কাস্টার্ড আপেল (Custard Apple/Sitafal) সাধারণত ভারতে সিতাফল নামে পরিচিত। ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ, যা শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং তামা সমৃদ্ধ একটি ফল।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ফলটির প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে - শর্করা ২৫ গ্রাম, জল ৭২ গ্রাম, প্রোটিন ১.৭ গ্রাম, ভিটামিন এ ৩৩ আইইউ, ভিটামিন সি ১৯২ মিলিগ্রাম, থিয়ামিন ০.১ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাবিন ০.১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিয়ান ০.৫ মিলিগ্রাম, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড ০.১ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৭ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২১ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৩৮২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৪ মিলিগ্রাম।
চলুন জেনে নেওয়া যাক আতার উপকারিতা সম্পর্কে -
১. হজমশক্তি বৃদ্ধি (Increased digestion power) -
আতাফলে থাকা ফসফরাস হজমশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা ফাইবার হজমশক্তি বৃদ্ধি করে ও পেটের সমস্যা দূর করে। তাই যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, তারা এই আতা ফল খেলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
২. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি -
আতাফলে রয়েছে রিবোফ্লাভিন ও ভিটামিন সি। এই দুই ভিটামিন আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। সুতরাং, যাদের চোখের সমস্যা আছে, তারা আতা ফল খেলে চোখের উপকার হবে।
৩. আমাশয় নিরাময় -
বলা হয়, আতা গাছের মূলের ছালের রস ২০-২৫ ফোঁটা ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে একবার বা দুবার পান করলে ৩ দিনের মধ্যে আমাশয় নিরাময় হয়।
৪) ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্যযুক্ত -
বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে কাস্টার্ড অ্যাপেলের অ্যাসিটোজেনিন যৌগগুলি ক্যান্সার-কোষ ধ্বংস করে। প্রতিদিনের ডায়েটে আতা রাখলে তা টিউমার এবং প্রদাহকে হ্রাস করে এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
৫) হাড় মজবুত করতে সহায়ক -
আতা ফলে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ক্যালসিয়াম। শরীরের হাড় মজবুত রাখার জন্য ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভুনিকা পালন করে থাকে। মানবদেহে পর্যাপ্ত পরিমানে ক্যালসিয়াম সরবারহ করতে সক্ষম এই আতা ফলটি। তাই হাড় মজবুত করতে প্রত্যহ আতা ফল খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন - জানুন বিশেষ ঔষধি গুন সম্পন্ন 'করমচা'এর উপকারী দিক গুলি কি কি
৬) হৃৎপিণ্ডের রোগ প্রতিরোধ -
আতা ফলের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি৬ রক্তের উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে।
৭) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ -
নিম্ন গ্লাইসেমিক সূচক ফল হওয়া ছাড়াও কাস্টার্ড আপেলে রয়েছে পলিফেনলিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। আতা ফল গ্রহণ এই ইনসুলিন উত্পাদন এবং গ্লুকোজ শোষণ ব্যাপকভাবে উন্নত করে, যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ক্ষতিকর দিক:
যেহেতু কাস্টার্ড আপেল ক্যালোরিযুক্ত ফল, সুতরাং ওজন হ্রাস এবং শক্তি বিপাকের জন্য পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হলে তখনই তা কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
তবে এর খোসা এবং বীজে বিষাক্ত যৌগ থাকে, যা থেকে ত্বকে অ্যালার্জি এবং চোখের ক্ষতি হতে পারে। সুতরাং, কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এড়াতে কাস্টার্ড আপেলের সুস্বাদু স্বাদ গ্রহণের আগে বাইরের খোসা এবং সাথে বীজগুলি অবশ্যই অপসারণ করে গ্রহণ করুন।
আরও পড়ুন - নীল অপরাজিতা ফুল থেকে তৈরি ব্লু টি, কেন এই চা কেন পান করা উচিৎ?
Share your comments