
পালং শাক কমবেশি প্রায় সবারই প্রিয়। এর ইংরেজি নাম Spinich ও বৈজ্ঞানিক নাম Spinacea olerocea. এ সবজি অধিক ভিটামিনসমৃদ্ধ। পালং শাকের কঁচি পাতা ফুসফুস, কণ্ঠনালীর সমস্যা, শরীর জ্বালাপোড়া ইত্যাদি সমস্যা দূর করতেও ভালো কাজ দেয়। পালং শাক শরীর ঠান্ডা রাখে। জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই শাক বিশেষ উপকারী।
মাটি
দোআঁশ উর্বর মাটি বেশি উপযোগী। এছাড়াও এঁটেল, বেলে-দোআঁশ মাটিতেও চাষ করা যায়।
পালংশাকের জাত
পুষা জয়ন্তী, কপি পালং, গ্রিন, সবুজ বাংলা ও টকপালং। এছাড়া আছে নবেল জায়েন্ট, ব্যানার্জি জায়েন্ট, পুষ্প জ্যোতি ইত্যাদি।
জমি তৈরী
পালং শাক চাষ করার আগে চাষ ও মই দিয়ে জমির মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে তৈরি করে নিতে হবে। জমিতে আল তৈরি করেও পালংশাক চাষ করা যায়। উঁচু আল পালংশাকের জন্য নির্বাচন করা হয়। উঁচু আলে কিছুটা আগাম পালংশাক বীজ বপন করা যায়। কোদাল দিয়ে আলের মাটি কুপিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে মাটি তৈরি করতে হবে।
সার প্রয়োগ
কৃষকদের মতে গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে পালং শাক চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করা উচিত | এছাড়া, গোবর ৪০ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ৫০০ গ্রাম এবং এমপি ৫০০ গ্রাম নিতে হবে | ইউরিয়া ছাড়া সব সার জমির শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হয়। তবে গোবর জমি তৈরির প্রথম দিকে প্রয়োগ করাই উত্তম। ইউরিয়া সার চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর থেকে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ পুরানো গাছ থেকে আমের বেশি উৎপাদন পাওয়া যাবে, এই কৃষি বৈজ্ঞানিক পরামর্শ গ্রহণ করুন
সেচ
পালং শাকের জন্য প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। তাই সারের উপরিপ্রয়োগের আগে মাটির ‘জো’ অবস্থা বুঝে সেচ দেওয়া প্রয়োজন। চারা রোপণের পর হালকা সেচ দেওয়া প্রয়োজন।
ফলন
৮-১০ কেজি প্রতি আলে।২৮-৩৭ কেজি প্রতি শতকে। ২৮০০-৩৮০০ কেজি প্রতি একরে । ৭-৯ টন প্রতি হেক্টরে ফলন পাওয়া যায় ।
পরিচর্যা
জমিতে আগাছা দেখা দিলেই তা তুলে ফেলতে হবে। গাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য মাটিতে বেশি দিন রস ধরে রাখা এবং মাটিতে যাতে সহজে আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে সেজন্য প্রতিবার জল সেচের পর আল/জমির উপরের মাটি আলগা করে দিতে হয়।
আরও পড়ুনঃলাল গাজরের চেয়ে কালো গাজর বেশি উপকারী, জেনে নিন এর উপকারিতা
ফসল সংগ্রহ
বীজ বপনের এক মাস পর থেকে পালংশাক সংগ্রহ করা যায় এবং গাছে ফুল না আসা পর্যন্ত যে কোনো সময় সংগ্রহ করা যায়। প্রতি আলে ৮-১০ কেজি , প্রতি শতকে ২৮-৩৭ কেজি, প্রতি একরে ২৮০০-৩৮০০ কেজি, প্রতি হেক্টরে ৭-৯ টন শাক পাওয়া যায়।
Share your comments