কিউই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল যার বৈজ্ঞানিক নাম Actinidia deliciosa । কিউয়ি নিউজিল্যান্ডের ফল হিসেবে পরিচিত হলেও এর আদি নিবাস চীনের দক্ষিণাংশে। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে মিশনারিদের মাধ্যমে কিউয়ি চীন থেকে নিউজিল্যান্ডে আসে এবং সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে ইটালি, গ্রিস ও ফ্রান্সে। ১৯০৬ সাল থেকে কিউয়ি বহির্বিশ্বে পরিচিতি লাভ শুরু করলেও বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ করা শুরু হয় ১৯৩৭ সালে।
নিউজিল্যান্ড ছাড়াও চিলি, তুর্কি, ইরান, জাপান, আমেরিকা,দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়ায় কিউয়ি ফল বানিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়।চিনের পর বাণিজ্যিকভাবে এই ফলটির চাষ শুরু হয় নিউজিল্যান্ডে। পরে দ্বতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফলটি ব্রিটিশ এবং মার্কিন সেনাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে বিশ্বের বহু এলাকায় কিউইর চাষ হচ্ছে।
আজ আমরা জানবো, কিউই ফলের উপকারিতা
পুষ্টিমান (Nutrition Value) -
ভিটামিন সি ছাড়াও এ ফলে আরও অনেক অন্যান্য উপাদান আসে যা মানবদেহের পুষ্টিসাধন ও রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। প্রতি ১০০ গ্রাম কিউয়ি ফলে রয়েছে –
এনার্জি- ৬০ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট- ১৪.২৩ গ্রাম, চিনি- ১০.৯৮ গ্রাম, খাদ্যআঁশ- ২ গ্রাম, ফ্যাট- ০.৫৬ গ্রাম, প্রোটিন- ১.২৩ গ্রাম, থায়ামিন- ০.০২৪ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেভিন- ০.০৪৬ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন- ০.২৮ মিলিগ্রাম, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড- ০.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি৬- ০.০৫৭ মিলিগ্রাম, ফোলেট- ৩৪ আইইউ, ভিটামিন সি- ১০৫.৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ই- ১.৪৫ আইইউ, ভিটামিন কে- ৫.৫ আইইউ, ক্যালসিয়াম- ২০ মিলিগ্রাম, আয়রন- ০.২৯ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম- ১৪ মিলিগ্রাম, ম্যাংগানিজ- ০.০৫৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস- ২৯ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম- ৩১৬ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম- ৩ মিলিগ্রাম এবং জিংক- ০.১০ মিলিগ্রাম।
কিউই ফলের উপকারিতাঃ
১।কিউইতে ফাইবার থাকার কারণে এটি হজমে সাহায্য করে।
২।হাপানি রোগের জন্য মোক্ষম ওষুধ হল কিউই ফল।
৩।কিউই ফল ঘুমবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
৪।কিডনিতে পাথর জমা থেকে রক্ষা পেতে খান কিউই ফল।
৫।কিউই-তে ভিটামিন-সি ও অ্য়ান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে রোদ, দূষণ এবং বার্ধক্য় বিলম্ব করে।
৬।কিউই ফলে ভিটামিন-এ ও ফাইটোক্য়ামিক্য়াল চোখের ছানি ও অন্যান্য চোখের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৭।কিউইতে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকে যা শরীরে রক্ত সঞ্চালনাকে ঠিক রাখে এবং হাড় ও দাঁতকে মজবুত করে।
আরও পড়ুন - Star Fruit – জেনে নিন কামরাঙ্গার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে
৮।প্রতিদিন ৩টি করে কিউই ফল খেলে, এর মধ্যে থাকা বায়োঅ্যাক্টিভ রক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৯।ডায়বেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি আদর্শ ফল। কারণ, এটি লো গ্লাইসেমিক হওয়ায় সুগার কন্ট্রোল করে।
পার্শ্বক্রিয়া:
কিউই ফল খাওয়ার সঙ্গে বেশি পার্শ্বপ্রতিক্রয়ার সম্পর্ক নেই। তবে, কোনও কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে কিউই ব্যবহারের পর অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা দেয়।
আরও পড়ুন - Black Pepper - গোল মরিচের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য রক্ষায় এর উপকারিতা
Share your comments