কৃষিজাগরন ডেস্কঃ জল ও জলজ জৈব সম্পদে আমাদের রাজ্য বরাবরই সমৃদ্ধ আর তাই এখানে মাছ চাষের পরম্পরা দীর্ঘ দিনের। পরম্পরার সাথে বৈজ্ঞানিকভাবে পরিক্ষিত প্রযুক্তি কলাকৌশল প্রয়োগ হলেই ও চাষের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নাগালের মধ্যে সময় মত পাওয়া গেলে মাছ চাষ অতি সহজেই এক অভিনব উদ্যোগে পরিণত হবে। স্ব্নির্ভর কর্মসংস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে তা অত্যন্ত ফলপ্রসূও হতে পারে
মাছ চাষ মানেই, মাছ প্রতিপালন করা, তাদের সঠিক গুণমান ও পরিমাণে খাবার খাওয়ানো, জলের ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্টগুলি বজায় রাখা, তাদের রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা ছাড়াও নিয়মিত সামগ্রিক পরিচর্যা করা এবং প্রযুক্তিগত উপায় অবলম্বন করে তাদের জল থেকে তুলে নেওয়া। এই সবই জীবন-বিজ্ঞানের এক নবীন শাখা – মত্স্য বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত এবং এখন সারা দেশেই এটি একটি অন্যতম পাঠ্য বিষয়। আমাদের দেশের বহু কৃতি ছাত্র-ছাত্রী এই নির্দিষ্ট বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনাতে আগ্রহী হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ বীজ পরিষ্কার এবং গ্রেডিং পদ্ধতি
বলাই বাহুল্য, এদেশে এমন অনেক শিক্ষা কেন্দ্র ও গবেষণাগার রয়েছে যারা একনিষ্ঠ ভাবে শুধুমাত্র ‘মত্স বিজ্ঞানের’ উপর-এই শিক্ষাদান করে চলেছে বছরের পর বছর ধরে – আইসিএআর (ICAR) এর অধিনে থাকা সাত-সাতটি গবেষণাকেন্দ্র গুলি হল এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তা যাই হোক, এই ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পড়াশুনার পর্ব যথা সময়ে শেষ করে উদ্যোগ নিচ্ছে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি সংস্থায় নিজেদের কর্মরত করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু, দিনে দিনে কর্ম সংস্থানের সুযোগ ক্রমশ সংকচিত হয়ে পড়ায় অনেকেই তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে যা হয়ত’ পরোক্ষে তাদের টেনে নিয়ে যাচ্ছে মানসিক অবসাদে।
স্বনির্ভর কর্মসংস্থান বলতে সাধারনভাবে আমরা বুঝি – ‘’নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাধারা দিয়ে সৃষ্ট, সঙ্গে কিছু বিনিয়োগ করে কোনো পণ্য, উপাদান বা পদ্ধতি উত্পাদনে আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠা’’। মত্স্য বিজ্ঞান পাঠের ফলস্বরূপ বিজ্ঞান ভিত্তিক ও উদ্ভাবনী নির্ভর মাছ চাষ ও তার আনুষাঙ্গিক বিষয়-আশয় গুলি এই স্বনির্ভর কর্মদ্যোগের অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে বিশেষত আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে যেখানে প্রাকৃতিক সম্পদ এখনো যথেষ্ট পরিমাণে বহাল রয়েছে। হয়ত সেই কারণেই আমরা এত ‘সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা’ হয়ে উঠতে পেরেছি।
আরও পড়ুনঃ ICAR-CIFRI-এর অধীনে পালিত হল জাতীয় পশু পালন কর্মসূচি
স্থানীয় জৈব সম্পদের যথোপযুক্ত ব্যবহার, আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ ও পরম্পরা জ্ঞান কে কাজে লাগিয়ে মাছের ফলন নিশ্চিত করা সম্ভব, তা নিজেস্ব পুকুরেই হোক কিংবা লিজ নেওয়া জলাশয়েই হোক। বারতি ফলন সুনিশ্চিত করতে নিজেস্ব উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ প্রশিক্ষণ যদি পাওয়া যায় তাহলে উদ্যোগ ও আধুনিকতার সংযোজনে স্ব্নির্ভর হওয়া ও সঙ্গে আরও কয়েকজনকে স্ব্নির্ভর করে তোলা সম্ভব।
উর্ণা ব্যানার্জী ও প্রতাপ মুখোপাধ্যায়
Share your comments