ঘরোয়া প্রাণী পালনের জন্য সুষম খাবার প্রস্তুত ও তার প্রয়োগ পদ্ধতি

ছোট প্রাণীপালনের মাধ্যমে গ্রামীণ পরিবারে পুষ্টির জোগান ছাড়াও কিছুটা আয় সুনিশ্চিত করা যায়। তাই জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কৃষিকাজের পাশাপাশি প্রাণী পালন অত্যন্ত জরুরী।

KJ Staff
KJ Staff
ছাগল পালন ।

প্রতাপ মুখোপাধ্যায়,অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিজ্ঞানীঃ ছোট প্রাণীপালনের মাধ্যমে গ্রামীণ পরিবারে পুষ্টির জোগান ছাড়াও কিছুটা আয় সুনিশ্চিত করা যায়। তাই জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কৃষিকাজের পাশাপাশি প্রাণী পালন অত্যন্ত জরুরী।

স্ব-নিযুক্তির মাধ্যমে আত্মনির্ভর এই প্রকল্প আর্থিক দিক থেকে মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলতে সাহায্য করবে। নিজের গ্রামীণ পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে, বর্তমান প্রজন্ম যদি আয়ের পথ খুঁজে নিতে পারেন-নিজের এবং বাড়ির পক্ষেও তা মঙ্গল। কিছু আনুষঙ্গিক ক্ষুদ্র উদ্যোগ যেমন হাঁস, মুরগি, ছাগল, ভেড়া, শূকর, খরগোশ ইত্যাদি গৃহপালিত প্রাণীর খাবার প্রস্তুতকরণ ও প্রয়োগ কৌশল এখন আমাদের গ্রামীণ যুবক-যুবতীদের আয়ের পথে উত্তরণের প্রশ্নে যথেষ্ট সম্ভাবনাপূর্ণ।

এইসব প্রাণীপালনে প্রায় সত্তর শতাংশই খরচ হয় খাবারের জন্য আর তা বাজার থেকে না কিনে নিজেরা প্রস্তুত করে নিতে পারলে আয়ের পথ সুগম হবে অবশ্যই। ম্যাস খাবার আজকাল যেগুলি পাওয়া যায় গুণমান ভালো থাকে না, দাম বেশি ও অনভিপ্রেত রাসায়নিক এর উপস্থিতি এর কারণ। সে কারণে খাবার নিজেরাই তৈরি করে নিতে পারলে শুধু যে খরচের সাশ্রয় হয় তাই নয়, পুষ্টির দিক থেকেও বেশ ভালো হয়।

আরও পড়ুনঃ ধানের জমিতে অ্যাজোলা চাষের পদ্ধতি

মনে রাখা দরকার যে, বাড়ির লাগোয়া জায়গা থাকলেও বাড়ির প্রাণীরা যেটুকু খাবার সেখান থেকে পেতে পারে তা কিন্তু একেবারেই যথেষ্ট নয় যেমন ছাগল (মূলত কালো ছাগল), ভেড়া (গাড়োল জাতের) ঘাস থেকে শুরু করে গাছের পাতা ইত্যাদি ভালোভাবে গ্রহণ করলেও এদের পাশাপাশি সুষম খাবার খাওয়াতে পারলে খুবই ভালো ফল পাওয়া যায়।

বিশেষ করে গর্ভবতী ছাগল/ভেড়ার শেষ দুমাস ও পাঁঠার প্রজননকালে । এই খাবার বাজার থেকে না কিনে বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে তৈরি করে নেওয়া যায় সহজেই-এতে খরচ শুধু যে কম হয় তাই নয়, গুণমানেও অনেক ভালো-যা পুষ্টির জোগানের সাথে সাথে প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতেও বেশ সহায়ক হতে পারে। প্রাণীর বাড়-বৃদ্ধি, দৈনিক ক্ষয় নিবারণ, প্রজনন-এসবের জন্যও সঠিক মাত্রায় পুষ্টিকর খাবার জোগান দেওয়া প্রয়োজন।

কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে সুষম পরিমিত খাবারের ভূমিকা অপরিসীম। ছাগলের ক্ষেত্রে রোজ এই সময়ে ১৫০-২০০ গ্রাম সুসম দানা খাবার একান্তই দরকার।

একটি বাড়ন্ত ছাগল দিনে ২-৩ কেজি সবুজ ঘাস ও ১.৫ কেজি দানা খাবার আর ৭০০ মিলি জল পেলে তার খুব সুন্দর বাড়-বৃদ্ধি হবে। অনুরূপভাবে খরগোশের ক্ষেত্রে দিনের বেলা দানা খাবার ও সন্ধ্যের আগে ঘাসপাতা দিতে পারলে ভালো হয়। গাভীন খরগোশকে রোজ ১০০ গ্রাম সবুজের সাথে ২০০ গ্রাম সুষম দানা ও সঙ্গে জল দেওয়া চাই। ব্রয়লার মুরগির ক্ষেত্রে দুরকম খাবার লাগে স্টার্টার (১-৪ সপ্তাহ) ও ফিনিশার (৫-৭ সপ্তাহ)। হাঁস খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে-দুমাসে ২ কেজি ওজন হবেই।

আরও পড়ুনঃ সার ও গোখাদ্য হিসেবে অ্যাজোলার গুরুত্ব

পুকুর থেকে শামুক, গুগলি, জলজ পানা পেলেও অতি উত্তম। শূকর পালনের সিংহভাগ খরচই খাবারের জন্য। শূকরের হানাদের ১৫ দিন বয়স থেকেই সুষম খাবার দেওয়া শুরু করতে হয় এবং সারাদিন ৫ বার বাবার দিতে হতে পারে। প্রতিদিন এই খাবার সঙ্গে সবুজ ঘাস-পাতা ও জলের জোগান দিতেই হবে।

Published On: 17 November 2022, 05:26 PM English Summary: Preparation and application of balanced feed for domestic animals

Like this article?

Hey! I am KJ Staff . Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters