Turmeric Milk - হলদি দুধ হোক বা সকালে খালি পেটে হলুদ- বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলুদ সেবনে

বিশেষজ্ঞদের একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে, হলুদের মধ্যে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যানটি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। সেই সঙ্গে মজুত রয়েছে অ্যান্টি ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক প্রপাটিজও, যা নানাভাবে শরীরকে মজবুত রাখতে এবং কঠিন থেকে কঠিনতর রোগ-ব্যাধিকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

KJ Staff
KJ Staff
Turmeric health benefits
Turmeric (Image Credit - Google)

সুপ্রাচীনকাল থেকেই আমরা সকলে হলুদের গুণ সম্পর্কে কম বেশী ওয়াকিবহাল। সেই কোন আদিকাল থেকে শুরু করে এখনও হলুদ আমাদের খাবারে হোক বা ঔষধি গুণে বা রূপচর্চায় একান্ত দরকার।

বিশেষজ্ঞদের একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে, হলুদের মধ্যে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যানটি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। সেই সঙ্গে মজুত রয়েছে অ্যান্টি ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক প্রপাটিজও, যা নানাভাবে শরীরকে মজবুত রাখতে এবং কঠিন থেকে কঠিনতর রোগ-ব্যাধিকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 

তাই বিশেষজ্ঞরা খালি পেটে এক কোয়া করে হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতা (Health benefits) - 

১) ডায়াবেটিস কমায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত সকালে উঠে কাঁচা হলুদ খেলে দেহের অন্দরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না।  

২) ক্ষত সারায়: কাঁচা হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন এবং আরও নানা সব অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যে কোনো ধরনের ক্ষতের যন্ত্রণা কমায়। এটা আঘাত সারাতেও দারুণভাবে কাজ করে। এ কারণেই তো ছোট বাচ্চাদের নিয়মিত কাঁচা হলুদ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। এছাড়া ক্ষতস্থানে অল্প পরিমাণে হলুদ বেঁটে লাগিয়ে দিলেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া যায়। 

৩) ইনফ্লেমেশনের মাত্রা কমায়: দেহের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে শরীরে প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে নানান রোগ। তাই তো নিয়মিত হলুদ খাওয়া উচিত। কারণ এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, যা প্রদাহ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

৪) মাথা যন্ত্রণা সারায়: এবার থেকে মাথা যন্ত্রণা হলেই এক কাপ হলুদ মেশানো দুধ খেয়ে নেবেন। দেখবেন কষ্ট কমেগেছে। হলুদের অন্দরে থাকা কার্কিউমিন এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরের অন্দরে প্রদাহ কমায়। ফলে মাথা যন্ত্রণা কমতে সময় লাগে না। 

৫) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে: ওয়েদার পরিবর্তনের সময় আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পরে। এই কারণেই এই সময় নিয়মিত এক গ্লাস দুধে কয়েক চামচ হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। আসলে এই পানীয়টিতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান, ইমিউনিটিকে মারাত্মক বাড়িয়ে দেয়। ফলে কোনও রোগই ধারে কাছে আসতে পারে না। 

৬) ওজন নিয়ন্ত্রণ করে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত হলুদ খাওয়া শুরু করলে শরীরে বিশেষ কিছু উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এর ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। আর একবার মেটাবলিজম রেট বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত হয়।  

৭) লিভারে ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: লিভারকে চাঙ্গা এবং কর্মক্ষম রাখতে হলুদের কোনো বিকল্প নেই। কারণ এর মধ্যে থাকা কার্কিউমিন নামক উপাদানটি লিভারের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে কোনও ধরনের লিভারের রোগই ধারে কাছে আসতে পারে না। এমনকি ফ্যটি লিভারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। 

৮) হাঁচি-কাশি কমায়: হলুদে উপস্থিত অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ  নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ রেসপিরেটারি ট্রাক্ট ইনফেকশন এবং সর্দি-কাশির প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ কারণেই বছরের এই একটা সময় বাচ্চাদের নিয়মিত হলুদ খাওয়াতে পরামর্শ দেয়া হয়।  বিশেষত রাতে ঘুমতে যাওয়ার আগে। 

৯) ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়: নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ খেলে ত্বকের অন্দরে থাকা টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে ত্বক এত মাত্রায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে যে বলি রেখা কমতে শুরু করে। 

১০) হজম ক্ষমতা বাড়ে: একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত হলুদ খাওয়া শুরু করলে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে বদহজমের আশঙ্কা যেমন কমে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বল এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

১১) ব্রণ কমায়: হলুদ মিশ্রিত দুধ পানে ব্রণ, অ্যাকনে এবং কালো ছোপের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। এক কথায় শীতকালেও যদি ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে চান, তাহলে আজ থেকেই হলুদ দুধ খাওয়া শুরু করুন।  বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাকজিমার মতো ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও হল দুধ বেশ কাজে আসে।

আরও পড়ুন - করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে প্রত্যহ পান করুন লেবুর রস

তবে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ হলেও অ্যানিমিয়া রয়েছে এমন মানুষদের জন্য অতিরিক্ত হলুদ ক্ষতিকারক। এছাড়া স্টোনের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের হলুদ খাওয়া এড়ানো উচিত। এটি তাদের পক্ষে বেশ ক্ষতিকারক হতে পারে। স্টোনের সমস্যা থাকলে রোগীদের হলুদ সেবন করার আগে একবার ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মনে রাখবেন, যে সমস্ত লোকের রক্তপাতের সমস্যা রয়েছে, যেমন নাক থেকে হঠাৎ রক্তক্ষরণ হয়, তাদের ক্ষেত্রেও বেশি পরিমাণে হলুদ সেবন করা উচিত নয়।

আরও পড়ুন - কোন ফল খাবেন এই সময়ে করোনা সংক্রমণ রুখতে? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা চলুন দেখে নেওয়া যাক

Published On: 13 May 2021, 08:47 AM English Summary: Know why experts recommend eating turmeric on an empty stomach in the morning

Like this article?

Hey! I am KJ Staff. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters