বর্তমানে ভারতবর্ষের জনসংখ্যা ১৩০ কোটি পার করে গেছে এবং এই বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যাকে প্রাণীজ প্রোটিন সরবরাহ করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে, যা ভবিষ্যতে আরো মুশকিল হয়ে উঠবে। চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ক্রমশ কমছে এবং পশুপালনের প্রয়োজনীয় খাদ্যের অনেক ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় মাইক্রো লাইভস্টক ফার্মিং কী এবং তার প্রয়োজনীয়তা কেন - এই নিয়ে বিশদ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই প্রবন্ধে।
মাইক্রো লাইভস্টক (livestock Farming) -
মাইক্রো লাইভস্টক হল ছোট আকারের এবং ছোট জাতের গৃহপালিত প্রাণী যা গবাদি পশু, ভেড়া, ছাগল বা শূকর যার আয়তন সাধারণ জাতের প্রায় অর্ধেক আয়তনের হয়। গবাদি পশুর উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গৃহপালিত প্রজাতির ছোট জাতের প্রাণীদের চাহিদা সবসময় ক্রমশ বাড়বে কারণ পশু পালনের জন্য প্রয়োজনীয় চারণক্ষেত্র ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
পশু খাদ্যের অপ্রতুলতা -
বর্তমানে ভারতবর্ষে প্রয়োজনীয় পশু খাদ্যের অনেকটাই ঘাটতি রয়ে গেছে এবং পশ্চিমবঙ্গ তার ব্যতিক্রম নয়। একটি চার্টের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের পশুখাদ্যের অপ্রতুলতা কে তুলে ধরা হয়েছে এবং এই ঘাটতি পূরণ করা একেবারেই দুঃসাধ্য ব্যাপার। এহেন পরিস্থিতিতে মাইক্রো লাইভস্টক ফার্মিংয়ের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
মাইক্রো লাইভস্টক ফার্মিং এর বাস্তবতা (Livestock Management) -
১) গবাদি পশু রাখা এবং খাওয়ানোর জন্য আনুপাতিক হারে জায়গার কম প্রয়োজন হয়।
২) উৎপাদন হার প্রত্যেক প্রাণী পিছু কম হওয়ার জন্য প্রাণীজ প্রোটিনের নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম।
৩) ছোট আকারের প্রাণী হলে প্রান্তিক চাষিরা সহজেই লালন-পালন করতে পারেন।
৪) প্রয়োজনীয় খাবার এবং পরিচর্যার খরচ কম।
৫) ছোট আকারের হওয়ার জন্য সহজেই বাজারে বিক্রয় করা সম্ভব।
৬) প্রজনন হার বেশি হওয়ায় অল্প সময়ে অনেক বেশি সংখ্যক শাবক প্রদানে সক্ষম।
মাইক্রো লাইভস্টক ফার্মিং এর ভবিষ্যত (Livestock farming future) -
প্রান্তিক চাষী সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাদের কর্মসংস্থান এবং খাদ্য নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মাইক্রো লাইভস্টক ফার্মিং এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল কারণ সীমিত সাধন ও ক্ষুদ্র পরিসরে ছোট প্রাণীদের রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব এবং তাদের জীবিকা নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারে ।
সিদ্ধান্ত -
বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যার খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা একটি বৃহত্তর চ্যালেঞ্জ। একইসাথে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রাণীজ প্রোটিনের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে এবং এই চাহিদা প্রথাগত পশুপালনের মাধ্যমে পূরণ করা একেবারেই অসম্ভব। তাই ছোট আকারের প্রাণী পালনের মাধ্যমে কম সময়ে এবং কম খরচে বেশি সংখ্যক বিক্রয়যোগ্য প্রাণী প্রোটিন পাওয়া সম্ভব। সুতরাং, ক্ষুদ্র গবাদি পশুর উৎপাদন সংসারে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে। এছাড়াও প্রান্তিক চাষীদের সামাজিক স্থায়িত্ব ও আর্থিক দিক থেকে স্বনির্ভর করে তোলে।
স্বপ্নম সেন
নিবন্ধ লেখক - ড. সন্তু মণ্ডল (ভেটেরিনারি অফিসার, ওয়েটস বেঙ্গল গভর্নমেন্ট)
Related link - https://bengali.krishijagran.com/animal-husbandry/livestock-owners-can-now-get-90-percent-subsidy-on-livestock/
https://bengali.krishijagran.com/animal-husbandry/know-how-to-create-wealth-through-poultry-farming/
Share your comments