ভ্রূণ প্রতিস্থাপন প্রযুক্তি(ETT) কেন্দ্রের একটি অনুষ্ঠানে এসে কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক উন্নতি মন্ত্রী শ্রী রাধামোহন সিং মন্তব্য করেন যে সারা ভারতে এমন কুড়িটি ভ্রূণ প্রতিস্থাপন কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে, যার মধ্যে উনিশটির জন্য এখনো পর্যন্ত প্রস্তাব সুনিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই ভ্রূণ স্থানান্তরের অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় পুনের উরিইলিকাঞ্চনে অবস্থিত ভারতীয় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি ফাউন্ডেশনে (BAIF)। মন্ত্রী আরও বলেন প্রায় ৩০০০টি উন্নত প্রজাতিভুক্ত ষাঁড়ের সাথে দেশী গবাদিপশুর প্রজনন ঘটানোর কাজ করা হবে এইসব কেন্দ্রগুলিতে। এই প্রস্তাবিত কেন্দ্রগুলির একটি স্থাপিত হবে নাগপুরে ও অপরটি স্থাপিত হবে মহারাষ্ট্রের পুনেতে।
মন্ত্রী আরও বলেছেন যে উচ্চপ্রজাতির ষাঁড়ের শুক্রাণুর চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দিয়ে দেশি প্রজাতির উন্নত গাই উৎপাদন করা যায়। একি সময়ে এটা বোঝা যাচ্ছে, যে বর্তমানে এই প্রজননের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে, আর তাই ETT প্রমাণ করতে পারছে যে এই প্রজননের জন্য তারা একটি উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং তারা এই মূহূর্তে অনেক বেশী ব্রিডিং করাতে সক্ষম। এই কথাকে মাথায় রেখে উরুলিকাঞ্চনে BAIF-এ ৫.০৭ কোটি টাকা ব্যয় করে প্রথম ETT কেন্দ্র স্থাপিত হতে চলেছে। এই কেন্দ্রে উচ্চ প্রজাতির ষাঁড় যেমন গির, শাহিওয়াল, লাল কাণ্ডারি, ডাঙ্গি, ডিওনি, এবং গাওলাও এর প্রজনন সম্ভব হবে।
মন্ত্রিমশাই এই বিষয়টি অত্যন্ত ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করে দেখেছেন যে, কৃষিকার্য ও দুগ্ধ কারবার একে অপরের পরিপূরক, যা গবাদি কৃষকদের সামাজিক ভাবে ও অর্থনৈতিক ভাবে সাহায্য করছে। এই উদ্দেশ্যকে আর ভালোভাবে ফলপ্রসূ করবার জন্য একটা খুব ভালো গবাদিপশু সরবরাহ কেন্দ্রের আশু প্রয়োজন ছিলো। রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন এর আওতায় ১০ টি শুক্রাণু সংরক্ষণকেন্দ্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা দিয়ে আরও বেশী পরিমাণে দুগ্ধপ্রদায়ী গাভী উৎপাদন করা যায়। উত্তরাখণ্ড ও মহারাষ্ট্র এই দুটি রাজ্যের ETT কেন্দ্র স্থাপন করার প্রস্তাবনা পাশ করা হয়েছে। জুন ২০১৮ তে উত্তরাখণ্ডের হৃষিকেশে ETT কেন্দ্র স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিলো । এছাড়াও জিনোম নির্বাচন-এর ক্ষেত্রে INDUSCHIP-কে উন্নত করা হয়েছে, যাতে দেশী গবাদিপশু উৎপাদন ও ৬০০০ দুগ্ধপ্রদায়ী পশুকে জিনগতভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে এই INDUSCHIP এর মাধ্যমে। মন্ত্রী আরও জানান রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন-এর আওতায় থেকে আগামী মার্চ এর মধ্যে ২৯ টি রাজ্যের জন্য প্রায় ১৬০০ কোটি টাকার একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন হয়েছে যার মধ্যে ৬৮৬ কোটি টাকা ২০ টি কেন্দ্র বানানোর জন্য খরচ করার প্রস্তাব পাশ হয়ে গেছে। এই স্কিমে ২০ টি গোকুল গ্রাম বানানোরও একটা পরিকল্পনা রুপায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও এই স্কিমের পশু সঞ্জীবণী অংশে ৯ কোটি অধিক দুগ্ধপ্রদায়ী গাভীকে ইউনিক ইন্ডিকেশন ডিভাইস এর মাধ্যমে চিহ্নিত করার নিধান রয়েছে।
একটি জাতীয় স্তরের নিউট্রি-সিরিয়্যালস্ কর্মশালা আয়োজিত আলাদা একটি অনুষ্ঠানে, যখন মন্ত্রী তাঁর বক্তব্য পরিবেশন করেছিলেন, তিনি বলেন যে নিউট্রি-সিরিয়াল (জোয়ার, বাজরা, রাগি ও আরও সমস্ত মিলেট জাতীয় শস্য) বর্তমানে গম, ধান, ও ভুট্টার সমগোত্রীয়। এদের পুষ্টিগত গুরুত্ব অন্যান্য খাদ্যফসলের মতই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের খাদ্য যোগানো ছাড়াও এই সমস্ত ফসল থেকে গোখাদ্য ও জ্বালানী ইত্যাদিও পাওয়া যায় এই ফসলগুলি থেকে।
- প্রদীপ পাল