কৃষিজাগরন ডেস্কঃ গবাদিপশুর প্রয়োজন একটি পরিষ্কার জায়গা, সুষম খাদ্য এবং সঠিক পরিচর্যা। এ কারণে তাদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে এড়ানো যায়। রোগের প্রাদুর্ভাব দুর্বল গবাদি পশুতে বেশি হয়। তাদের ডোজ সঠিক রাখার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। লিটারের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা গবাদি পশুকে পরজীবী এবং সংক্রামক রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। সতর্ক থাকার মাধ্যমে, পশুপালক যে পশুর যত্ন নেয় সে অসুস্থ পশুটিকে পশুপাল থেকে আলাদা করতে পারে এবং অন্যান্য প্রাণীকে অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করা যায়। আজ আমরা আপনাকে প্রাণীদের মধ্যে ঘটে যাওয়া রোগ এবং তাদের প্রতিরোধের পদ্ধতি সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি।
রোগ ও তাদের সমাধান
গলার সমস্যা
এ রোগে গরু ও মহিষ বেশি করে আক্রান্ত হয়। ভেড়া ও শূকরও এই রোগে আক্রান্ত হয়। এর প্রাদুর্ভাব বেশিরভাগই বর্ষাকালে ঘটে। এ কারণে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং প্রাণীরা অলস হয়ে পড়ে। রোগাক্রান্ত পশুর গলা ফুলে যায় যার কারণে খাবার গিলতে অসুবিধা হয়, যার কারণে পশু খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। পশুরও কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হয় এবং এর পরে পাতলা ডায়রিয়া হয়। অসুস্থ প্রাণী ৬ থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মারা যায়। এটি প্রতিরোধ করতে গবাদিপশুকে প্রতিরোধমূলক টিকা দিতে হবে। বিভাগ কর্তৃক বিনামূল্যে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়।
আরও পড়ুনঃ কৃত্রিম প্রজননের সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা
বিষক্রিয়া
বর্ষাকালেও এই রোগ বেশির ভাগই ছড়ায়। এই রোগটি বিশেষত৬ থেকে ১৮ মাসের সুস্থ বাছুরকে তার শিকার করে। এটি সুজওয়া নামেও পরিচিত। এ রোগের কারণে আক্রান্ত পশুর পেছনের পা ফুলে যায়, পশু লংঘন হতে থাকে এবং পশুর সামনের পাও ফুলে যায়। ফোলা ধীরে ধীরে শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ে। এই সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিরোধের জন্য একজন পশু চিকিৎসকের পরামর্শে রোগাক্রান্ত পশুর চিকিৎসা করুন। বর্ষার আগে সব সুস্থ প্রাণীকে এই রোগের টিকা দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ দুগ্ধ ব্যবসা: দুগ্ধ খামারে 600টি নতুন উদ্যোগ, হাজার হাজার যুবক চাকরি পাবে
খুরের সমস্যা
এই রোগটি খুবই ছোঁয়াচে এবং এর সংক্রমণ খুব দ্রুত হয়। যদিও আক্রান্ত পশুর মৃত্যুর সম্ভাবনা খুবই কম, কিন্তু এই রোগে গবাদি পশু পালনকারীদের অনেক ক্ষতি হয় কারণ পশু দুর্বল হয়ে পড়ে এবং এর কার্যক্ষমতা ও উৎপাদন অনেকদিন কমে যায়। গরু, ষাঁড় ও মহিষ ছাড়াও এ রোগ ভেড়াকেও শিকার করে। এ রোগের সময় পশুদের জ্বর, খাবারে অনাগ্রহ, মুখ ও খুরে ছোট ছোট ব্রণ বের হওয়া এবং রান্নার পর ক্ষত হওয়া এ রোগের লক্ষণ। এই সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের জন্য ফিনাইল দ্রবণ দিয়ে মুখের ঘা পরিষ্কার করুন এবং পায়ের ক্ষত ফিনাইল দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পায়ে তুলসী বা নিম পাতা লাগালেও উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া পশুদের বছরে দুবার প্রতিরোধমূলক টিকা দিতে হবে।
Share your comments