, নাবী খরিফ-২ সবজি সংগ্রহ, বীজ সংরক্ষণ, পূর্বে প্রতিস্থাপন করা চারার পরিচর্যা, উন্নত চারা/কলম লাগানো, খুঁটি দেয়া, বেড়া দিয়ে চারাগাছ সংরক্ষণ এবং ফল সংগ্রহের পর গাছের অঙ্গ ছাঁটাই ইত্যাদি কার্যের দিকের এই সময়ে মনোনিবেশ করতে হবে।
কৃষিক্ষেত্র শুধুমাত্র দেশের সুবৃহৎ জনগোষ্ঠীর খাদ্য সংস্থানের ক্ষেত্রই নয়, সাথে তা অর্থনীতির বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা যদি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ক্যালেন্ডার তৈরি করে কৃষিকাজ করি, তবে তা ফসলের কীটপতঙ্গ ও রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে ফলন বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে। এতে কৃষকের আয়ও দ্বিগুণ হবে। সুতরাং, আসুন আমরা পরিকল্পনা করি এবং সেপ্টেম্বর মাসে কৃষকের আয় যাতে বৃদ্ধি হয়, সেদিকে মনোনিবেশ করি।
Image source - Google
Share your comments