অভিশপ্ত ২০২১! একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ করে দিয়েছে বাংলার বহু কৃষকদের জীবন। বুলবুল, আমফান, যশ একের পর ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব চলেছে বঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। বার বার ভেঙ্গেছে বেড়িবাঁধ। প্রচুর চাষের জমি হয়েছে নষ্ট। সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে উপকূলীয় জমির একটি বড় অংশকে ফসল ফলানোর জন্য অকেজ করেছে। এমনকি বিস্তীর্ণ জমি এখনও লবণাক্ত জলের নীচে রয়েছে। ফলে কিছু জেলার চাষিদের কপালে আজও চিন্তার ভাঁজ।
আরও পড়ুনঃ আহারে বাহার আনতে চাই লঙ্কা! জেনে নিন লঙ্কার সেরা জাত, লাভের মুখ দেখবে কৃষকরাও
তবে এই অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য সুন্দরবনের চাষিরা নিয়েছে নয়া উদ্যোগ। এখানের চাষিরা এখন অসমের মত ভাসমান সবজি বাগানের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে। ভাসমান কাঠামোর ওপর সবজি চাষের পদ্ধতিকে বলা হয় হাইড্রোপনিক পদ্ধতি। বর্তমানে তাঁরা এই অভিনব কৌশল অবলম্বন করে মৌসুমি সবজি যেমন বেগুন, টমেটো, শসা, করলা, করলা এবং মশলা যেমন মেথি, ধনে, পেঁয়াজ, আদা ইত্যাদি চাষ করছে।
এই পদ্ধতিতে চাষ করার জন্য মুল হাতিয়ার হল বড় বড় ড্রাম। বড় ড্রামের সাহায্যে জলের ওপর বাঁশের মাচা তৈরি করা হয়। আর এর মধ্যে গাছের চারা লাগানোর জন্য টব হিসেবে ব্যবহার করা হয় প্লাস্টিকের গ্রো ব্যাগ। কোকোপিট, কাঠের গুড়ো, ধানের তুস, হাড়ের গুড়োর ইত্যাদি একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মাটি। আর যেহেতু সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে পড়েছে জমিতে তাই সেই নোনা জল পরিশোধিত হচ্ছে সৌরশক্তির সাহায্যে। এইভাবেই চাষ করে লাভের মুখ দেখছে সুন্দরবনের চাষিরা। ইতিমধ্যেই সুন্দরবনে ১১ হাজার বর্গফুট ভাসমান বাগান তৈরি হয়েছে। আর চাষের জন্য এই পদ্ধতি বজায় রাখলে ভবিষ্যতে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকলেও চাষে কোনও ক্ষতি হবে না। তবে শুধু সবজি চাষে নয় মাছ চাষের ক্ষেত্রেও এই বিকল্প অবলম্বন করছেন মাছ চাষিরা। কারণ সমুদ্রের নোনা জল পুকুর বা নদীর মিষ্টি জলের সঙ্গে মিশলে মাছ মরে যায়। তাই ড্রাম এর ওপর মাচা তৈরি করে জলের ভেতর ডুবিয়ে আপাতত চলছে মাছ চাষ।
আরও পড়ুনঃ "ঘোল ফিশ" - বিরলতম সামুদ্রিক প্রজাতির অন্যতম, দাম হতে পারে ১ কোটি টাকা!
Share your comments