মানুষের মত মাছেদের দেহেও প্রচুর রোগভোগ রয়েছে, এই বিষয়টি যারা বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য চাষ করেন তাঁরা এই বিষয়গুলি খুব ভালো মতন জানেন। বিশেষ করে যখন দামী মাছের ক্ষেত্রে এই রোগভোগ দেখা যায় তখন তার প্রতিকারের জন্য মৎস্যচাষীকে অনেকটাই ঝামেলা পোহাতে হয়, এবং মাছের রোগের উপশমের জন্য অনেক মূল্যবান ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। কখনো কখনো তাতে রোগ সারে আবার কখনো মৎস্যচাষীকে লোকসান হজম করতে হয়। এখন সমস্যা হচ্ছে যারা মাছ চাষের সাথে অনেকদিন যাবত জড়িত আছেন তাঁরা যেমন চট করে মাছের রোগ বুঝতে পারে, নতুন যারা চাষ করছে তাঁদের ক্ষেত্রে মাছের রোগ নির্ণয় করা অতটা সহজ নয়, কখনো কখনো তো লক্ষণ বোঝাই যায় না, সেক্ষেত্রে মাছের চলন গমন ভঙ্গীমা দেখে বুঝতে হয়। আসুন আমরা দেখে নি মাছের দেহে বিশেষ করে বাণিজ্যিক মৎস্যের ক্ষেত্রে কী কী রোগ হতে পারেঃ
মাছের রোগ দুই ধরণের কারণবশতঃ হয় ১। প্যাথোজেনিক ২। প্যারাসাইটিক
প্যাথোজেনিকঃ
ক) ভাইরাল ইনফেক্সন; যেমন-ইসোসিড লিম্ফোসারকোমা
এই ভাইরাসঘটিত রোগটি একটি ছোঁয়াচে টিউমারঘটিত রোগ, যা প্রধানত দুই ধরণের মাছের দেহকে আক্রান্ত করে, নরদার্ণ পাইক(আমেরিকা), এবং মাস্ক লাং (ইউরোপ)। এই রোগে টিউমার প্রথমত চামড়ায় তৈরি হয়। প্রথমে রোগটি আমেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
খ) ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন; যেমন-সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স (পাখনা পচা এবং মাছের ড্রপসি)
গ) ছত্রাক ঘটিত রোগ
ঘ) জল ঘটিত রোগ; যেমন-স্যাপ্রোলেগ্নিয়া এসপি।
প্যারাসাইটিকঃ
ক) মেটাজোয়ান প্যারাসাইট; যেমন-কপপডস্।
খ) এককোশী প্যারাসাইট; যেমন-ইচ্থাইপ্থিরিস মাল্টিফিলিস এতে মাছের দেহে চুলকানিজনিত লক্ষণ সৃষ্টি হয়।
গ) কৃমি ঘটিত রোগ; (হেলমিনথ্ প্রজাতি)-যেমন-উইসট্রোনজিলাইস্।
আরও পড়ুন কাতলা মাছ সম্পর্কে কিছু তথ্য
এই রোগ গুলি ছাড়াও রয়েছে কান্সা পচা রোগ
সুতরাং, বাণিজ্যিক ভাবে যারা মাছ চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছো; তাঁদের উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে, এই রোগভোগ গুলির জন্য বিশেষ ভাবে অবগত হয়ে তারপর তাঁরা যেন এই কাজে উদ্যোগী হয়; নাহলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
- প্রদীপ পাল (pradip@krishijagran.com)
Share your comments