অন্য যে কোনও পোল্ট্রি ব্যবসায়ের তুলনায় কোয়েল চাষ কৃষকদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক। ভারতীয় জলবায়ু পাখি পালনের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয় এবং কোয়েল পাখিরা সব ধরণের পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।
ভারতে বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল চাষ -
কোয়েল পাখী বা তিতির পাখীর মাংস নরম, পুষ্টিকর, উপাদেয়, সহজপাচ্য ও সুস্বাদু। এতে কোলেস্টেরলের ও সম্পৃক্ত চর্বির মাত্রা ব্রয়লার অপেক্ষা কম বলে হৃদরোগীদের পক্ষে গ্রহণযোগ্য। কোয়েল পাখী পালন করতে জায়গা খুবই কম লাগে ও এদের রোগ অসুখ প্রায় হয় না বললেই চলে।
কোয়েল পালন -এর সুবিধা (Advantages of quail farming) -
কোয়েল পাখী খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে। ব্রয়লার কোয়েলকে ৪ সপ্তাহ বয়সে বাজারে বিক্রি করা যায়। ৪ সপ্তাহ বয়সে ওজন ১২৫ গ্রাম ও ৫ সপ্তাহে ওজন ১৪০ – ১৫০ গ্রাম হয়। ৭টি কোয়েলে ১ কেজি মাংস হয়। কোয়েল ৬ – ৭ সপ্তাহ বয়স থেকে ডিম দিতে শুরু করে। গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী খামারে পুরুষ ও স্ত্রী পাখীর অনুপাত ১:২ বা ১:৩ হলে ভালো বাচ্চা হয়। একটি কোয়েল পাখী বছরে মোট ২৫০ – ২৮০ টি ডিম দেয়। ঐ ডিমের ৭৫% বাচ্চা উৎপাদনে সক্ষম (ফার্টাইল এগ)।
মা বা ব্রুডিং কোয়েলকে ডিমে বসালে সে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটাতে পারে কিন্তু এই পদ্ধতি ব্যবসায়িক ভিত্তিতে করা যায় না। বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে ইনকিউবেটরে বাচ্চা ফোটাতে হয়। এরপর বাচ্চা কোয়েলকে ব্রুডারে রাখা হয়। এই সময় ০ – ৩ সপ্তাহ ব্রুডারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় নয়তো বাচ্চা কোয়েল মারা যেতে পারে।
ইনকিউবেটরে বাচ্চা ফুটার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রুডিং ঘরে এনে প্রথমে গ্লুকোজ এবং এমবাভিট ডলিউ এস জলের সাথে মিশিয়ে পরপর তিনদিন খাওয়াতে হবে এবং এরপরে খাদ্য দিতে হবে। প্রথম সপ্তাহ পরিষ্কার কাগজ বিছিয়ে তার ওপর খাবার ছড়িয়ে দিতে হবে এবং প্রতিদিন এই কাগজ পরিবর্তন করতে হবে। এক সপ্তাহ পর ছোট খাবার পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন - গৃহপালিত পশুর জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম এখন তৈরি করুন বাড়িতেই
পাখির বাসস্থান –
ডিম উৎপাদন এবং ডিমের মান বাড়ানোর জন্য পাখিকে যে স্থানে রাখা হবে, সেই স্থানে দৈনিক ১৪-১৮ ঘণ্টা আলোর প্রয়োজন। শীতকালে আলো কম থাকায় কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা হয়। পুরুষ কোয়েলের জন্য দৈনিক ৮ ঘণ্টা আলো যথেষ্ট। মনে রাখবেন, পাখির বাসস্থানের আশেপাশে পর্যাপ্ত বেড়া দেওয়া উচিত।
কোয়েল পালনের জন্য যোগাযোগ করুন (Contact for quail farming training) -
(১) পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা, ফার্ম ও সম্প্রসারণ অধিকরণের অফিস, মোহনপুর, নদীয়া
(২) সি. এ. আর. আই (সেন্ট্রাল এভিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউট), পো: ইচ্ছানগর, জে: বেরিলী, উত্তর প্রদেশ – ২৪৩১২২
আরও পড়ুন - এই পাখি পালন করে আপনি আয় করতে পারেন ৭ লক্ষ পর্যন্ত টাকা (EMU Bird Business)
Share your comments