বর্তমান জীবনে পিসিওএস এর সমস্যা যেন বাড়বাড়ন্ত | তবে, জীবন ধরণের কিছু ভুল নিয়ম এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে | এমনটাই মত চিকিৎসকদের। বেশিরভাগ মেয়েরা এই রোগে আক্রান্ত |এই অসুখে সাধারণত অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয় মেয়েদের। শরীরে অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ বেশি হওয়ায় ডিম্বাসয়ের চার পাশে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়।
এই রোগের কারণে ৫০ শতাংশ মেয়েরা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। মেদ বেড়ে যায় সহজেই, শরীরে লোম বেশি দেখা যায়, মাথায় চুল উঠে টাক পড়ে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। পাশাপাশি চোখে পড়ে খুব বেশি মাত্রায় সিস্টের সমস্যা।
পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম থাকে মেয়েদের শরীরে সাধারণত ইনসুলিনের পরিমাণ কম থাকে। কিংবা তা পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলেও তা ঠিক মতো কাজ করে না। ফলে রক্তে শর্করা মাত্রা অত্যাধিক বেশি হয়ে পড়ে। তার থেকে ডায়াবিটিস, হৃদ্রোগের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা দেখা যেতে পারে।
কি খাওয়া বারণ(Do not eat):
এই রোগে কিছু খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হয় | তার জন্য একটা সঠিক ডায়েট মেনে চলা খুব জরুরি | পিসিওএস বা পিসিও়ডি থাকলে খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। ওজন নিয়ন্ত্রণ হলে ঋতুস্রাবও ধীরে ধীরে নিয়মিত হয়ে যাবে এবং এই সমস্যা অনেকটা কমে যাবে। কোন ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা ভাল তার একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি |
আরও পড়ুন - Monsoon Veg and Fruits: বর্ষায় রোগ-প্রতিরোধ বাড়াতে খান এই কয়েকটি সবজি ও ফল
পিসিওএস থাকলে হাই ফাইবার, লো-কার্ব ডায়েট মেনে চলতে হবে। মানে ভাত-রুটির মতো কার্বোহাইড্রেট কম খেয়ে শাক-সব্জি, ডাল এগুলো বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন। তবে তাতেও কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। যেমন মাটির তলার সব্জি যেমন আলু, শাঁকালু, গাজর, বিট একটু কম খাওয়াই ভাল। ফলের মধ্যে আম, কলা, লিচু আর আঙুর বাদে যে কোনও ফল খাওয়া যেতে পারে। কারণ, এই ৪টে ফলে কার্বোহাড্রেট বেশি, তাই না খাওয়া বেশি ভালো |
পিসিওএস থাকলে ভাজাভুজি, জাঙ্ক ফুড, প্রসেস করা খাবার যেমন কেক, পেস্ট্রি, চকোলেট, পাউরুটি, বার্গার, ময়দার জিনিস, সসেজ খাবারও ডায়েট থেকে বাদ রাখতে হবে। মিষ্টি, আইসক্রিম, বোতলের ঠান্ডা জল যত কম খাওয়া যায় তত উপকারী |
কি কি খেতে হবে(What to eat)?
১) হাই ফাইবার যুক্ত সব্জি যেমন ফুলকপি, ব্রকোলি, লেটুস পাতা, কুমড়ো, বিন ইত্যাদি খেতে হবে |
২) রেড মিটের বদলে চিকেন খেতে হবে। ডিম্ মাঝে মাঝে খাওয়া যেতে পারে | মাছ খাওয়া খুবই ভালো | ডাল খেতে হবে। নানা রকম বীজ খাওয়া যেতে পারে যেমন ফ্ল্যাক্স সিড, কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি।
৩) আটা-ময়দার বদলে রাগি, জোয়ার, বাজরার মতো শস্যগুলো খাওয়া যেতে পারে। তবে দুবেলা ভাত-রুটি কম করে শব্জি বা স্যালাড খাওয়া বেশি উপযোগী |
৪) আমন্ড, আখরোট, যে কোনও ধরনের বেরি, শসা, টমেটো, আপেল, নানা রকম লেবু খেতে পারেন।
৫) অলিভ অয়েল বা যে কোনও খাঁটি তেল ব্যবহার করতে পারেন রান্নার জন্য। সাধারণ চকোলেটের বদলে ডার্ক চকোলেট এক টুকরো করে খাওয়া যেতে পারে তবে মাঝে মাঝে |
৬) পাউরুটি তে পিনাট বাটার বা আমন্ড বাটার অর্থাৎ বাদাম থেকে তৈরী বাটার খাওয়া যেতে পারে | প্রয়োজনে অল্প ঘি খেতে পারেন মাঝে মাঝে |
আরও পড়ুন - Bitter Gourd Juice - শুধু ডায়াবেটিসই নয়, ক্যান্সারকেও প্রতিহত করতে পারে করলা, কি বলছেন বৈজ্ঞানিকরা!
Share your comments