কৃষিজাগরন ডেস্কঃ চাহিদার তুলনায় এ রাজ্যে এখনো খাঁটি মধুর জোগান যথেষ্ট কম। খাঁটি মধুর জন্য ছুটতে হয় সুন্দরবন অঞ্চলে। আর এই চাহিদার তুলনায় জোগান কম থাকায় মৌমাছি পালন যথেষ্ট লাভজনক ব্যবসা। বর্তমানে মধুর বাজার শুধুমাত্র আর এ রাজ্যে সীমাবদ্ধ নয়। পশ্চিম জার্মানি ও মধ্যপ্রাচ্যে মধু রপ্তানি হয়। মধুর নানা ঔষধি গুণের জন্য আয়ুর্বেদ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি উৎপাদকের কাছ থেকে মধু কিনে নেয়। বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদনের জন্য মৌমাছি ও মৌপালন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার।
আরও পড়ুনঃ প্রতি বছর ৫-৬ লক্ষ আয় হবে, শিখে নিন কম খরচে মাছ চাষের এই কৌশল
ভারতে ৪ ধরনের মৌমাছির মধ্যে মোট উৎপাদিত মধুর প্রায় ৭০% পাওয়া যায় সুন্দরবনের বন্য মৌমাছি থেকে। একেকটি চাক থেকে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ কেজি মধু পাওয়া যায়। কিন্তু এদের পালন সম্ভব নয়। মধুর জন্য পালন করা হয় ভারতীয় মৌমাছি বা এপিস ইন্ডিকা। এই শ্রেণীর মৌমাছিদের মধু উৎপাদনের ক্ষমতা বেশী হওয়ায় মৌমাছি পালক ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেষ্টায় আটের দশক থেকে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে এই জাতীয় মৌমাছি চাষ শুরু হয়। এ রাজ্যের মৌ পালকরা পাঞ্জাব থেকে এপিস মেলিফেরা নিয়ে আসেন।
মৌমাছি পালনের আদর্শ পরিবেশ
যে কোনো পরিবেশে মৌমাছি রাখলে মধু পাওয়া যায়। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় মৌমাছির ডিম ফোটে। সেজন্য মৌপালনের জন্য এইসব অনুকূল পরিবেশ দরকারঃ (১) মক্ষীশালার কাছাকাছি ভাল পানীয় জলের ব্যবস্থা, (২) পর্যাপ্ত সূর্যালোকের ব্যবস্থা, (৩) নিরিবিলি জায়গা, (৪) যেখানে ধোঁয়া লাগে এমন জায়গায় মক্ষীশালা রাখা যাবে না, (৫) মক্ষীশালা ও মক্ষীগৃহের মুখ দক্ষিণ-পূর্ব কোণের দিকে রাখা উচিত, (৬) মক্ষীশালায় বর্ষাকালে যাতে জল না জমে তার ব্যবস্থা রাখা দরকার, (৭) মক্ষীশালার পাশাপাশি আম, জাম, লিচু, সজিনা, অর্জুন, হিজল, নিম, নারকেল, কলা, লেবু ও পেয়ারা গাছ লাগানো দরকার।
আরও পড়ুনঃ হাঁস পালনে মুরগি পালন থেকে দ্বিগুণ লাভ, এভাবে ব্যবসা শুরু করুন
মৌপালনের বাক্স ও অন্যান্য সরঞ্জাম
মৌমাছি পালনের জন্য দরকার হয়- (১) কাঠের ফ্রেম বা হাইভ । এই হাইভের ৪ টি অংশ। যেমন, বটম বোর্ড, ব্রুড চেম্বার, হানি চেম্বার ও টপ। মৌমাছি পালনের সাফল্য নির্ভর করে হাইভের গুণগত মানের উপর। তাই সেগুন, পাইন বা, দামি কাঠের হাইভ তৈরি করা উচিত, (২) ধোঁয়াদানি,(৩) মধু নিষ্কাশন যন্ত্র, (৪) রানি অবরোধ জাল, (৫) খাদ্যদানের পাত্র, (৬) ঝাঁক ধরা জাল, (৭) টুপি ও বোরখা, (৮) পুরুষ মৌমাছি ধরার ফাঁদ (৯) হাইভ স্ট্যান্ড, (১০)অন্যান্য জিনিসপত্র যেমন- ছুরি, কাঁচি, করাত, হাতুড়ি
Share your comments